যুক্তরাষ্ট্রে ২০ বছর ধরে বসবাস করেন বাংলাদেশী সেলিনা সিকান্দার। সেখানে সন্তানদের নিয়ে সুখের সংসার ছিল তার। কিন্তু সুখ তার কপালে সইলো না। ২০ বছরের সংসার ফেলে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেয়া হয়। এ রাতটি ছিল তার জন্য তার সন্তানদের জন্য এক বিষাদময় সময়।
অনলাইন নিউজার্সি জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, নিউ জার্সির রানেমেডে বসবাস করতেন সেলিনা সিকান্দার। তিন সন্তানকে ফেলে তাকে দেশে ফিরে আসতে হচ্ছে। বিদায়ের কয়েকটি ঘন্টা তার কাছে, তার সন্তানদের কাছে ছিল রোজ কিয়ামতের মতো। মনে হচ্ছিল পৃথিবীর সবটুকু কষ্ট তাদেরকে গ্রাস করেছে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আইন, তা কোনো মানবতাকে স্পর্শ করে নি। সেলিনা সিকান্দারকে উঠিয়ে দেয়া হয়েছে বিমানে। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে দাঁড়িয়ে তখন তিন সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে সাজেদা সিকান্দার আর্ত চিৎকারে আকাশ বাতাস ভারি করছিলেন। সাজেদা হাইস্কুল জুনিয়র। এ কষ্ট তিনি সহ্য করতে পারছেন না। বাংলাদেশী এ পরিবারটি যেন তছনছ হয়ে গেছে এমন যন্ত্রণায়। সেলিনা সিকান্দারের অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর কথা।
ওই মুখপাত্র বলেছেন, সেলিনাকে অভিবাসন বিষয়ক বিচারক যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তাকে বাংলাদেশে ফেরত যেতে হবে। ২০১০ সালের আদালতের সেই নির্দেশ নিয়ে আইনি লড়াই চলছিল এতদিন। সেলিনা আশ্রয় চেয়ে বার বার আবেদন করেছেন।
সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন আদালত। উল্লেখ্য, সেলিনা সিকান্দারের পিতার নাম শামসুদ্দিন সিকান্দার। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন ১৯৯৩ সালে। সেখানে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন। কিন্তু ১৯৯৮ সালে অভিবাসন বিষয়ক বিচারক প্রথম সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। ২০১০ সালে একই রায় আসে। ফলে দেশেই উড়ে আসছেন সেলিনা। রেখে আসছেন তার সন্তানদের। এ এক করুণ ইতিহাস। করুণ কাহিনী।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি