নারায়ণগঞ্জ থেকে : কয়লাতে খোঁচা দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আগুন জ্বললে কিন্তু নিভাতে পারবেন না। আমি শামীম ওসমানও তাদের সামলাতে পারবো না। আমি আল্লাহর কসম খেয়ে বলছি। অগ্নিগিরি দেখেছেন অগ্নিগিরির আগুন কিন্তু দেখেন নাই। নারায়ণগঞ্জে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ হবে বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।
শনিবার বিকালে শহরের ইসদাইরে বাংলা ভবন কমিউনিটি সেন্টারে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানারে জরুরি কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ‘নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী পরিবারকে ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও’ শীর্ষক এই কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়।
গত ১০ জানুয়ারি পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। এরপর পুলিশি অভিযান শুরু হলে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনার পাশাপাশি আতঙ্ক দেখা দেয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে আয়োজিত সভায় শামীম ওসমান বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমাদের নেতারা বলছেন, গণপদত্যাগ করবেন। কিন্তু আমি বলি এত উত্তেজিত হওয়ার কিছু নাই। মশা মারতে কামান লাগানোর দরকার না। আপনাদের এত টেনশন করার কারণ নাই। উত্তেজিত হবেন না। শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি নষ্ট করা যাবে না।’
তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হলেই আমরা ভয় পাবো সেটা ভাবার কারণ নাই। আমাদের নিয়ে খেইলেন না, খেলাইয়েন না। আমার লোকজন খারাপ হলে ছাড় দিব না। কিন্তু নেতাকর্মীকে বিনা কারণে হয়রানি করলে নারায়ণগঞ্জ এর মাটিতে চাড়া নাচায়া দিব। এক সেকেন্ড সময় দিব না। এর পরেও যদি খেলা হয়। আগামীতে ২৪ ঘণ্টা না মাত্র ৬ ঘণ্টার সময় দিব। আশা করি আর খেলা হবে না। খেলার আগেই খেলা শেষ হয়ে যাবে।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘আপনারা যা দেখছে সেটা আসল না। পর্দার আড়ালে কিছু খেলা হয়। কেউ কেউ ভুলে সে খেলায় পা দেয়। হয়তো নারায়ণগঞ্জের মেহমানরা সেই খেলায় পা দিয়েছেন। আমি কারো নাম বলবো না। আমি তাদের গনায় ধরি না। বাইরের লোকজনদের দোষ দিয়ে লাভ নাই। আমার ঘরের লোকজনদের দোষ। আমাদের ভেতরেই খন্দকার মোশতাকদের অবস্থান। বাইরের মানুষের কোন দোষ নাই।
নারায়ণগঞ্জের এই নেতা আরো বলেন, ‘আমাদের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হলেই আমরা ভয় পাবো সেটা ভাবার কারণ নাই। মনে রাখতে হবে আমরা এখনো বুড়ো হই নাই। আমাদের নিয়ে খেইলেন না, খেলাইয়েন না। আমরা এখনো জোয়ান আছি। মন্ত্রীকে প্রশ্ন করায় জুয়ার মামলা দিবেন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। আমার আত্মীয়কে মদের মামলা দিবেন। এসব দিয়ে আমাকে কাবু করতে পারবেন না।’
নিজের অতীত রাজনৈতিক ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে শামীম ওসমান বলেন, ‘৭৯ সালে আমরা মাত্র ৭ জন ছেলে নিয়ে জিয়াউর রহমানকে নারায়ণগঞ্জে ঢুকতে দেই নাই। তোলারাম কলেজে মন্ত্রীরা প্রবেশ করতে পারে নাই। আমাদের উপর গুলিও করেছিল। খালেদা জিয়াও নারায়ণগঞ্জে এসে বলেছিল শামীম ওসমান কোথায়, কোথায় আওয়ামী লীগ। তখন আমরা শ্রমিকদের বলেছিলাম রাস্তা ব্যারিকেড দিতে। আর ছাত্রদের বলেছিলাম রেল লাইন অবরোধ করতে। শামীম ওসমান আছে কী না তখন অস্তিত্ব জানান দেওয়া হয়েছিল। তখন কিন্তু খালেদা জিয়াও শহর থেকে যেতে পারেনি। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কিন্তু আমরা বিএনপিকে তাড়িয়েছিলাম।’