আহমদ সেলিম রেজা : বাংলাদেশ থেকে চলতি বছর ৭ লাখ নারী ও পুরুষ কর্মী বিদেশ পাঠানো হবে। এজন্য রিক্রুটিং এজেন্সির চাহিদামাফিক প্রশিক্ষণ, বিদেশি নিয়োগকর্তার উপস্থিতিতে কর্মী অনুসন্ধান ও নিয়োগের জন্য জব ফেয়ার ও এমপ্লয়ার কনভেনশন করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এ ছাড়া বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে যারা ব্যবহারিক জ্ঞান থাকার পরও সনদের অভাবে উপযুক্ত মজুরি পাচ্ছেন না, তাদের সনদ দিতে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত জুলাই পর্যন্ত ৪ লাখ ২১ হাজার কর্মী বিদেশ পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে জর্ডান, হংকং, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরবসহ বিশ্বের ৬৭টি দেশে ১ লাখ ৩০ হাজার ৭১৮ জন নারী শ্রমিক পাঠানো হয়েছে। আরও ১ লাখ ৫ হাজার ৫১৯ জন নারী কর্মীকে হাউস কিপিং পেশায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এ খাতে গত জুলাই পর্যন্ত ৬৩ হাজার নারী কর্মী সৌদি আরব গেছেন।
এ ছাড়া নারী শ্রমিকদের সুরক্ষায় তাদের স্বামী, সন্তান বা ভাইকে সৌদি আরবে পাঠানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে দুই দেশের সরকার। এ ছাড়া দেশের পুরুষ ও মহিলা কর্মীদের জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ দিতে টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১৯ সালের মধ্যে ৪৮টি ট্রেডে বাংলাদেশ ৭ লাখ ৮৬ হাজার দক্ষ শ্রমিক গড়ে তুলবে। এর মধ্যে ৫ লাখ ২৫ হাজার পুরুষ ও ২ লাখ ৬১ হাজার নারী শ্রমিককে প্রশিক্ষিত করা হবে।
মন্ত্রণালয়সূত্র জানায়, বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অদক্ষ শ্রমিকের তুলনায় দক্ষ শ্রমিক নিতে বেশি আগ্রহী। এজন্য বাংলাদেশ অধিক হারে দক্ষ কর্মী সৃষ্টি করবে। বিদেশে দক্ষ কর্মীর চাহিদা ও বেতন-ভাতা বেশি হওয়ায় বিদেশ থেকে দেশের ৫০ জন প্রশিক্ষককে প্রশিক্ষণ দিয়ে আনা হয়েছে। ৬২টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা টিটিসিতে এরা এখন আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ দেবেন। এ ছাড়া ছয়টি মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ ৬৮টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক মানের ৪৮টি ট্রেডে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, সৌদি আরবের বিভিন্ন শিল্প কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে যারা ব্যবহারিক জ্ঞান থাকার পরও শুধু সনদের অভাবে উপযুক্ত মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তাদের সনদের ব্যবস্থা করা হবে। সৌদি আরবে বসেই তারা রিকগনিশন অব প্রিয়র লার্নিং কর্মসূচির আওতায় এ সনদ পাবেন। ফলে তাদের বেতন-ভাতার পাশাপাশি সামাজিক মর্যাদাও অনেক বাড়বে।
দেশের শ্রমবাজার আরও সম্প্রসারণ করতে ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিলসহ মোট ১০টি নতুন শ্রমবাজার সম্পর্কে চার বছর মেয়াদি স্টাডি সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে বিদ্যমান শ্রমবাজারের ট্রেন্ড ও নারী কর্মীদের জন্য বহুমাত্রিক কর্মবাজার চিহ্নিত করতে গবেষণা শেষ হয়েছে। এখন থেকে বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এসব রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে জনবল পাঠানো হবে। - বিডি প্রতিদিন
২৭ আগস্ট ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস