নারায়ণগঞ্জ থেকে : নারায়ণগঞ্জে জাকির হোসেন নামে এক ঠিকাদারকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গতকাল বুধবার রাতে সদর মডেল থানায় গিয়ে অবস্থান নেন সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। রাত সোয়া একটায় সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি থানাতেই ছিলেন।
ঢাকার হাতিরঝিলের আদলে নারায়ণগঞ্জের জিমখানা-বাবুরাইল এলাকায় নির্মাণাধীন পার্কের ঠিকাদারকে গ্রেফতারের ঘটনায় বুধবার রাত সাড়ে ১০টা হতে সদর মডেল থানায় অবস্থান করছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী। তিনি বলেছেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত ঠিকাদারকে ছাড়া না হবে ততক্ষণ আমি থানাতেই অবস্থান করবো।’
শেষ খবর অনুযায়ী, রাত দেড়টা পর্যন্ত থানার ওসির কক্ষেই বসা ছিলেন আইভী। তবে পুলিশ বলছে, আইনগত বিধি মেনেই জাকির হোসেন নামের ওই ঠিকাদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নিয়ম অনুযায়ী তাকে কারাগারে পাঠানো হবে। আইভী জানিয়েছেন, ওই সময় পর্যন্ত হলেও তিনি থানাতেই অবস্থান করবেন।
জানা গেছে, ঢাকার হাতিরঝিলের আদলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) উদ্যোগে শহরের জিমখানায় লেক ও বিনোদন পার্ক নির্মিত হচ্ছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৭৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হলো মেসার্স রত্না এন্টারপ্রাইজ, যার মালিক হলেন জাকির হোসেন। ইতোমধ্যে প্রকল্পটির অনেকখানি কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
রাত ১০টায় রত্ন এন্টারপ্রাইজের প্রকল্প অফিস থেকে ঠিকাদার জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর আগে রেলওয়ের কানুনগো ইকবাল মাহমুদ গতকাল বিকেলে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ২৭ মার্চ সকালে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আসামিরা খুনের উদ্দেশ্যে রেলওয়ের কর্মকর্তাদের মারধর করে। তারা রেলওয়ের সম্পত্তি দখল করে অবৈধ পার্ক নির্মাণ করছে। এ মামলায় আসামি করা হয় সিটি করপোরেশনের ঠিকাদার আবু সুফিয়ান, জাকির হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা আরও সাত-আটজনকে।
কানুনগো ইকবাল মাহমুদ জানান, রেলওয়ের জায়গা দখল ও সরকারি কাজে বাঁধা প্রদানের ওই ঘটনায় আমি বুধবার বিকেলে বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করি। মামলায় দুই ঠিকাদার সুফিয়ান ও জাকির হোসেনকে আসামি করা হয়েছে।
সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মালেক জানান, বুধবার সন্ধ্যায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মামলা দায়ের করেছে। মামলার আসামি ঠিকাদার জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার পরেই সদর মডেল থানায় হাজির হন মেয়র আইভীসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। ওই সময়ে আইভীর সঙ্গে সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র মনিরুজ্জামান মনির, জেলা যুবলীগ সভাপতি আবদুল কাদির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মালেককে উদ্দেশ্য করে আইভী বলেন, আমি থানার ভেতর থেকে এক পাও নড়বো না। কার নির্দেশে এই মামলা হয়েছে সেটা জানতে চাই। কাল থেকে আর উন্নয়ন কাজ চলবে না। উন্নয়ন কাজ বন্ধ থাকলে প্রয়োজনে পদত্যাগ করবো। এই শহর শামীম ওসমানের শহর। শামীম ওসমানই থাকুক।
মেয়র আইভীর সঙ্গে যাওয়া জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদির বলেন, প্রয়োজন হলে আমাদের সবাইকে গ্রেফতার করুন। আমরা এক পাও নড়বো না।
৩১ মার্চ, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস