শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০, ০৯:৫২:১৭

অনাহারে দিন কাটাচ্ছে ফতুল্লা ঋষিপল্লীর শতাধিক পরিবার

অনাহারে দিন কাটাচ্ছে ফতুল্লা ঋষিপল্লীর শতাধিক পরিবার

নারায়ণগঞ্জ থেকে : নিজ ভুবনে বসবাস করে ও তারা যেনো আজ পরবাসী। ঠিক এমনই একটি সম্প্রদায়ের সন্ধান মিলেছে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়ক ঘেষা ফতুল্লা ডি আইটি সংলগ্ন নল খালি খালের উত্তর পাশে বসবাস করা প্রায় দুই শতাধিক সংখ্যালঘু পরিবার নিয়ে গড়ে উঠা ঋষিপাড়া। করোনার কারনে লকডাউনে ক'বলে পরে অ'র্ধাহা'রে–অনা'হারে মানবেতর জীবনযাপন করছে প্রায় শতাধিক পরিবার।

প্রায় সময়ের নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত এই সম্প্রদায়ের সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা অতিতের মতো দেশের এই দুর্যো'গপূর্ণ মূহুর্তের সময়ে ও নেতা থেকে শুরু করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা কোনো মহলের লোকজন ও তাদের খোঁ'জ-খবর নিচ্ছেনা বলে অভিযো'গ পরিবারগুলোর। জানা যায়, ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কের ফতুল্লা বাসস্ট্যান্ড ও পোস্ট অফিস বাসস্ট্যান্ডের মাঝামাঝি জায়গায় পূর্বপাশে প্রায় দুই শতাধিক সংখ্যালঘু পরিবারের বসবাস।

যা সকলের নিকট ঋষিবাড়ী বলে পরিচিত। ফতুল্লা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড সীমান্ত ঘেষা ৩ নং ওয়ার্ডের বাসীন্দা তারা। তাদের রয়েছে নিজস্ব একটি পঞ্চায়েত। কোনো প্রকার ঝামে'লা হলে তারা নিজেদের পঞ্চায়েতের মাধ্যমেই মিমাং'সা করে নেয়। ঋষিবাড়ীতে বসবাসকারী বাসীন্দাদের অধিকাংশরাই খেটে খাওয়া নিন্ম আায়ের মানুষ। বিভিন্ন শিল্প- কলকারখানায় কাজ করে কোনো মতে দিনযাপন করে আসছিলো তারা। করোনা ভাইরাসের কারনে লকডাউনের ক'বলে পরা এ সকল খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চর'ম বি'পর্যয়। 

তাদের অনেকের ঘরেই নেই খাবার। লকডাউনের পর তাদের খোজঁ-খবর নিতে আসেনি নেতা কিংবা কোনো জনপ্রতিনিধি।পায়নি তারা কোনো সরকারী অনুধান বা সরকারের তরফ থেকে কোনো প্রকার ত্রান। পংকজ দাস, শিশু রাজ দাস সহ বেশ কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা অভিযো'গের সুরে বলেন, আমরা বাংলাদেশের নাগরীক এবং স্থায়ী বাসীন্দা হবার পরে ও কেনো আমরা শুধু মাত্র ভোট প্রদান ছাড়া সকল প্রকার নাগরীক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। লকডাইনের পর থেকে আমারা খেয়ে না খেয়ে অনেক কস্টের মাঝে বেচেঁ আছি তার খোঁ'জ নিতে আসেনি কোনো নেতা, জনপ্রতিনিধি কিংবা সরকারী দফতরের কেউ।

অ'র্ধাহা'রে-অনা'হারে থাকা আমরা কোনো দিক থেকে কোনো প্রকার ত্রান না পেয়ে গত চারদিন পূর্বে ছুটে গিয়েছিলাম স্থানীয় চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন সহ থানা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও বক্তাবলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বাড়ীতে কিন্তু তারা আশ্বাসের বানী শুনিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছে খালি হাতে।

ফতুল্লা রিপোর্টাস ক্লাবের সভাপতি ও  দুই শতাধিক পরিবারের সমন্বয়ে গড়ে উঠা পাঞ্চায়েত কমিটির সদস্য রনজিৎ মোদক বলেন, এখানে বসবাসকারী সংখ্যালঘু পরিবারের অধিকাংশরাই নিন্ম আয়ের সাধারন শ্রমিক। করোনা ভাইরাসের কারনে সরকার ঘোষিত লকডাউনের ক'বলে পরে এ সকল নিন্ম আয়ের পরিবারগুলোর মাঝে দেখা দিয়েছে খাদ্য দ্রব্যের চরম সংকট।অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের অনেককেই।তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসছেনা কেউ।

কয়েকদিন পূর্বে তাদের অনেকেই ত্রান বা খাদ্য পাবার আশায় গিয়েছিলো চেয়ারম্যানের বাসায়।চেয়ারম্যান তাদের বলেছে যে,সরকারী তরফ থেকে ত্রান আসলে তিনি তা পৌছে দিবেন।তিনি আরো বলেন,শুধু মাত্র ভোট প্রদান করা ছাড়া সকল প্রকার সুবিধা থেকে বঞ্চিত তাদের ঋষিবাড়ীর বাসীন্দারা। অতিতের মতো বর্তমানে ও তাদের সম্প্রদায়ের লোকজনের প্রতি নজর নেই সরকার, নেতা কিংবা কোনো জনপ্রতিনিধির।

বরাবরের মতো আজো তারা অবহেলিত। তিনি সমাজের বিত্তবান, রাজনৈতিক দলীয় নেতা, জনপ্রতিনিধি এবং সরকারী কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন অনা'হারে-অর্ধা'হারে মানবেতর জীবন-যাপন করা মানুষের সাহযার্থে এগিয়ে আসার জন্য। এ বিষয়ে ফতুল্লা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন জানায়, ঋষিবাড়ীর ৯০ জনের একটি তালিকা জমা হয়েছে। সরকারী ত্রান আসা মাত্রই তালিকানুযায়ী তাদের মাঝে ত্রান পৌছে দেওয়া হবে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে