সাঈদ হাসান নাঈম, নিউজিল্যান্ড থেকে: নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল রয়েছে এখন অকল্যান্ডে। রোববার সিডনি থেকে মাশরাফি-মুশফিকরা উড়ে গেছেন অকল্যান্ডে। ওয়াঙ্গারেইতেই অবস্থান করছেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। সেখানে পৌঁছেই অভাবনীয় এক সংবর্ধনা পেলে টিম বাংলাদেশ। সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সংগঠন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব নিউজিল্যান্ড (বানজি) ক্রিকেটারদের জন্য সংবর্ধনার আয়োজন করেছে।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা ভ্রমণ শেষে রোববার স্থানীয় সময় বিকাল ৩.৫৫ মিনিটে গিয়ে অকল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে পৌঁছান বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। সেখানেই মাশরাফিদের অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন ৩০-৪০ জনের মত বাংলাদেশি। ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব নিউজিল্যান্ড-এর নবনির্বাচিত সভাপতি মিন্টু আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান খান।
বিমান থেকে নেমে একে একে সব ক্রিকেটার বাইরে বেরিয়ে আসেন। ওই সময় বাইরে অপেক্ষমাণ বাংলাদেশি সমর্থকরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সব শেষে বের হয়ে আসেন মাশরাফি। বের হয়েই আমার কাছে জানতে চাইলেন, এখানকার তাপমাত্রা এবং সময়ের ব্যবধান সম্পর্কে। জবাব শুনে তাকে খানিকটা বিরক্তই মনে হলো।
সবাই যখন বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসলেন, দীর্ঘ ভ্রমণের কারণে তাদের বিরক্ত মনে হচ্ছিল। খোঁজ নিয়ে জানলাম, মুশফিক, ইমরুল, মিরাজ, তাসকিন, সাব্বির- এদের ঘুম কম হয়েছে। এ কারণেই হয়তো সাকিব-মাহমুদউল্লাহরা খুব একটা সামনে আসতে চাচ্ছিলেন না। এ সময় দলের সঙ্গে বোলিং কোচকে দেখলাম। প্রধান কোচ হাথুরুসিংহে ছিলেন না। তিনি সম্ভবত দলের সঙ্গে পরে যোগ দেবেন।
বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে ক্রিকেটাররা সবাই বিপরীত দিকে ক্যাফেতে যায় রিফ্রেশ হওয়ার জন্য। এরই মধ্যে ক্রিকেটারদের সব ব্যাগ তোলা হয় তাদের জন্য রাখা নির্ধারিত বাসে। এ সময় আমি কথা বললাম মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে। বেশ কৌতূহলী মনে হলো তাকে। আগ্রহভরে জানতে চাইলো এখানকার (অকল্যান্ড) অবস্থা। তখন দেখলাম অন্য ভক্তরা বড় বড় ক্রিকেটারদের নিয়ে ব্যস্ত। মোস্তাফিজ, তাসকিন, রুবেলরা মেতে ছিলেন নিজেদের মধ্যেই গল্প-গুজবে।
বিকেলের নাস্তা শেষে বাসে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা রওনা হলেন ওয়াঙ্গারাইয়ের উদ্দেশে। যেখানে কোবহ্যাম ওভাল স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে একটি ওয়ানডে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা রয়েছে বাংলাদেশ দলের। ২২ ডিসেম্বর ওই প্রস্তুতি ম্যাচটি খেলেই মাশরাফিরা উড়াল দেবেন ক্রাইস্টচার্চের বিমানে।
অকল্যান্ড থেকে বাসে ওয়াঙ্গারেইয়ে যেতে সময় লাগে প্রায় তিন ঘণ্টা। যেতে যেতে সন্ধ্যা। ওয়াঙ্গারায়েই বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব নিউজিল্যান্ডের (বানজি) পক্ষ থেকে ক্রিকেটারদের সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। দীর্ঘ ভ্রমণ ক্লান্তির পর ওয়াঙ্গারাইতে যখন স্থানীয় বাংলাদেশিরা অভ্যর্থনা জানালেন মাশরাফিদের, তখন তাদের মধ্যে দারুণ উৎফুল্লভাব দেখতে পেলাম। নিমেষেই সব ক্লান্তি যেন দূর হয়ে গেল। চেহারায়ও আর বিরক্তির ভাব দেখা গেল না। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দলের প্রায় সব ক্রিকেটার, বানজির নবনির্বাচিত সভাপতি মিন্টু আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান খান।
ওয়াঙ্গারেইয়ে যাওয়ার পর রাতে হোটেলে অবস্থান। এরপর আজ বিকেলেই তারা বের হলেন এখানকার রুয়াকাকা সমুদ্র সৈকতে ঘোরার জন্য। এখানে এখন গ্রীষ্মকাল। তবে একটু ঠান্ডাও আছে। এর মধ্যে রুয়াকাকা সৈকতে দারুণ একটা সময় কাটালেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা।-জাগো নিউজ
১৯ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/আ শি/এএস