সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৬, ০৬:২০:৪৪

ধর্মীয় গোড়ামিই শেষ করছে বাংলাদেশকে:‌ তসলিমা

ধর্মীয় গোড়ামিই শেষ করছে বাংলাদেশকে:‌ তসলিমা

প্রবাস ডেস্ক : দিল্লিতে এখন যেখানে আছেন স্বদেশ থেকে নির্বাসিত বাংলাদেশের লেখিকা তসলিমা নাসরিন, সে বাড়িতেও রয়েছে পুলিসি নিরাপত্তা। তবে তসলিমার ভয়ভীতি নেই। নিজেকে নাস্তিক বলে দাবি করে ধর্মীয় গোড়ামির বিরুদ্ধে তিনি সরব।

ভারতের সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তসলিমার গলায় ঝরে পড়ল একরাশ ক্ষোভ। কখনও কথা বললেন বাংলাদেশ নিয়ে, উঠে এল সাহিত্যিকের অধিকার থেকে ধর্মচর্চা, নারীবাদ সবকিছুই। তবে দেশ–প্রতিবেশী দেশ ছাড়ার কষ্টটা এখনও তাড়া করে তাকে।

ভারতকেও দোষ দিয়ে বললেন, ‘‌ভারতে কে থাকবে না থাকবে সেটা ওরা ঠিক করবে?‌ সেবারে কিন্তু আমাকেই দেশ ছাড়তে হয়েছিল, ওরা শাস্তি পায়নি। বরং ওখানে আমার ‘‌মাথার দাম’‌ ঠিক করেছে ধর্মরক্ষকের দল!‌’‌ বাংলাদেশের উপর ক্ষোভটা যেন বেশি, ক্ষোভে মিশেছে আশঙ্কাও।

২২ বছর ভিটে ছেড়েছেন, তবু গুলশান থেকে ব্লগার হত্যার ঘটনা, সবকিছু শোনেন, জানেন।  আতঙ্কের খবর গুলো যেন রোজ নতুন করে চিন্তায় ফেলছে তাকে।

তসলিমা বললেন, ‘‌১৯৭১ সালে বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতা পেয়েছে, সংবিধানে সেই দেশকে তো ধর্মনিরপেক্ষই বলা হয়েছিল। আর এখন দেখুন, রোজ ধর্মের নামে খুন হচ্ছেন নাস্তিকতাবাদের নবীন প্রচারকরা। আমাকে যখন বাংলাদেশ ছাড়া করা হয়েছিল, তখনও সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ভেবেছিলাম, অবস্থা পাল্টাবে। শেখ হাসিনাও তার পূর্বসূরির মত একই ভুল করলেন। কাউকে শাস্তি দিলেন না।

তিনি বলেন, এতজন ব্লগার খুন হয়ে গেলেন বাংলাদেশে, কেউ শাস্তি পেয়েছে?‌ গোঁড়া ইসলামি ভরসা করা যায় না। ওরা যাকে ইচ্ছা খুন করতে পারে। সরকার এখনই কোনও কড়া ব্যবস্থা না নিলে কী হবে! সমাজটাকে ওরা ধ্বংস করে দেবে।‌ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমি নাকি লেখায় অনেকের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছি। কিন্তু একটা জিনিস ভাবুন, বাক স্বাধীনতা থাকবে, লোকে সবকিছু নিয়ে মত দেবে, অথচ কাউকে দোষ দেওয়া যাবে না, এটা অর্থহীন। মানে আমি বাক স্বাধীনতার বলে কাউকে খারাপ বললে যদি তার ভাবাবেগ আহত হয়, তাহলে তো স্বাধীনতা রাখার মানে নেই। বাক স্বাধীনতা থাকলেই কেউ না কেউ আহত হবেন, সেটাই নিয়ম।’ ‌

কিন্তু এভাবে কতদিন, মৃত্যুভয় নিয়ে ‘‌লজ্জা’–র লেখিকা বাঁচেন কিভাবে?‌ ভয় তাড়া করে না? স্পষ্ট কথা ‘‌ফতোয়ায় যে কোনওদিনই ভয় পাইনি তার প্রমাণ আমারা সাহিত্য জীবন। এখনও প্রায় ৪০ টি বই লিখেছি। ভয় আমার নেই, শুধু ভারত–বাংলাদেশ, কাছের ঠিকানা গুলোকে কেন্দ্র করে আছে ক্ষোভ।’

বাড়ির বাইরে পুলিস, মাঝে মধ্যে প্রাণে মারার হুমকি, এসব পেরিয়েও লেখার শক্তি পান কোথা থেকে!‌ বললেন, ‘‌ওসব এখন সয়ে গেছে। ‌একটা মানুষ মৃত্যুভয় নিয়ে বাঁচতে পারে না। খুন হয়ে যাওয়ার ভয় গেড়ে বসলে আমি এতগুলো বই লিখতে পারতাম?‌’‌ ‌আজকাল

১৪ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে