প্রবাস ডেস্ক : ২০১৯ সালের মধ্যে ভারতকে স্বচ্ছ করে তুলতে বদ্ধপরিকর দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর সেই স্বচ্ছ ভারত অভিযানের অন্যতম অংশ হল শৌচালয় নির্মাণ। প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষও যাতে শৌচালয় তৈরি ও তা ব্যবহার করেন, তার জন্য বিভিন্নভাবে প্রচার চালাচ্ছে মোদি সরকার।
আর প্রধানমন্ত্রীর সেই ভাবনাকেই যেন বড়পর্দায় আরও বড় করে ফুটিয়ে তুলেছেন অক্ষয় কুমার। তার নতুন ছবি ‘টয়লেট এক প্রেম কথা’ ছবিতে। ইতিমধ্যেই ছবিটি দেখে ফেলেছেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। ছবির বিষয়বস্তু পছন্দ হলেও সমাজকে বার্তা দেওয়ার পদ্ধতিটি একেবারেই মনে ধরেনি নিবাসিত লেখিকার।
তসলিমা চিরকালই সামাজিক নানা বিষয়ে, অসাম্যে প্রতিবাদের সুর চড়িয়েছেন। বরাবরই রাখঢাক করে কথা বলতে অভ্যস্ত নন। তাই ছবি নিয়ে নিজের ভাল-মন্দ মতামত সরাসরি ফেসবুকেই পোস্ট করেছেন তিনি। তার মতে বলিউডি নাচ-গান আর অ্যাকশন নিয়ে তৈরি ছবির থেকে এই ধরনের সমাজশিক্ষা মূলক ছবি বানানোর সিদ্ধান্ত ঢের ভাল। কিন্তু ছবিতে একটি বিশেষ কারণে শৌচালয় তৈরিতে জোর দেওয়া হয়েছে। কারণটি মহিলাদের সম্মান।
খোলা স্থানে কোনও মহিলা বিবস্ত্র হয়ে শৌচকর্ম করবেন, তা একেবারেই শোভনীয় নয়। ছবিতে এই কথাই ঘুরে ফিরে এসেছে। আর এখানেই আপত্তি তুলেছেন তসলিমা। তার প্রশ্ন, শুধুই কি মহিলার সম্মান বাঁচানোর জন্যই শৌচাগার বানানোর দরকার? পুরুষদের ক্ষেত্রে কি এর প্রয়োজনীয়তা নেই? সুস্থ শরীর ও সমাজকে পরিচ্ছন্ন রাখতেও তো শৌচালয় গড়ে তোলা জরুরি। কিন্তু সেসব দিকগুলি ছবিতে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। বারবার একটিই কারণ তুলে ধরা হয়েছে। যা না-পছন্দ তসলিমার।
ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, “জনসংখ্যার অর্ধেকের চেয়ে বেশি লোক যে দেশে মাঠে জংগলে পেচ্ছাব পায়খানা করে, সে দেশে টয়লেট ব্যবহার করার পক্ষে একখানা চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়েছে! সাধু উদ্যোগ। চলচ্চিত্রে চেষ্টা করা হয়েছে টয়লেট ব্যবহার করার ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করার। তবে ছবিটিতে মূলত যা বলা হয়েছে তা হলো, মেয়েরা পাবলিকের সামনে ন্যাংটো হয়ে পেচ্ছাব পায়খানা করতে বসে, এটা অত্যন্ত লজ্জার ব্যাপার। মেয়েদের লজ্জা নিবারণ করতেই টয়লেটের প্রয়োজন অনুভব করে কিছু মানুষ। কিন্তু টয়লেট যে একই রকম জরুরি পুরুষের জন্য সে কথা বলা হয় না। এটি যে সবার স্বাস্থ্যের জন্য দরকার তাও বলা হয় না। মানুষ তো মাঠে ঘাটে পায়খানা করে পরিবেশকে যে দুষিত করছে, সে ব্যাপারে কিছু শিখলো না। এই শিক্ষাটাই যদি দেওয়া না হয়, তবে এই সিনেমাকে শিক্ষামূলকই বা বলি কী করে!”
এমটিনিউজ/এসএস