নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর ৭ খুনের ঘটনায় দুই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে গেছে। আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির না করায় বৃহস্পতিবার জেলা ও দায়রা জজ এনায়েত হোসেন সাক্ষ্য শুরুর জন্য ২৯ ফেব্রুয়ারি নতুন তারিখ ঠিক করে দিয়েছেন।
আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়ির চালক ইব্রাহিম হত্যা মামলার বাদী বিজয় কুমার পাল এদিন আদালতে উপস্থিত থাকলেও অন্য মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি আদালতে আসেননি।
এ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কেএম ফজলুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সাক্ষ্য গ্রহণের নির্ধারিত দিনে অন্য আসামিরা উপস্থিত থাকলেও সাবেক সেনা কর্মকর্তা তারেক সাঈদকে অসুস্থতার কারণে হাজির করা হয়নি।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি এ দুই মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর দিন ঠিক করে দিয়েছিল আদালত।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের ফতুল্লার লামাপাড়া থেকে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহত নজরুলের স্ত্রী বিউটি ও বিজয় কুমার পাল মামলা দুটি দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে প্রায় এক বছর পর গত ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
কিন্তু অভিযোগপত্র থেকে পাঁচ আসামিকে বাদ দেওয়ায় এবং প্রধান আসামি নূর হোসেনের জবানবন্দি ছাড়া অভিযোগপত্র আদালত আমলে নেওয়ায় ‘নারাজি’ আবেদন করেন সেলিনা ইসলাম বিউটি।
আবেদনটি বিচারিক হাকিম আদালত ও জজ আদালতে খারিজ হয়ে গেলে বিউটি উচ্চ আদালতে যান। হাই কোর্টের আদেশে বলা হয়, পুলিশ চাইলে মামলাটির ‘অধিকতর তদন্ত’ করতে পারে এবং ‘হত্যার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার’ ধারা যুক্ত করে নতুন করে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারে।
এ মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা যথাক্রমে সামরিক বাহিনী থেকে বরখাস্ত তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, এম এম রানা ও আরিফ হোসেনসহ মোট ২৩ জন কারাগারে আটক রয়েছেন। তারা হলেন- র্যাব সদস্য এসআই পূর্ণেন্দু বালা, এএসআই বজলুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ, হাবিলদার এমদাদুল হক ও নাসির উদ্দিন, কনস্টেবল শিহাব উদ্দিন ও বাবুল হাসান, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্সনায়েক হীরা মিয়া, বেলাল হোসেন, ল্যান্স কর্পোরাল রুহুল আমিন, সিপাহী আবু তৈয়ব, নুরুজ্জামান ও আসাদুজ্জামান নূর এবং নূর হোসেনের সহযোগী মোর্তুজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দীপু, রহম আলী ও আবুল বাশার।
র্যাবের সার্জেন্ট এনামুল কবীর, এএসআই কামাল হোসেন, কর্পোরাল মোখলেছুর রহমান, সৈনিক আব্দুল আলিম, মহিউদ্দিন মুন্সী, আল আমিন শরীফ, তাজুল ইসলাম ও কনস্টেবল হাবিবুর রহমান পলাতক। এছাড়া নূর হোসেনের আরেক সহযোগী বন্দর উপজেলার কুড়িপাড়া এলাকার সেলিম ভারতের কারাগারে আটক রয়েছেন।
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস