নিউজ ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় কেঁপে উঠে ফেটে গেছে একটি রফতানিমুখী পোশাক কারখানা। এ সময় আতংকে ওই কারখানার কর্মরত শত শত শ্রমিক দ্রুত বাইরে বের হয়ে কান্নাকাটি শুরু করে।
খবর পেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও ভবন নির্মাণ প্রকৌশলীরা গার্মেন্টসে উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের শান্ত করেন। পরে তল্লাশি করে কারখানার চার তলার ফ্লোরে দীর্ঘ ফাটল খুঁজে পেয়েছে। এতে ওই কারখানার ৬ তলা ভবনে সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী প্রকৌশলী এবিএম খোরশেদ আলম।
সোমবার সকাল ৯টায় ফতুল্লার কাঠেরপুল এলাকায় অবস্থিত মোতালেব মনোয়ারা নিটওয়্যারস গার্মেন্টসে এ ঘটনা ঘটে।
শ্রমিকরা জানান, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ৬ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এ ভবনেই আবার নির্মাণ কাজ চলছে। কাজ চলাকালীন সময় ভবনের নিচতলায় রোববার সন্ধ্যায় একটি দেয়াল ধসে পড়ে। আজ হঠাৎ পুরো ভবন শক্তিশালী ভূমিকম্পের মতো কেঁপে উঠে। মনে হয়েছিল ভবনটি হেলে পড়ছে। তখন শ্রমিকরা ভয়ে দ্রুত গার্মেন্টস থেকে নেমে বাহিরে অবস্থান করে কান্নাকাটি করতে থাকে।
এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসে শ্রমিকদের শান্ত করেন। পরে ভবন নির্মাণ প্রকৌশলীরা আসলে শ্রমিকরা তাদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন এ ভবনে তারা কাজ করবে না। যে কোনো সময় ভবনটি ধসে পড়ে ব্যাপক হতাহত হতে পারে।
শ্রমিকদের আপত্তিতে প্রকৌশলীরা কারখানার প্রতিটি ফ্লোর তল্লাশি করেন। এতে প্রকৌশলী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা চার তলার ফ্লোরে দেখেন অনেক স্থানে মোটা টাইলস ফেটে গেছে।
শ্রমিকদের দাবি এ ভবনটি ভেঙ্গে নতুন করে করা হউক। নয়তো আলোচিত রানা প্লাজার মত ভবন ধসে শত শত শ্রমিক হতাহত হতে পারে। কোন ঝড় বৃষ্টি ছাড়াই যেভাবে ভবনটি কেঁপে উঠেছে তাতে মনে হয়েছে আর কারো বাড়ি ফেরা হবে না। শ্রমিকরা সরকারের কাছে জোর অনুরোধ জানিয়েছে ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার।
ভবনের বিষয়ে জানতে কারখানার জিএম সাইফুল ইসলামকে ফোন করলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি এমএ শাহীন জানান, মোতালেব-মনোয়ারা গার্মেন্টসের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। ওই ভবনে প্রায় এক হাজার শ্রমিক কাজ করে। রোববার সন্ধ্যায়ও ভবনটি কেঁপে উঠে। তখনও শ্রমিকরা আতংকিত হয়ে মালিকপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছে গার্মেন্টসের কাজ বন্ধ রাখার। কিন্তু মালিক পক্ষ শ্রমিকদের কোনো কথা শুনেনি। ফের দ্বিতীয় দফায় ভবনটি আজ প্রচণ্ড জোরে কেঁপে উঠে। শ্রমিকরা আমাকে জানিয়েছে ভবনটি ঝুঁকিমুক্ত করা না হলে কেউ কাজে যোগ দিবে না।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানান, শ্রমিকদের শান্ত করা হয়েছে। কারখানা ছুটি ঘোষণা করলে শ্রমিকরা যার যার মতো বাড়ি ফিরি গিয়েছে। কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে কারখানাটি ঝুঁকিপূর্ণ।