তানভীর আহমেদ, লন্ডন : ব্রিটেনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে বাংলাদেশি কমিউনিটির তরুণরা শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও কর্মক্ষেত্রে বর্ণ বৈষম্যের শিকার হচ্ছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের সোশ্যাল মোবিলিটি কমিশন। বুধবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষ করে বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি কমিউনিটির শিক্ষার্থীদের ফলাফল স্থানীয় শ্বেতাঙ্গ ও ব্রিটিশদের চেয়ে ভাল হওয়ার পরও চাকরিতে উচ্চ পদে তাদের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম। বৈষম্যের শিকার হয় অধিকাংশই মুসলিম নারী।
জরিপে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ৭২ শতাংশ ভারতীয়, ৫৩ শতাংশ বাংলাদেশি/ পাকিস্তানি ও ৫৭ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ যেখানে উচ্চতর শিক্ষালাভের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে, সেখানে মাত্র ৩৬ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আগ্রহ প্রকাশ করছে। অন্যদিকে ১৬ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে, তাদের মধ্যে তিন শতাংশ ভারতীয়, আট শতাংশ বাংলাদেশি, সাত শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা লাভের আগেই ঝরে পড়লেও শ্বেতাঙ্গদের ঝরে পড়ার অনুপাত ১০ শতাংশ।
এই গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণ করে সোশ্যাল মোবিলিটি কমিশনের চেয়ার অ্যালান মিলবার্ন বলেন, ‘ব্রিটেনের স্বল্প আয়ের এলাকাগুলোর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল লাভ করেও যখন কর্মক্ষেত্রে সাফল্য পাচ্ছে না, তখন বুঝতে হবে সেই শিক্ষার্থীর মেধার কোনও কমতি নেই বরং সে সুযোগের অভাবেই ভালো করতে পারছে না। অথচ তার চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম সাফল্য পাওয়া শ্বেতাঙ্গরা কর্মক্ষেত্রে সফল। মেধা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশি কমিউনিটির তরুণরা কম মজুরিতে কাজ করছে, অথবা তার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পাচ্ছে না।’
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈষম্যের এই দূরত্ব কমাতে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন কমিশনের চেয়ার মিলবার্ন। সামাজিক এই বৈষম্য রোধ করে তরুণদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে সরকার ও স্কুলগুলোকে যৌথভাবে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। শিক্ষা ব্যবস্থার কোথাও চরম ঘাটতি না থাকলে এই বৈষম্য ফুটে উঠত না বলেও মনে করেন কমিশনের চেয়ার অ্যালান মিলবার্ন। -বাংলা ট্রিবিউন।
২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম