এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ময়মনসিংহে ফেসবুকে সাবলেট ভাড়ার বিজ্ঞাপন দেখে বাসা দেখতে গিয়েছিলেন নাজমুল হাসান (নাঈম) নামে এক শিক্ষার্থী। এরপরই ঘটে বিপত্তি। বাসার কক্ষে ঢোকার পর ওই শিক্ষার্থীকে অস্ত্রের জিম্মি ও মারধর করে মুঠোফোন, ল্যাপটপ ও নগদ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয় প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় তুই তরুণীকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দুই তরুণীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন কলেজছাত্র নাঈম। পরে রাতেই সেটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে পুলিশ।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিবিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগী নাজমুল হাসান নাঈম নগরের আনন্দ মোহন কলেজের গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার ভূরারবাড়ী গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে।
নাঈম জানান, নগরের কলেজ রোডের মীরবাড়ি এলাকায় একটি মেসে থেকে পড়ালেখা করছেন তিনি। সেখানে ট্রেনের শব্দে পড়ালেখার সমস্যা হওয়ায় নতুন বাসা খোঁজ করছিলেন। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ফেসবুকে ইংরেজিতে ‘টু লেট ময়মনসিংহ’ লেখা গ্রুপে ব্যাচেলর ১ রুমের সাবলেট ভাড়ার বিজ্ঞাপন দেখতে পান। সেখানে দেওয়া মুঠোফোনের নম্বরে ফোন করলে বলা হয় দুই কক্ষের বাসায় এক কক্ষে স্বামী-স্ত্রী থাকেন আরেকটি কক্ষ সাবলেট ভাড়া দিবে। সে সময় নিজের বিকল ল্যাপটপ মেরামত করতে গাঙ্গিনারপাড়ের দিকে যাওয়ার জন্য বের হলে বাসাটি দেখতে যান।
তিনি আরও বলেন, গুলকিবাড়ী এলাকার ফখরুজ্জামান টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় আমাকে নিয়ে যে কক্ষটি সাবলেট ভাড়া দেওয়া হবে সেটি দেখানোর জন্য ভেতরে ঢুকানো হয়। এরপর চারজন নারী ও চারজন যুবক সে রুমে ঢুকে। আমাকের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর করতে থাকে। আমাকে বলা হয়, খারাপ কাজ করতে এসেছি। মারধরের এক পর্যায়ে ওরা আমার আইফোন, ল্যাপটপ নিয়ে যায় এবং সঙ্গে থাকা ৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। আমার কাছ থেকে লিখিত একটি জবানবন্দিও নেয় তারা যেন বুঝাতে পারে আমি এখানে খারাপ কাজ করতে এসে আটকা পড়েছিলাম। এরপর সেই বাসা থেকে বের করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এটিএম বুথে থেকে ২০ হাজার টাকা তুলে হেলথ অফিসারের গলিতে নামিয়ে দেয়। এবং বলে, এ নিয়ে কাউকে কিছু বললে আমার ক্ষতি হবে।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার সকালে কলেজছাত্রের কাছ থেকে পাওয়া লিখিত অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়। বিকেল ৪টায় সাবলেট ভাড়ার নামে তরুণকে আটকে মারধর করা বাসায় অভিযান চালিয়ে দুই তরুণীকে আটক করা হয়। তারা হলেন— সাদিয়া জাহান ওরফে মেঘলা (২১) ও ফারিয়া আক্তার ওরফে পায়েল (১৯)। তাদের দুজনের বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায়। এর মধ্যে সাদিয়া জাহান ময়মনসিংহ কমার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর ফারিয়া আক্তার তাড়াইল উপজেলার সহিলাটি মুক্তিযোদ্ধা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী বলে পুলিশকে তথ্য দিয়েছে। এই চক্রের চারজন তরুণী ও চারজন তরুণের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ। তারা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। দুই তরুণীর জিম্মা থেকে কলেজছাত্রের মুঠোফোন ও ল্যাপটপ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম বলেন, চক্রের অন্য সদস্যদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। আটক দুজনকে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে শনিবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।