জমির হোসেন, ইতালি প্রতিনিধি : জীবিকার তাগিদে দেশান্তর প্রায় ১ কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি। পরিবারের জন্য একটু সুখ আর মুখভরা হাসি ফোটাতে নিজের সুখকে জলাঞ্জলি দিয়ে সুখ কিনতে বিদেশে পাড়ি জমান প্রবাসীরা। কেউ সুখী হয় কেউ আবার দুঃখে ভরা জীবন পার করে। কেউবা সুখে থাকার অভিনয় করে।
চাইলেই সুখ মিলবে এমনটা কিন্তু নয়। তবু জীবনের সঙ্গে অবিরত যুদ্ধ চালায় ভাগ্য উন্নয়নের জন্য রেমিটেন্স যোদ্ধারা। লক্ষ্য থাকে সবাই মিলেমিশে সুখে থাকবে। দিন-রাত পরিশ্রম করে মাস শেষে যা বেতন পায় সবই দেশে পাঠিয়ে দেয়। নিজের কথা নিজের ভবিষ্যতের কথা একবারও ভাবার সময় হয় না।
বছরের পর বছর হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করে প্রবাসীরা। দেশের প্রতি রয়েছে অসীম মমতা আর বুকভরা ভালোবাসা। সেজন্যই দেশে টাকা পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা গতিশীল রাখে। একটাই দুঃখ জীবন-যৌবন বিলিয়ে দেয় প্রবাসে অবশেষ দেখা যায় শূন্য হাত। এতদিন যে পরিমাণ টাকা পাঠিয়েছে নিজের জন্য অবশিষ্ট কিছুই রাখা হয়নি। এমন অসংখ্য প্রবাসী আজ দুঃখ দুর্দশার জীবন অতিবাহিত করছে। কিছুই যেন করার নেই।
ইচ্ছে করলেই এখন আর আগের যৌবনে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। পরিবারের চাহিদা মেটাতে গিয়ে হরহামেশা মানসিক বিপর্যয় নিয়ে থাকতে হয়। অতিরিক্ত মানসিক চিন্তার ফলে অকালে প্রাণ ঝরে যাওয়ার অসংখ্য ঘটনা আছে। রোম বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) ফানুল হকের তথ্য অনুসারে ২০১৭ অর্থবছরে ২০১৮ মার্চ পর্যন্ত ৮৩ জন ইতালি প্রবাসী মারা গেছেন। জীবিকার তাগিদে বিদেশে এসে সবাই এখন না ফেরার বাসিন্দা।
এর মধ্যে ২০১৭ সালে মারা যান ৭২ এবং চলতি বছরের মার্চের হিসেব মোতাবেক ১২ জনের বেশি। বিভিন্ন সমস্যায় তাদের মৃত্যু হয়। প্রবাসে মরেও শান্তি নেই। মরদেহ নিয়ে চলে টানা-হেঁচড়া। সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা না থাকলে হিমাগারে মরদেহ পড়ে থাকতে হয় অনেক দীর্ঘদিন। আর যদি আত্মীয়-স্বজন না থাকে তবে তো মরার পরেও দুর্ভোগের শেষ নেই।
মৃত্যুর পর তদারকি করার কেউ থাকলে মাঝে মধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করে। গত দু'বছরে ৮৩ জনের মরদেহের মধ্যে দেশে প্রেরণ করতে দূতাবাস ১৭ জনকে আর্থিকভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। এর মধ্যে ১২ জনকে ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে ৫ জন প্রবাসীকে সাহায্য দেন।
দেখা যায়, বেশির ভাগ মরদেহ নিজ খরচে দেশে যায়। তবে দেশে মরদেহ পাঠাতেও দুর্ভোগের অন্ত নেই। কারণ বাংলাদেশের নিজস্ব কোনো বিমান নেই ইতালিতে। অন্য দেশের বিমানে মরদেহ নিয়ে ট্রানজিট ঝামেলায় পড়তে হয়। ফলে আট ঘণ্টার বদলে প্রায় পনের ঘণ্টা লেগে যায় দেশে মরদেহ পৌঁছাতে। লোকসানের অজুহাতে প্রায় তিন বছর ধরে রোম-ঢাকা রোম ফ্লাইটি সরকার বন্ধ করে দেয়।
এরপর থেকে ইতালি প্রবাসীদের ক্রমান্বয়ে দুর্ভোগ বাড়তে থাকে। গত কয়েক বছর বিমান বাংলাদেশ পুনরায় চালু হওয়ার আশার আলো দেখলেও সেই আলো দেখা এখনও শেষ হয়নি ইতালি প্রবাসীদের। তবে ২০১৮ ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী আইএফডি (ইফাদ) এর ৪১তম গভর্নিং কাউন্সিলে যোগ দিতে এসে ইতালি শাখা আওয়ামী লীগের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন আপাতত রোম-ঢাকা, রোম-রুটে ফ্লাইট চালুর সম্ভাবনা নেই। এরপরেও প্রবাসীরা দুর্ভোগ থেকে এখন আশার আলো দেখছেন। যদি প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করেন তাহলে হয়তো সম্ভব।
এরপর দেশে থেকে পরিবারের লোকজন মনে করে তারা কতই না সুখে আছে। সুখের সীমা নেই। কিন্তু সে-ই জানে কতটা সুখে আছে। দেশে পরিবার-পরিজন তাকিয়ে থাকে বিদেশ থেকে কবে টাকা পাঠাবে। আর একের পর এক আবেদন আসতেই থাকে। আজ এটা লাগবে কাল ওটা লাগবে। এটা নেই, ওটা নেই। নেই আর নেই বার মাস এ রকম শুনতে শুনতে এক প্রকার হতাশায় পড়ে প্রবাসীরা।
এ হতাশা থেকেই হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে না ফেরার দেশে চলে যান অনেক প্রবাসী। আয়ের চেয়ে চাহিদা বেশি থাকায় হতাশাগ্রস্তের ফলে অকালে ঝরে পড়ে অসংখ্য জীবন। যেসব পরিবার প্রবাসীর আয়ের ওপর সংসার চলে তাদের আর দুঃখের সীমা থাকে না। মৃত্যুর পরে অনেক পরিবারের শুভ বুদ্ধি উদয় হয়। কেন তাকে বার বার টাকার জন্য চাঁপ সৃষ্টি করা হলো। প্রবাসে একটি প্রাণ ঝরে গেলে তাদের কথা মতো ডিম পাড়া একটি মুরগি কমে যায়। তাতে দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা প্রভাব পড়ে কি-না বছরের হিসেব টানতে গেলে তা বোঝা যায়।
প্রবাস কোনো আরাম-আয়েশের জায়গা নয়। মন চাইলে বসে বসে খাওয়া যায়। এখানে প্রতিটি সেকেন্ড, মিনিটের হিসেব কড়ায়-গণ্ডায় কষতে হয়। তা না হলে মাস শেষে টাকার হিসেব মেলানো কষ্ট হয়ে যায়। নিয়মের বাহিরে একদম চলাফেরা করা যায় না। সময়ের রেষ ধরে এগিয়ে যেতে হয় সব বাঁধা অতিক্রম করে।
টগবগে যুবক হয়ে পাড়ি জমায় বিদেশ। এরপর শেষ ঠিকানা সাড়ে তিন হাত মাটির নিচে। এর মাঝে জীবনের অনেক চাওয়া-পাওয়া রেখেই চলে যেতে হয় অচেনা-অজানা দেশে। থাকতে হবে সেখানে অনন্তকাল। এই চিরন্তন কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হয়ে প্রবাস জীবন পার করতে হয় এক একজন রেমিটেন্স যোদ্ধাকে। ভাগ্যের চাকা সচল রাখতে দিন-রাত পরিশ্রম করতে হচ্ছে প্রতিটি প্রবাসীকে। ভাগ্যের কাছে কেউ আবার পরাজয় বরণ করে জীবন যাত্রার হিসেব উপযুক্তভাবে কষতেও পারে না। আর এই ভুলের মাশুল দিতে হয় যতদিন দেহে থাকে প্রাণ।
‘দেশ হতে দেশান্তর’
