প্রবাস ডেস্ক: যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের হাত ধরে সামাজিক পরিবর্তনের দিকে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে রক্ষণশীল দেশ সৌদি আরব। কয়েক দশকের নিষেধাজ্ঞার পর রোববার থেকে গাড়ির চালকের আসনে বসেছেন সৌদি নারীরা।
তবে শুধু গাড়ি চালানো নয়, বোরকা খুললে সৌদিতে নারীদের প্রকৃত স্বাধীনতা মিলবে বলে মনে করেন ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
রোববার রাত ৩টার সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন- ‘সৌদি মেয়েরা গতকাল থেকে বৈধভাবে গাড়ি চালাচ্ছে। রিয়াদ ও জেদ্দায় উৎসব শুরু হয়ে গেছে রীতিমতো।
যারা গাড়ি চালাচ্ছে, আমি ঠিক বুঝে পাচ্ছি না, তারা শিখল কোথায় গাড়ি চালানো! গাড়ি চালানো শিখতে হলে তো গাড়ি চালাতে হয়। হয়তো কোনো সভ্য দেশ থেকে শিখে এসেছে।
টাকাপয়সা আছে, গাড়ি কিনবে, গাড়ি চালাবে; কিন্তু গাড়ি চালালেই কি নারী স্বাধীনতা অর্জিত হবে?
গাড়ি চালিয়ে যেখানে-যেখানে যেতে বলবে স্বামী, সেখানে-সেখানেই তো যেতে হবে। স্কুল থেকে বাচ্চাকে নিয়ে এসো, আমাকে অফিসে নিয়ে যাও, বাজার করতে যাও। আগে ড্রাইভার এ কাজ করত, এখন ঘরের বউ করবে। ঘরের বউ বিনে পয়সার ড্রাইভার, যাকে মাসে-মাসে বেতন দিতে হবে না।
স্বাধীনতা পেতে হলে গাড়ি চালানোরও আগে প্রথম যে কাজটি মেয়েদের করা উচিত, সেটি হল বোরকা খুলে ফেলা।
বোরকা যতক্ষণ শরীরে থাকবে, ততক্ষণ একটি মেয়ে বন্দি। পুরুষতন্ত্রের কারাগারে বন্দি। বোরকা পরে গাড়ি কেন, উড়োজাহাজ চালালেও উড়োজাহাজই বা বলি কেন, মহাকাশযান চালালেও মেয়েরা বন্দি।
বোরকা কোনো কাপড় নয়, বোরকা হল- কালো কারাগার। এই কারাগারের মালিক পুরুষ। নিজের কর্তৃত্ব নারী যতদিন নিজে না নিতে পারে, ততদিন গাড়ির যে চাবিটি তার হাতে আছে, সেটি নকল চাবি- আসল নয়। আসল চাবি পুরুষের হাতে।’