নেত্রকোনা : অত্যন্ত ছোট ছিমছাম শহরটা এখন ঘাম ঝরানো আর বিরক্তির শহরে পরিণত হয়েছে। বসে বসে সময় গুনতে হয় পথচারীদের। দীর্ঘ সময়ের যানজট এখন শহরবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অগণিত অটোরিকশার যত্রতত্র চলাচলে দীর্ঘ জ্যামে নাভিশ্বাস উঠেছে শহরবাসীর। দিশাহারা পথচারী।
রোগীসহ বিভিন্ন মানুষের ব্যাহত হচ্ছে দৈনন্দিন কাজকর্ম। নেত্রকোনা পৌর শহরের মানুষের একটি সড়কের পথে চলতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অবর্ণনীয়। বাদ যাচ্ছে না অফিস-আদালতের মানুষও।
নেত্রকোনা পৌরসভাটিতে বর্তমানে লাইসেন্সকৃত ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ২৩০০ বলে জানান মেয়র। অটোরিকশা রয়েছে ১৫০০ এবং মিশুক ১৩০০। তার মধ্যে প্রতিদিন ইজিবাইক অর্ধেক করে দুই শিফটে চলে বলে জানায় পৌর কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু সাধারণ মানুষের অভিযোগ লাইসেন্স ছাড়াই শহরে অটো চলে দুই থেকে আড়াই হাজার। ফলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মোড়ে মোড়ে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের। মোক্তারপাড়া ব্রিজ থেকে শুরু করে শহীদ মিনার মোড় তেরী বাজার, থানার মোড়, কালিবাড়ি মোড় ও রেলক্রসিং মোড়ে থাকে দীর্ঘ যানজট। সেইসাথে বড় বাজার, আখড়ার মোড় হয়ে রাজুর বাজার মোড়েও একই অবস্থা থাকে। এভাবেই প্রতিদিন সাধারণ মানুষের চলাচল করতে হয়। ফলে এক সড়কের পৌরশহর হলেও আধ ঘণ্টার সড়ক দেড় দুই ঘণ্টায় পারি দিতে হয়।
অনেকে নিজেদের মোটরসাইকেল নিয়েও বিপাকে পড়ায় হেঁটে চলাচল করেন। বেশি সমস্যায় পড়েন নারী শিশুরা। কম ভোগান্তিতে নেই অফিসগামী মানুষেরা। অগণিত ইজবাইকে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করায় পথে জ্যাম লেগে যায় যখন তখন। এদিকে অটো চালাকরাও অতিরিক্ত অটোর কথা স্বীকার করে বলেন, তারা নিয়ম মেনেই চালান।
পথচারীদের অভিযোগ সড়কে ইজিবাইকগুলো বিশৃঙ্খল ভাবে চলে। কে কার আগে যাবে, এই প্রতিযোগিতা চলে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে আটকা পড়েন সাধারণ মানুষ। তাদের সিস্টেম মেনে চালাতে বাধ্য না করায় দিন দিন ইজবাইকের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ নগরবাসী।
পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম খান জানান, আগে যা ছিল অটোরিকশা সেগুলোই রয়েছে। নতুন কোনো লাইসেন্স দেয়া হয়নি। তবে জেলা শহরের একটিমাত্র সড়ক হওয়ায় বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য উপজেলার যানবাহন চলাচলে এই যানজট হয়।
শহরের জ্যাম কমাতে দুটি বাইপাস হওয়ার কথা থাকলেও সেগুলো না হওয়া পর্যন্ত জ্যাম কমানো কঠিন বলে জানান তিনিও। এদিকে লাইসেন্সবিহীন অটোরিকশা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র।