আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ আল নূর মসজিদে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে যান ওমর জাহিদ মাসুম। ওমর জাহিদ মাসুম কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান দয়ারের কনিষ্ঠ পুত্র। ২০১৫ সালে স্টুডেন্ট ভিসায় নিউজিল্যান্ড যান তিনি। তার দু’বছর পর তার স্ত্রীকে নিয়ে যান।
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে বন্ধুকধারীর বর্বরোচিত হামলায় মৃতের সংখ্যা ৪৯ এ দাঁড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা হয়তো আরও কম হতো। কিন্তু আহতদের ওপর বন্দুকধারীর দ্বিতীয় দফা গুলিতে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে।
গণমাধ্যম জানায়, আহতদের অনেকে গুলি খেয়ে পানি চেয়ে বাঁচার আকুতি করছিলেন, কিন্তু তাদের পানির বদলে বুলেট মিলেছে, বাঁচতে দেয়নি তাদের, তবে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান ওমর জাহিদ মাসুম নামে এক বাংলাদেশি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার জুমার নামাজে একটু আগে ভাগেই মসজিদে যান মাসুম। তিনি প্রথম কাতারের ইমাম সাহেবের পিছনে মিম্বরের কাছে ছিলেন। পেছন থেকে গুলির শব্দে মুসল্লিরা যখন ছুটাছুটি করছিল মাসুম তখন নুয়ে পড়েন। এ অবস্থায় একটি গুলি তার পিঠের ওপরে লাগলে তিনি ফ্লোরে লুটিয়ে পড়েন।
পেছন থেকে লোকজন ছুটাছুটি করে মিম্বরের দিকে এসে একের পর এক তার ওপর পরে। পুলিশ লাশ সরাতে গিয়ে ওমর জাহিদকে জীবিত পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে তার স্ত্রী হাসপাতালে ছুটে যান। গুলিটি তার পিঠের ওপরে লেগে বেরিয়ে যাওয়ায় তিনি আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে যান।
ওমর জাহিদ মাসুমের ভগ্নিপতি সানা উল্লাহ জানান, সন্ত্রাসী হামলার খবর পেয়ে তাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করি। ঘটনার বেশ কয়েক ঘণ্টা পর মাসুমের স্ত্রী টিনা আক্তার গুলিবিদ্ধ হওয়ার সংবাদ দেয়। হাসপাতাল থেকে রাতেই পুলিশ তাকে বাসায় পৌঁছে দেয়। এখন অনেকটা স্বাভাবিক। তবে বাসা থেকে বের না হতে এবং সাবধানে চলাচলের জন্য জানিয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে বন্দুকধারীদের এলোপাতারি গুলিতে ৪৯ জন মারা যান। আহত হয়েছেন অন্তত ৪৮জন। এই সন্ত্রাসী হামলার সময় আল নূর মসজিদে নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা। তারা মসজিদে ঢোকার কিছুক্ষণ আগে এক পথচারীর কাছ থেকে খবর পেয়ে ফিরে আসেন। ফলে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান ক্রিকেটাররা। এ ঘটনায় বাংলাদেশের তিনজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।