নিউজ ডেস্ক : ‘উন্নয়নের মহাসড়কে অভিবাসীরা সবার আগে’–আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এমন স্লোগান। অভিবাসী কর্মীদের মর্যাদা এবং অধিকার সমুন্নত রাখতে প্রতি বছরের ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয় দিনটি। সভা, সেমিনার, অভিবাসন মেলাসহ নানা আয়োজনে বাংলাদেশেও জাতীয়ভাবে দিবসটি পালন করা হয়। বর্তমান বিশ্বে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি এবং তথ্য প্রযুক্তির কল্পনাতীত প্রসার অভিবাসনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, বিশ্বের ১৬১টি দেশে বাংলাদেশের প্রায় এক কোটিরও মানুষ অভিবাসী হয়েছেন। এর মধ্যে চলতি বছর বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন প্রায় ৭ লাখ কর্মী। দেশে তাদের মর্যাদা কী?
একটি গণমাধ্যম তার জনমত বিভাগে জানতে চেয়েছিল: ‘উন্নয়নের মহাসড়কে অভিবাসীরা সবার আগে’–অভিবাসী দিবসে এমন দাবি করেছে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়। প্রবাসীরা কি সেই মর্যাদা পায়? পাঠকের মতামতে সেখানে সর্বশেষ ফলাফলে হ্যাঁ-এর পক্ষে কোনো ভোট পড়তে দেখা যায়নি। অর্থাৎ ভোটদাতাদের শতভাগই না-এর পক্ষে মত দিয়েছেন।
নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, দেশের উন্নয়নের অন্যতম বড় অংশীদার এই অভিবাসীদের মর্যাদা এবং অধিকার রক্ষায় সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। অভিবাসীদের বিপদে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসের কর্তাব্যক্তিদের চরম অসহযোগিতা, বিমানবন্দরে কাস্টমসসহ নানা সংস্থার হয়রানী, জনশক্তি রপ্তানিতে জড়িত কিছু প্রতিষ্ঠানের অমানবিক আচরণ কিংবা দালালদের নির্মম প্রতারণার খবর আমাদের কাছে পরিচিত। এমনকি বিদেশের মাটিতে নানা দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশিদের মরদেহ আনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার খবরও আমরা গণমাধ্যমে দেখেছি।
তারচেয়েও বেশি পরিচিত খবর আমরা জানি, সংশ্লিষ্ট কর্তাদের এসব ঘটনার দায় অন্যদের ওপর চাপানোর বিষয়। এসব নিয়ে অনেক কথা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে একই ঘটনা আমরা বারংবার ঘটতে দেখছি। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার শক্তিশালী রিজার্ভ গঠনে যে অভিবাসী কর্মীদের সবচেয়ে বড় অবদান তারাই দেশে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমরা চাই যারা জীবনে একটু স্বস্তির জন্য, নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আপনজনদের ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন তাদের অধিকার নিশ্চিতে সরকার আরো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুক।
বিশেষ করে বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোর কথিত ‘জমিদার’ কর্তারা আরো বেশি যোগাযোগ বাড়াক প্রবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে। এতে তাদের কষ্টের প্রবাসী জীবনে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন। জানবেন বিদেশের মাটিতে তাদের বড় আশ্রয়স্থল প্রিয় লাল-সবুজের পতাকার একদল মানবিক প্রতিনিধি আছেন তাদের পাশে। -চ্যানেল আই।
১৯ ডিসেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম