প্রবাস ডেস্ক: জান্নাতুল নাঈম এভ্রিলের বাবা গ্রামের গরিব চাষী। ১৬ বছর বয়সে এভ্রিলকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দেন। আমার বাবা ধনী, নামী ডাক্তার, মেডিক্যাল কলেজের প্রফেসর ছিলেন। কেউ বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এলে আমার বাবা বলে দিয়েছেন, আমার মেয়ে পড়াশুনা করবে, বড় হবে। তারপর বিয়ে করতে চাইলে নিজের পছন্দ মতো বিয়ে করবে।
এভ্রিলের লেখাপড়ার সুবিধে ছিল না। স্বামীর ঘর থেকে পালিয়ে গিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে তাকে টিউশনি করতে হয়েছে, কলেজে পড়তে হয়েছে। বারো ক্লাস পর তার আর পড়া হয়নি।
আমার বাবা-মা আমাকে মুখে তুলে খাইয়ে, পরম আদর যত্নে রেখেছেন। উৎসাহ দিয়েছেন ডাক্তারি পড়তে। আমি ডাক্তারি পড়েছি। ডাক্তার হয়েছি।
এভ্রিল ছিল অসহায়। খাওয়া জোটেনি, টাকা জোটেনি। সংগ্রাম করেছে বছরের পর বছর। নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছে। শেষ পর্যন্ত একটি বাইক কোম্পানির ব্রান্ড এম্বাসেডার হয়েছে। ওর আরও বড় হওয়ার স্বপ্ন।
আমার অভাব ছিল না। ডাক্তারি করার পাশাপাশি বই লিখেছি, বইগুলো প্রচুর লোকপ্রিয়তা পেয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে বই। নানা পুরস্কার এবং সম্মান পেয়েছি বিভিন্ন দেশ থেকে।
এভ্রিল মিস বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় নিজের সম্পর্কে মিথ্যে বলেছে। আমি সাত খণ্ড আত্মজীবনী লিখেছি। কোথাও নিজের সম্পর্কে এক বর্ণ মিথ্যে লিখিনি।
এভ্রিল আর আমার মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। কিন্তু দেশের মানুষ যখন আমাদের গালি দেয়, গালিগুলো সব এক। কোনও মেয়েই যেন না ভাবে তারা আলাদা। সবাইকে প্রকাশ্যে এবং আড়ালে একইভাবে ডাকে এবং ডাকবে আমাদের মাথার ওপর বসে থাকা সম্মানিত পুরুষজাতি।
(লেখকের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
এমটিনিউজ২৪ডটকম/আ শি/এএস