তাইসির মাহমুদ, তিরানা (আলবেনিয়া) থেকে : পহেলা সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার। দুই ঘণ্টা অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইন্সে চড়ে হিথ্রো থেকে যখন ভিয়েনা পৌঁছলাম তখন সকাল সোয়া ১১টা। ইমিগ্রেশন শেষে বাইরে বেরুতেই দেখা হলো হাশেম ভাই ও শামীম ভাইয়ের সঙ্গে। আগে থেকেই গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন তারা। দুজনই ভিয়েনায় জাতিসংঘ অফিসে চাকরি করেন। কুশলাদি বিনিময় শেষে যাত্রা ভিয়েনা শহর অভিমুখে।
এয়ারপোর্ট থেকে ২৫ মিনিটের ড্রাইভিং দূরত্বে অবস্থিত মূল সিটি সেন্টার। ট্রাফিকবিহীন রাস্তা ধরে যথাসময়েই পৌঁছলাম সেখানে। একটি বিশেষ ট্রিপে ৯ সদস্যের বৃটিশ-বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে যাচ্ছি আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানায়। পথিমথ্যে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ১১ ঘণ্টার যাত্রাবিরতি। তাই শহরটি ঘুরে দেখার সুযোগ হাতছাড়া করলাম না। ভিয়েনার বাঙালি কমিউনিটি নেতা হাশিম মোহাম্মদ ও মাহিরুল হক শামীম শহরটি ঘুরে দেখার জন্য সবকিছু ঠিকঠাক করে রেখেছিলেন। জোহরের নামাজ অত্যাসন্ন হওয়ায় প্রাথমিক গন্তব্য হলো ভিয়েনা ইসলামিক সেন্টার। শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিস্তৃত এলাকাজুড়ে একটি মসজিদ অ্যান্ড ইসলামিক সেন্টার।
১৯৭৮ সালে সৌদি সরকার নিজেদের খরচে প্রতিষ্ঠিত করেছে মসজিদটি। বর্তমানে সৌদি সরকারের ব্যবস্থাপনায়ই পরিচালিত হয়। নামাজ শেষে হাশেম ভাই আমাদের ওই সেন্টারের ডিরেক্টর ড. হাশিম মাহরুগীর কার্যালয়ে নিয়ে গেলেন। আমরা আসছি জেনে হাশিম ভাই আগে থেকেই একটি সৌজন্য সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন। প্রায় আধঘণ্টা তার সঙ্গে মতবিনিময়। তিনি ইসলামিক সেন্টার প্রতিষ্ঠার ইতিহাস, অষ্ট্রিয়াসহ ইউরোপের মুসলমানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বললেন। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া, ভিয়েনার সর্বোচ্চ পর্বতে আরোহণ, উঁচু পর্বতশৃঙ্গ থেকে শহর দর্শন ও রানীর বাড়িতে পদচারণা শেষে এয়ারপোর্টে ফিরলাম রাত সোয়া ৯টায়। এই সময়ে হাশেম ভাই ও শামীম ভাই ছাড়াও দেখা হলো আরো অনেক বাংলাদেশির সঙ্গে।
যারা আমাদের সঙ্গে নিয়ে শহরে ঘুরে বেড়ালেন পরম আতিথেয়তায়। গাড়িতে যেতে যেতে জানতে পারলাম ভিয়েনার বাংলাদেশিদের জীবনের নানা কথা। মূলত আশির দশক থেকেই ভিয়েনায় বাংলাদেশিদের বসবাস শুরু হয়। প্রথমদিকে যারা এসেছিলেন তাদের ৯৯ শতাংশই ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। বাংলাদেশ থেকে জাতিসংঘের বিভিন্ন অফিসে চাকরি নিয়ে এসেছিলেন তারা। ওই সময়ের অর্থাৎ প্রথম জেনারেশনের অস্ট্রিয়ান-বাংলাদেশি এখন নেই বললেই চলে। অনেকেই চাকরি শেষে বাংলাদেশে ফিরে গেছেন। কেউ কেউ ইতিমধ্যে পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে। বেঁচে আছেন খুব নগণ্য সংখ্যক। পরবর্তীতে আশির দশকে যারা বাংলাদেশ থেকে ভিয়েনা আসেন তাদের একজন হলেন মাহেরুল হক শামীম। আমাদের যাত্রাবিরতির সঙ্গী। দেশের বাড়ি রাজশাহীতে। শুদ্ধ উচ্চারণে খুব সুন্দর বাংলা বলেন। সংস্কৃতিমনা মানুষ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স করে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে ভিয়েনা এসেছিলেন ৯০-এর দশকে। ছাত্রত্ব শেষ হলেও আর দেশে ফেরা হয়নি। লেখাপড়া শেষে চাকরি পেয়ে যান জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টে। বাংলাদেশেই বিয়ে করছেন। স্ত্রী, সন্তান নিয়ে এখন স্থায়ীভাবে ভিয়েনা বসবাস করছেন। ভিয়েনা ও ভিয়েনার বাংলাদেশিদের সম্পর্কে অনেক কিছুই জানলাম তার কাছ থেকে। ৫৫ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশে যেখানে ১৬ কোটি মানুষের বসবাস সেখানে ৩২ হাজার বর্গমাইল আয়তনের অস্ট্রিয়ার জনসংখ্যা মাত্র ৮০ লাখ। এখানে ৫ হাজার বাংলাদেশি বসবাস করছেন তা আগে জানতাম না। এই ৫ হাজারের মধ্যে ৮০ শতাংশই থাকেন রাজধানী ভিয়েনায়। অধিকাংশই বসবাস করেন সপরিবারে। সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ দেশ।
কেউ কেউ নাগরিকত্ব লাভের পর ভিয়েনা ছেড়ে ইউরোপের অন্যান্য দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। কিছু সংখ্যক বাংলাদেশি পাড়ি দিয়েছেন লন্ডনে। তবে যারা ভিয়েনা আছেন তারাও সুখে আছেন, আছেন শান্তিতে। ৫ হাজার বাংলাদেশি থাকলেও সকলেই বিচ্ছিন্ন। নির্দিষ্ট এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে গেলেই বাংলাদেশি পাওয়া যায়। সকলেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করেন। কোনো কমিউনিটি সংগঠন না থাকলেও আছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি। তবে ইতিমধ্যে বাংলাদেশিদের উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে চারটি মসজিদ। এসব মসজিদে বাংলাদেশি ইমামরা নামাজ পড়ান। মসজিদে জুমা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ছাড়াও বাঙালি বাচ্চাদের আরবি পড়ানো হয়। মসজিদগুলোই পারস্পরিক দেখা হওয়া বা দেখা করার একমাত্র মাধ্যম। আল-ফালাহ জামে মসজিদ নামক একটি মসজিদে গেলাম।
২০০৩ সালে বাংলাদেশিদের উদ্যোগেই একটি ভাড়া করা ভবনে এই মসজিদের কার্যক্রম শুরু হয়। তাছাড়া বায়তুল মামুর নামে আরো দুটি মসজিদ রয়েছে। তবে বাঙালিদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত সবচেয়ে পুরাতন মসজিদটি হচ্ছে বায়তুল মোকাররম। ১৯৯৭ সালে প্রথম ভাড়া ভবনে মসজিদের কার্যক্রম চালু হলেও এখন এটি ফ্রিহোল্ড মসজিদ। আল-ফালাহ মসজিদের ইমাম ও সহকারী ইমাম দুজনই বাংলাদেশি। এই কয়েক বছর আগে তারা বাংলাদেশ থেকে চাকরি নিয়ে ভিয়েনা এসেছেন। আমরা মসজিদটি ঘুরে দেখলাম। সেখানে আরো কয়েকজন বাংলাদেশির সঙ্গে কুশল বিনিময় হলো। যে ট্যাক্সিতে চড়ে আমরা ভিয়েনা ঘুরছিলাম তার মালিকও কিন্তু বাংলাদেশি। পথে যেতে যেতে তার সঙ্গে অনেক কথা হলো। জানতে পারলাম অনেক কিছু। নাম জাহাঙ্গীর আলম।
দেশের বাড়ি ময়মনসিংহ শহরে। লন্ডন এসেছেন ১৪ বছর আগে। পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন ট্যাক্সি ড্রাইভিং। বললেন, স্বাধীন বিজনেস। যখন ইচ্ছা কাজ করলাম। ভালো না লাগলে করলাম না, অসুবিধা নেই। আয়ও বেশ ভালো। দৈনিক ৫-৬ ঘণ্টা কাজ করে মাসে কমপক্ষে আড়াই হাজার ইউরো রোজগার করা যায়। তবে তিনি ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা কাজ করেন। ভালো আয়। সরকারকে ১০ পার্সেন্ট ট্যাক্স দিয়েও মাসে সাড়ে ৪ হাজার ইউরো আয় করতে পারেন। ট্যাক্সি ব্যবসায় ট্যাক্স ছাড় আছে। অন্যান্য ব্যবসায় ২০ পার্সেন্ট ট্যাক্স গুনতে হয়।
জানালেন, আগে ব্যবসা আরো ভালো ছিল। কিন্তু উবার আসার পর থেকে কিছুটা মন্দা যাচ্ছে। উবার কোম্পানি ট্যাক্সি মার্কেট তাদের সম্পূর্ণ দখলে নিয়ে যাচ্ছে। অস্ট্রিয়ায় প্রায় ২শ’ বাঙালি ট্যাক্সি ড্রাইভার রয়েছেন। তিন শতাধিক বাংলাদেশি জাতিসংঘের আওতাধীন অফিসগুলোতে চাকরি করেন। বাকিরা কাজ করেন বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, কফি বার ও গ্রোসারি শপে। হাতেগোনা দু-একজনের নিজস্ব ব্যবসা আছে। তবে ব্যবসায় তেমন লাভ নেই। বিভিন্ন ধরনের ট্যাক্স দিতে হয়। নিয়মনীতি মনে না চললে জরিমানাও গুনতে হয়। সাধারণত কোনো রেস্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে কাজ করলে মাসে কমপক্ষে এক হাজার ইউরো রোজগার করা যায়। অফিসে যারা কাজ করেন তাদের আয় মাসে দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার ইউরো পর্যন্ত। থাকা খাওয়াও খুব ব্যয়বহুল নয়। মাসিক ছয়-সাতশ’ ইউরোতে দুই-তিন বেডরুমের ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়া যায়। এগারো ঘণ্টার যাত্রাবিরতিকালে দেখা হলো আরো অনেকের সঙ্গে। তাদের অধিকাংশেরই দেশের বাড়ি কুমিল্লা ও নোয়াখালীতে।
সিলেটি মানুষের সংখ্যা কম। অবশ্য একজনের দর্শন পেয়ে গেলাম। তাও ভাগ্যক্রমে আমারই উপজেলার মানুষ। মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বাড়ি। এখনও সাতাশ-আটাশ বছরের টগবগে তরুণ। নাম শিপার আহমদ। বড়লেখা কলেজ রোডে বাড়ি। প্রথম দর্শনেই বললেন ‘আপনাকে চেনা চেনা মনে হচ্ছে’। বুঝতে পারলাম ফেসবুক আর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার যুগে আজকাল কেউ আর কারো অচেনা নয়। সপরিবারে ভিয়েনায় আছেন দীর্ঘদিন হয়। লন্ডন পাড়ি দেয়ার চিন্তা করছিলেন। কিন্তু ব্রেক্সিটের কারণে লন্ডনে প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই আপাতত থেমে গেছেন। হাস্যোজ্জ্বল অমায়িক চরিত্রের মানুষটি গাড়ি নিয়ে সার্বক্ষণিক আমাদের সঙ্গে ছিলেন। এয়ারপোর্টে পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত সঙ্গ দিয়েছেন। ময়মনসিংহ থেকে ১৫ দিন আগে স্টুডেন্ট ভিসায় ভিয়েনা এসেছেন আফজাল হোসেন সুমন। পঁচিশ বছর বয়সের তরুণ। ভর্তি হয়েছেন অনার্স ম্যানেজমেন্ট নিয়ে ভিয়েনা ইউনিভার্সিতে। কথা হলো তার সঙ্গে।
জানালেন, ভিয়েনায় স্টুডেন্ট ভিসায় আসা সহজ। এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে কোনো ফি লাগে না। একদম ফ্রি। বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে সিটও পাওয়া যায়। মাসে ফি মাত্র ১শ ইউরো। ১০ থেকে ২০ ঘণ্টা বৈধভাবে কাজ করা যায়। রেস্টুরেন্ট কিংবা কফিবারে একটি কাজ জোগাড় করতে তেমন অসুবিধা হয় না। মাসে সাত-আটশ’ ইউরো রোজগার করা যায়। বিশ্বের খুব কম দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফি ছাড়া পড়া যায়। বৃটেনের মতো উন্নত দেশেও নয়। বিদেশি স্টুডেন্ট তো নয়ই, নিজের দেশের স্টুডেন্টকেও বছরে ৯ হাজার পাউন্ড ফি গুনতে হয়। একসময় ছাত্রদের ইউনিভার্সিটি ফি গ্রান্ট হিসেবে দেয়া হতো। পড়ালেখা শেষে ভালো বেতনের চাকরি করলে বেতন থেকে কেটে নেয়া হতো। কোনো ইন্টারেস্ট দিতে হতো না। কিন্তু ব্রেক্সিটের পর থেরেসা মে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গ্রান্ট পদ্ধতি পরিবর্তন করে শিক্ষা-ঋণ পদ্ধতি চালু করেছেন। এখন ঋণ নিয়ে পড়তে হবে। নতুন নিয়মে পড়ালেখা শেষে চাকরি পাওয়ার পর ঋণের অর্থ সুদে আসলে পরিশোধ করতে হবে।
