নারায়ণগঞ্জ থেকে : ফাঁসির রায় শেষে হাজতে নেয়ার সময় হাসলেন আসামি আর কাঁদলেন বাদী। এমনি একটি দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে নারায়ণগঞ্জের আদালতের বাইরে। নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ভাসুরের হাতে ছোট ভাইয়ের বউ হ'ত্যার ঘটনায় আমীর হোসেন (৫২) নামে একমাত্র আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত।
সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শেখ রাজিয়া সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন। একই সাথে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রায় শেষে আসামিকে হাজতে নেয়ার সময় হাসছিলেন আসামি আমীর হোসেন। আমীর হোসেন বন্দরের নবীগঞ্জ ইসলামবাগের মৃ'ত ফালান ব্যাপারীর ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল।
হ'ত্যাকাণ্ডের পরদিন নিহ'তের স্বামী মনির হোসেন তার বিরুদ্ধে হ'ত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। হ'ত্যাকা'ণ্ডের ঘটনা স্বীকার করে আসামি এর আগে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ৩ জুলাই গভীর রাতে নিহ'ত তাসলিমা বেগমকে (৩৫) ধা'রা'লো চা'কু দিয়ে কু'পিয়ে হ'ত্যা করে আমীর হোসেন। তাসলিমা বেগমের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সালাহ উদ্দিন সুইট জানান, আসামি ও তার স্ত্রী বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সে টাকা না দিয়ে পালিয়ে বেড়াত। এনজিও কর্মকর্তারা তাদের সন্ধান পাওয়ায় সে ধারণা করে- তার ছোট ভাই মনির হোসেনের স্ত্রী তাসলিমা তাদের সন্ধান দিয়ে দেয়।
আর তাই পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক গভীর রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বের হলে তাসলিমাকে চা'কু দিয়ে কু'পিয়ে হ'ত্যা করে সে। আদালত ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামির উপস্থিতিতে তার ফাঁসির রায় ঘোষণা করেছেন।
এদিকে সন্তান রাকিব হোসেন ও মারজানা আক্তারকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন নিহ'ত তাসলিমা বেগমের স্বামী মনির হোসেন। বাবাকে সান্তনা দেওয়ার ভাষাটুকু হারিয়ে ফেলেছিলো সন্তানরা।
এসময় পাশ দিয়েই মৃ'ত্যুদ'ণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আমির হোসেনকে কারাগারে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। তখন আসামি হাসতে হাসতে বারবারই বলছিলেন ‘একশয় একশ’। তবে এ কথা আসামি কেন বলেছেন তা জানা যায়নি।