প্রবাস ডেস্ক: দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে উত্তাল ভূমধ্যসাগরে যুদ্ধজাহাজের কঠিন জীবনকেই আপন করে নিয়েছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা। প্রাত্যহিক জীবনে বাঙালিয়ানা আর আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সম্মিলন ঘটিয়ে যুদ্ধজাহাজেই যেন তারা গড়েছেন শান্তির নীড়। ছোটখাটো দুঃখবেদনা আর অবসাদকে তুচ্ছ করে দেশমাতৃকার টানে দৃঢ় মনোবলে উজ্জীবিত নৌসেনারা।
ভূমধ্যসাগরের অথৈ জলে ভাসা যুদ্ধ জাহাজ। এখান থেকে যেদিকে তাকানো যায়, জল ছাড়া চোখে পড়ে না কিছুই। মাঝে মাঝেই অশান্ত হয়ে ওঠে জলরাশি, সৃষ্টি হয় ভয়ংকর পরিস্থিতির।
লেবাননের শান্তি রক্ষায় নৌ সেনাদের এই বিস্তীর্ণ সাগরেই কাটাতে হয় দীর্ঘ সময়। এ সময়ে নাবিকদের মনোবল ধরে রাখাই কঠিন ব্যাপার।
ক্যাপ্টেন এএসএম আফজালুল হক টিটো বলেন, এত দূরে আমাদের অবস্থান। আমাদের মনোবল অক্ষুণ্ণ রাখাটাই অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এর জন্যে আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে থাকি।
পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন জাহাজ জীবনকে ছন্দময় করায় প্রয়াসের কোনো কমতি নেই এখানে। গভীর সমুদ্রে মোবাইল ফোনে প্রিয়জনদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারও করতে পারেন নাবিকরা।
তারা বলেন, পরিবারের কথা অবশ্যই মনে পরে। যেহেতু এখানে আসলে ইন্টারনেটের সুবিধা পাওয়া যায়। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারি।
জাহাজেই রয়েছে সাহিত্য চর্চার সুযোগ। লাইব্রেরির পাশাপাশি রয়েছে বাংলা গল্প-কবিতায় ভরা আস্ত দেয়াল পত্রিকাও।
নাবিকরা বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের সাহিত্য বই পুস্তক পড়ে থাকি। অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং একটা জীবন। এটা নিঃসন্দেহে গর্বের।
স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সাগরেই নাবিকরা দেখতে পারেন দেশীয় টেলিভিশন। খাবার-দাবারেও রয়েছে বাঙালিয়ানার ছাপ। রয়েছে তিন বেলা সুস্বাদু দেশীয় রান্নার ব্যবস্থা। নাবিকদের চিত্তবিনোদন ও আনন্দ ভ্রমণের সুযোগও দেয়া হয় মাঝে মাঝেই।
ক্যাপ্টেন এএসএম আফজালুল হক টিটো বলেন মাসে প্রায় ৭০ ভাগ সময় ভূমধ্যসাগরের উত্তাল সমুদ্রে অবস্থান করি। অবশিষ্ট সময় আমরা বিভিন্ন প্রয়োজন মেটায়।
এমন পরিবেশে জাহাজেই যেনো এক টুকরো বাংলাদেশকে খুঁজে পায় নৌ সেনারা। এর মাধ্যমেই শত্রুপক্ষকে রুখে দেয়ার শক্তি সঞ্চয় করেন তারা।
দেশ থেকে বহুদূরে দেশের জন্যেই কাজ করছেন নৌবাহিনীর সদস্যরা। এই বাহিনীর সদস্যরা জানালেন দেশের প্রতি ভালোবাসায় এই কঠিন কাজে তাদের উদ্বুদ্ধ করছে।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস