নোয়াখালী: কোম্পানীগঞ্জে গতকাল বিকালে বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। তার মধ্যে সাতজন গুলিবিদ্ধ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও ফাঁকা গুলি করে।
গুলিবিদ্ধের মধ্যে বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির (২৮) নামে এক সাংবাদিক রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি বার্তাবাজারডটকমের নিজস্ব প্রতিবেদক। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন কামাল উদ্দিন (৫০), বড়রাজাপুর গ্রামের আবদুল ওয়াহিদের ছেলে সাইদুর রহমান (২৬), চরকাঁকড়া ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলামের ছেলে নুরুল অমিত (২০), বসুরহাট পৌরসভার আবুল কালামের ছেলে রায়হান (২০)। অন্য আহতরা চরফকিরা ইউনিয়নের মো. কাঞ্চন (৬০), মুছাপুর ইউনিয়নের আবুল খায়েরের ছেলে মাসুদ (২৫), চরকাঁকড়া ইউনিয়নের আবদুস সাত্তারের ছেলে কামরুল হাসান (৩০), চরফকিরা ইউনিয়নের আবদুল মান্নানের ছেলে ফরহাদ (৪০), বসুরহাট পৌরসভার আদনান (২৪), মারুফ (২৫)।
নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম জানান, সাংবাদিক মুজাক্কির ও কামাল উদ্দিনের বুকে, গলায় গুলি লাগায় অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুজনকেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকাল ৫টার দিকে চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজার এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নেন মিজানুর রহমান বাদল। এ সময় একটি মিছিল বাজারের দলীয় কার্যালয়ে দিকে যায়। হঠাৎ ওই মিছিলে আবদুল কাদের মির্জার সমর্থক জামাল উদ্দিন লিটনসহ কিছু লোক বাধা দেয়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতন্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেধে যায়।
মিজানুর রহমান বাদল টেলিফোনে বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরসহ দলীয় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে শনিবার আহূত সংবাদ সম্মেলন বিষয়ে আমার বাড়িতে প্রস্তুতিমূলক সভা চলাকালে বাড়ির বিভিন্ন দিক থেকে অনবরত গুলি আসতে থাকে। এতে সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।’ তাঁর দাবি, হামলায় অন্তত ৫০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এ বিষয়ে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা তার ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে লাইভে এসে তার নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ করেন এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর জাহিদুল হক রনি সাংবাদিকদের জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কাউকে আটক করা যায়নি। পরে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ফের হরতালের ঘোষণা দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় কাদের মির্জা বসুরহাট পৌরসভা হলরুম থেকে দলীয় নেতাকর্মিদের ওপর হামলা ও গোলাগুলির প্রতিবাদে কোম্পানীগঞ্জে আজ সকাল-সন্ধ্যা এই হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা দেন।
চরপার্বতী ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক তানভির হরতাল কর্মসূচির সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, হরতালের কারণে বন্ধ থাকবে উপজেলামূখী সকল প্রকার যান চলাচল।