প্রবাস ডেস্ক: ‘ভাই আমাকে বাঁচান। আমাকে নিয়ে যান। না হলে আমি মরে যাবো। একরাতে ছেলে আসে, আর এক রাতে বাপ আসে। আমি আর থাকতে পারছি না। আমার ঠ্যাং বেয়ে রক্ত পড়ছে। আমাকে বাঁচান ভাই, আমাকে বাঁচান।’ ঠিক এভাবেই মোবাইল ফোনে নিজের দুর্দশা ও অত্যাচারের কথা এক কর্মকর্তাকে বলছিলেন সৌদিতে নির্যাতনের স্বীকার এক নারী।
ঘটনা গতকালের, ব্রাকের মাইগ্রেশন প্রোগামের মিডিয়া শাখার এক কর্মকর্তার সঙ্গে মোবাইলে কথপোকথনে ওই নারী এসব কথা বলেন।
মোবাইলে ওই নারী আরো বলেন, ‘আপনি আমার আপন ভাই, আমাকে বাঁচান, রাত্রি… । এক রাত্রি ছেলে আসে, আরেক রাত্রি বাবা আসে। আমার জানডা বোরোয় যাচ্ছে। ‘ওই জায়গায়’ হালিস বেরোয় গেছে। জানডা বেরোয় যাচ্ছে। থাকতি পারতিছি নে ভাই। আমারে একটু বাঁচান ভাই। আমারে একটু নিয়ে যান ভাই। (কাঁদতে কাঁদতে) ওরে ভাই, আমি মরে গিলাম ভাই।’
মোবাইলে ওই নারী জানান, চার মাস আগে সৌদিতে গেছেন তিনি, সেখানের এক বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ শুরু করার মাসেক পর থেকেই তার উপর নেমে আসে নির্যাতন।
ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে পুলিশের কাছে যাওয়ার সুযোগ নেই বলেও জানিয়েছেন ওই নারী। মোবাইলে নির্যাতিতা মহিলা বলেন, ‘ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা কলি নেই না। খালি একটা বড়ি দেয়। ডাক্তারের কাছে নিলি আমি দেহাবানে, কয়ে দিবানে, তাইতি নেয় না।’
কথা বলার পুরো সময় ভীসন্ত্রস্ত ছিলেন ওই নারী। তিনি এক পর্যায়ে কান্না করে বলেন, ‘আমাকে বাঁচান ভাই। না হলি, আমি বাংলাদেশে যাতি পারবো নানে। আমাকে নিয়ে যান। আমি বাংলাদেশে কাজ করে খাবানে। একেনে কাজ করতি পারবো নানে। আমার ঠ্যাং বেয়ে বেয়ে রক্ত পড়ছে।’
জানাযায়, নির্যাতিতা ওই নারীর বাড়ি খুলনায়। গত ৩রা এপ্রিল আল মিনার ওভারসিজ (আরএল নং- ১২৩৫) নামে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরব যান। তার এ দুর্দশার কথা জানিয়ে পরিবারের সদস্যরা ব্রাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সংস্থাটি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে তাকে ফেরত আনতে গত ২৫ জুলাই প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে আবেদন করেন।