সুস্থ স্বাভাবিক বুকভরা আসা নিয়ে দেশ থেকে বিদেশ আসেন বহু বাঙালি। কিন্তু সবাইকে সুখে রাখার দায়িত্ব একা নিতে গিয়ে মানসিক চাঁপে জীবন তেজপাতা হয়ে যায় এক একজন প্রবাসীর। দেশ থেকে বেশ হাসি খুশি বিদেশ যাবে, টাকা উপার্জন করবে। স্বয়ং সম্পূর্ণ হবে সংসারের দুঃখ ঘোঁচানোর প্রত্যাশা নিয়ে হাজার হাজার কি.মি. দূরে এসে কর্মময় জীবনের অধ্যায় শুরু করে।
তারপর বিদেশের মাটিতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই জীবন সংগ্রাম শুরু হয়ে যায়। সূর্যাস্ত এবং উদয়ের মাঝে ভাগ্যের চাকা প্রতিনিয়ত ঘোরপাক খায়। জীবনের চাকা সচল রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করে প্রতিটি প্রবাসী। প্রবাস এমন একটা জায়গা একদিন অসুস্থ হলে দেখার কেউ থাকে না। মন থাকা সত্ত্বেও সময়ের অভাবে কেউ কারো জন্য কিছু করতে পারে না। জীবন চলতে থাকে বিরতিহীন।
‘প্রবাসের শ্রমের বিভাজন’
এশিয়াতে যে সমস্ত শ্রমিকেরা কাজ করেন তারা প্রায় বন্দিশালায় থাকেন। স্বাধীনতা বলতে কিছু থাকে না। কর্মে পিষ্ট হয় জীবন। বিনোদন যেন তাদের কাছে একটি স্বপ্ন। তবুও নিজের সুখকে বিসর্জন দিয়ে অন্যদের সুখী করতে সব সময় আন্তরিক। সুখে না থেকে সারা বছর সুখের অভিনয় করে যায়। বোঝার কোনো উপায় নেই। তবু চলছে প্রবাস জীবন। এত দুঃখে কষ্টে জীবন-যাপন করে মৃত্যুর পর অর্থের অভাবে মরদেহ পড়ে থাকে হিমাগারে। কোন কোন সময় আত্মীয়-পরিজন না থাকলে মরদেহ বেওয়ারিশ হয়ে পড়ে থাকে।
এত কিছুর পরেও বিভিন্ন সময় পরিবার থেকে অপবাদ পেতে হয় এক একজন প্রবাসীকে যা তারা কল্পনাও করে না। এতে করে বাড়ে মৃত্যুর ঝুঁকি। প্রবাসে কর্মের মাঝে সুখ দুঃখ। কর্মের এত ব্যস্ততা থাকে আত্ম-তৃপ্তি মেলে না। চোখের পাতা দু’টি এক হতে না হতেই কাজে যাওয়ার ঘণ্টা বাজতে থাকে। শান্তি নেই ঘুমের দেশে। সুস্থ অসুস্থ বোঝে না কর্ম।
মধ্যপ্রাচ্যে বেশির ভাগ কোম্পানিতে ভোর ৪টা বা ৫টায় কাজে যেতে হয়। সেই তুলনায় ইউরোপে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা ভালোই আছেন। নিজের দেশের মত স্বাধীন চলাফেরা করতে পারছেন। ইচ্ছে করলেই ব্যবসা করতে পারছেন। যখন ইচ্ছে দেশে যেতে পারেন। যা মধ্যপ্রাচ্যে স্বপ্ন। নিজের পাসপোর্টটি পর্যন্ত কোম্পানির কাছে জমা রাখতে হয়। ব্যবসা তো দূরের কথা। এরপরেও কষ্টকে মেনে নিয়ে দেশের রেমিটেন্সের চাকা সচল রাখতে কাজ করে যাচ্ছে।
বিনিময়ে সরকারের কাছ থেকে কি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। এ রকম প্রশ্ন থেকেই যায় সরকারের কাছে। সব সময় অভিযোগ পাওয়া যায় বর্হিবিশ্ব ঘুরে বাংলাদেশে বিমান পৌঁছানো মাত্রই হয়রানি শুরু হয়ে যায়। সারা বছর পরিশ্রম করে দেশে একটি স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে এসে বিমানবন্দরে বিভিন্ন অফিসারের অযৌক্তিক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। অথচ ইতোমধ্যে অন্য দেশের ইমিগ্রেশন পার করতে সমস্যা পোহাতে হয়নি। কিন্তু নিজ দেশের বিমানবন্দরে আসার পর অনেকই আল্লাহর নাম আগের তুলনায় বেশি যপতে শুরু করে। এমন হওয়াটা কতটা যৌক্তিক?
প্রবাসীদের পক্ষে বিশেষ করে যেসব প্রবাসী মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করে হয়রানির স্বীকার হয়েছেন তাদের হয়ে সম্প্রতি রাজধানীর প্রবাসীকল্যাণ ভবনের ব্রিফিং সেন্টারে দফতর বা সংস্থার সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক কর্ম-সম্পাদন চুক্তি (২০১৮-১৯) ও নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ক সচেতনতামূলক তথ্যচিত্রের একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেছেন, অভিবাসন খাতে অসাধু দালালদের চিহ্নিত করে তাদের প্রতিহত করুন। অভিবাসী কর্মীদেরকে প্রতারিত বা হয়রানি করলে সে যেই হোক তাকে শাস্তি পেতে হবে। ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমান আমাদের কর্মীরা। কিন্তু অদক্ষতা, ভাষাজ্ঞান না থাকা এবং চুক্তিপত্র না বোঝা দালালের খপ্পরসহ বিভিন্ন কারণে অনেকেই প্রতারণার শিকার হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত দালালদের কোনো ছাড় নেই। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রীর এ কথা ইতিবাচক তা অস্বীকার করার কোন অবকাশ নেই।
কিন্তু আদেশ যখন কোন গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে যায় এটা যদি কার্যকরী না হয় তখন সেই আদেশ প্রবাসীদের কোন উপকারে আসবে? এ রকম একবার নয় একাধিকবার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে প্রবাসীদের হয়রানি করেছেন কিছু অসাধু অফিসার। হয়তো ভুক্তভোগীর হয়রানির আর্তনাদ মন্ত্রণালয়ের দরজা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি ফলে বিচার পায় না ভুক্তভোগীরা। প্রবাসীদের জন্য দেশের মন্ত্রীদের অনেক সময় মায়াকান্না করতে দেখা যায়। প্রবাসীদের এই সুযোগ ওই সুযোগ আরও কত সুবিধা দেয়ার অনেক প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু বাস্তবে এর প্রতিফলন হয়েছে আমার প্রবাস জীবনে দেখিনি।
প্রবাসীদের দুঃখ-দুর্দশা কিছুটা উপলব্ধি করতে পেরেছেন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। তিনি একটি সম্মেলনে বলেন আজকে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দাঁড়িয়ে আছে সেটির মূল ভিত্তি কে? এর মূল ভিত্তি হলো আমাদের দেশ থেকে প্রায় ১ কোটি মানুষ শ্রমিক হয়ে বিভিন্ন দেশে চলে গেছে। এই দেশ তাদের/প্রবাসীদের কোন কিছুই দেয়নি। এই দেশের কাছে তাদের কোন ঋণ নেই। কিন্তু ওই দেশে গিয়ে তারা পরিবারের জন্য সন্তানের জন্য টাকা পাঠায়। আজকে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভের বড় একটা অংশ হয়েছে সেই টাকা দিয়ে।
বাংলাদেশ যে স্টেবল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেটা সেই টাকার উপর ভর করে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের দেশ থেকে শিক্ষিত একটা অংশ প্রফেশনালরা বিদেশ গেছেন। তারা দেশের জন্য কি পাঠায়। কিছুই পাঠায় না দেয়ও না। কিন্তু তারা বড় বেতনে চাকরি করেন। এ দেশের কাছে তাদের ঋণের কোন শেষ নেই। এদেশে থেকে তারা অনেক কিছু নিয়েছে তারা। গরিবের টাকায় লেখাপড়া শিখেছে বড় ডিগ্রি নিয়েছে। এরপর একদিন দেশকে টা টা দিয়ে চলে যায়।
ওই দেশে গিয়ে তারা অনেক টাকা আয় করে তবে দেশে টাকা পাঠায় না। বরং তাদের বাবা-মারা গেলে বাড়ি বিক্রি করতে বাংলাদেশে আসে শেষ সম্বলটুকু নিয়ে যাওয়ার জন্য। প্রবাসীদের দুঃখকে উপলব্ধি না করে তাদের জন্য সরকারের করণীয় অনেক কিছুই আছে। কিন্তু সরকার প্রবাসীদের কাছ থেকে ধারাবাহিকভাবে নিয়ে যাচ্ছে। বিনিময়ে কিছুই দিচ্ছে না। সরকার থেকে এমন কি পেয়েছে প্রবাসীরা।
বরং প্রবাসীরা বিদেশ গিয়ে কর্মস্থলে বিপদে পড়লে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে কর্মরত অফিসারা অসদাচরণ করেন। এ রকম অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। অথচ প্রবাসীদের হাড়ভাঙা শ্রমের টাকায় তাদের বেতন আসে। সরকারের উচিত বিমানবন্দরে এক একজন প্রবাসী ভাইকে ভিআইপি মর্যাদা দেয়া। প্রবাসীদের কাছে দেশ ঋণী হয়ে আছে। প্রবাসীরা দেশের কাছে নয়। এক একজন প্রবাসীর আয়ের টাকায় এক পরিবারের চার-পাচঁজন নির্ভর করে। যদি প্রবাসীরা শ্রমিক হয়ে বিদেশ পাড়ি না দিতেন তবে প্রায় ১ কোটি মানুষের কর্মস্থলের ব্যবস্থা করে দিতে হতো সরকারকে। যা অসম্ভব সরকারের পক্ষে। তাই মানবিক কারণেও প্রবাসীদের নানাভাবে হয়রানি বন্ধের জন্য সরকারের নিশ্চয়তা প্রদান করা উচিত।
অনেক প্রবাসী আছে দেশে বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক। শুধুমাত্র হয়রানি জীবনের অনিশ্চয়তায় ভোগার কারণে বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে না। তাই প্রবাসীদের জন্য সরকার সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করলে দেশে বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়া সময়ের ব্যাপার। ফলে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।
লেখক: ইতালি প্রবাসী সংবাদকর্মী
সূত্র: জাগো নিউজ