এ নিয়ে যুক্তরাজ্যে নিম্ন-মধ্যবিত্ত বাংলাদেশি সমাজের অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন। সন্তানের উচ্চশিক্ষার জন্য প্রয়োজন কমপক্ষে ৪০ হাজার পাউন্ড। বৃটেন যেখানে লেখাপড়ায় বছরে বছরে ফি বৃদ্ধি করছে সেখানে অস্ট্রিয়ার মতো একটি দেশে লেখাপড়া ফ্রি। আফজাল হোসেনের কাছে স্টুডেন্ট ভিসায় বাইরের দেশ থেকে অস্ট্রিয়া আসার প্রক্রিয়া জানতে চাইলাম। তিনি চুলচেরা নিয়মনীতি বর্ণনা করলেন। অনেকটা স্টুডেন্ট কনসালটেন্সির মতো। বললেন, বাংলাদেশ থেকে কেউ আসতে চাইলে তার প্রথম কাজ হবে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মার্কশিট ও সনদপত্র জোগাড় করা। পরে এগুলো সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকাস্থ ভিয়েনা কনস্যুলেট অফিসে নিয়ে সত্যায়ন করাতে হয়।
তবে কেউ যদি ইতিমধ্যে বিএ পড়তে থাকেন তাহলে তাকে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সত্যায়ন করাতে হবে। বার্থ সার্টিফিকেট লাগবে। অর্থিকভাবে সচ্ছলতার প্রমাণের জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বয়সের আনুপাতিক হারে কয়েক লক্ষ টাকা জমা রাখাতে হয়। বয়স পঁচিশের নিচে হলে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা আর পঁচিশের বেশি হলে ১০ থেকে ১১ লাখ টাকা। এরপর যাবতীয় সত্যায়িত কাগজপত্র ভিয়েনার যেকোনো ইউনিভার্সিটিতে পাঠালে কর্তৃপক্ষ অফার লেটার পাঠিয়ে দেন। ওই অফার লেটার নিয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ দিল্লিস্থ ভিয়েনা অ্যাম্বাসিতে যেতে হয়। সেখানে ইন্টাররিভউ শেষে ফিঙ্গারপ্রিন্ট রেখে পাসপোর্টে সিল মেরে দেয়া হয়। এরপর পাসপোর্ট নিয়ে ঢাকাস্থ ভিয়েনা কনস্যুলেট অফিসে জমা দেয়ার তিন মাসের মধ্যে ভিসা হয়ে যায়। আফজাল ১৬ই আগস্ট ভিয়েনা এসেছেন।
টিকিটে খরচ হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা। আপাতত আছেন তার এলাকার এক বন্ধুর সঙ্গে। ভিয়েনা ঘুরে দেখছেন। কাজ খুঁজছেন। প্রথম এক বছর তাকে জার্মান ভাষা শিখতে হবে। কারণ, লেখাপড়ার ভাষা জার্মান। ভাষা শিক্ষার পর মূল কোর্স। অনার্সে পড়লে সপ্তাহে ১০ ঘণ্টা আর মাস্টার্সে পড়লে ২০ ঘণ্টা কাজ করা যায়। পাঁচ বছর বৈধভাবে বসবাস করার পর স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেলে পর্যায়ক্রমে সিটিজেনশিপ পাওয়াও নিশ্চিত হয়ে যায়। বাড়িতে স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ে রেখে এসেছেন। তাদের নিয়ে কিছুটা মনোকষ্টের কারণ। নতুবা নতুন দেশে, নতুন জায়গায় ভালোই কাটছে সময়। আফজাল হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে বলতে ভিয়েনায় যাত্রাবিরতির সময় ফুরিয়ে এলো।
রাত সোয়া ১১টায় তিরানা অভিমুখী ফ্লাইট। এয়ারপোর্ট পৌঁছতে হবে দুই ঘণ্টা আগে। ফেরার পথে অস্ট্রিয়ার রানীর বাড়িতে হানা দিলাম। অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন প্রাসাদ। তার বাড়ির বিস্তৃত আঙ্গিনায় ঘুরে বেড়ালাম ঘণ্টাখানেক। ক্যামেরাবন্দি করলাম নিজেদের। এবার বিমানবন্দর ফেরার পালা। আধঘণ্টায় পৌঁছে গেলাম এয়ারপোর্টে। রাত সোয়া ১১টায় তিরানার উদ্দেশে ভিয়েনা ছাড়লো আমাদের ফ্লাইটটি। উল্লেখ্য, বিশেষ ট্রিপে বৃটিশ-বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলে রয়েছেন ইমিগ্রেশন জাজ বেলায়েত হোসেইন, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট নবাব উদ্দিন, লন্ডন মুসলিম সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক দেলওয়ার খান, ব্যারিস্টার নাজির আহমদ, সাপ্তাহিক দেশ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ, সাংবাদিক আবদুল মুনিম জাহেদী ক্যারল, সাপ্তাহিক পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি মতিউর রহমান চৌধুরী, শিক্ষাবিদ মুসলেহ ফারাদী ও লেকচারার জামাল উদ্দিন। - এমজমিন
৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি