মো.শরীফ উদ্দিন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে: দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রতিনিয়ত বাংলাদেশিদের যে সমস্যাগুলো পোহাতে হয় তা হলো: ছিনতাই, দোকান ডাকাতি, কৃষ্ণাঙ্গের হাতে খুন ইত্যাদি।
এ সব সমস্যা নিয়ে আমি আপনাদের সামনে কিছু কথা তুলে ধরতে চাই।
দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫৪জন লোক মারা যায়। তার মধ্যে বিভিন্ন দেশের নাগরিকসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি। এ সব অপ্রত্যাশিত এবং নির্মম খুন-হত্যা অত্যন্ত দুঃখের ও হতাশার।
এ বিষয় নিয়ে সবাইকে আরো গভীরভাবে চিন্তা করে সচেতন হওয়া দরকার, যে সব প্রবাসী বাংলাদেশিরা দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাস করছেন দয়া করে আপনারা যে যেই প্রান্তেই থাকুন না কেন অনুগ্রহপূর্বক আফ্রিকার সরকারী নিয়ম কানুন আদেশ-নিষেধ মেনে চলুন। বিপদে পুলিশের সহযোগিতা গ্রহণ করুন, ভুয়া পুলিশের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
প্রত্যেক এলাকায় প্রবাসীরা ঐক্যবদ্ব থেকে সকল সমস্যা মোকাবেলা করুন, অন্যের বিপদে এগিয়ে আসুন এবং স্থানীয় গরীবদেরকে কিছু সাহায্য সহযোগিতার মাধ্যমে সকল জনগণকে ভালবাসতে শিখুন। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকা অনেক সুন্দর এর পাশাপাশি এটি একটি ভয়ানক অপমৃত্যুর দেশ। যেখানে নিজের ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে এসে মারা গিয়াছে অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশি।
অনেকই আমরা এ দেশের কৃষ্ণাঙ্গদের মানুষই মনে করি না। অথচ তাদের দেশে ব্যবসা বানিজ্য করে আমরা নিজ দেশের ভাগ্য উন্নয়ন করছি, একটু ভাবুন আমাদের দেশে এভাবে কাউকে এমন সুযোগ করে আমরা দিতাম কিনা?
তাই সবাইকে আরো সচেতন হতে অনুরোধ করবো, সর্ব প্রথম সকল অপকর্ম থেকে নিজেকে বিরত রাখুন, ভেজাল পণ্য, মেয়াদ উত্তির্ণ মালসহ, অবৈধ (চোরাই) মাল ক্রয় করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকার আরো একটি খারাপ নিয়ম আছে একজনের অপকর্মের শাস্তি ভোগ করতে হয় হাজার জনকে, নিঃস্ব হতে হয় শতশত দোকান আর বাংলাদেশে রেখে আশা হাজারো ফ্যামিলিকে। কোন প্রবাসী দ্বারা যদি স্থানীয় আফ্রিকান নাগরিক বা মেয়ে কেলেঙ্কারিতে জড়িত হয়ে যায় তাহলে তার জন্য ভোগান্তি পোহাতে হয় হাজারো প্রবাসী বাংলাদেশিকে। আর সে সুযোগেই কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসীরা হত্যা, লুটপাট করে প্রবাসীদের দোকান এবং অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে দেয় অসংখ্য প্রবাসীর স্বপ্ন।
কিছু হত্যাকাণ্ডের কয়েকটি কারণ তুলে ধরবো আপনাদের সামনে তার মধ্যে
মোসলবাই জর্জ ব্লঙ্কোতে এক বাংলাদেশিকে নিজ গালফ্রেন্ডের হাতে ছুরিকাঘাতে খুন হতে হয়েছে।এছাড়াও আরো অনেক প্রবাসীকে এমন নারী সংক্রান্ত কারনে জীবনও দিতে হয়েছে।
কিছুদিন আগে দুই বাংলাদেশিকে নিউক্যাস্টেলে রাতের আঁধারে গলা কেটে জঘন্য কায়দায় হত্যা করেছে কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসীরা।এর মূল কারণ হলো পণ্যের দরদাম ও বাজে ভাষায় কথা কাটাকাটি করা।
ডারবানে পিটার্সমেরিজবার্গের ইমবালিতে মালামালের দাম নিয়ে কথা কাটাকাটি করলে, এক সন্ত্রাসী উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে হত্যা করে শাহপরান নামে প্রবাসী বাংলাদেশিকে।
এভাবে সামান্য তুচ্ছ কিছু বিষয় নিয়ে অকালে জীবন দিতে হয়েছে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিকে।এ ছাড়াও দিয়াশিলাই, পঞ্চাশ পয়সা, এক টাকা দামের সিগারেট, দুই-এক টাকার জন্য, এ দেশের নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ইত্যাদি কারনে অনেক সময় বাংলাদেশিরা আচারণ খারাপ করে।
তবে আমাদেরকে সাবধান ও সচেতন হতে হবে যে এমন কোনো আচরণ করা যাবে না যাতে ওরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
কিছু প্রবাসী বাংলাদেশিরা নৈতিকতা হারিয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের নেশা গ্রহণ করে মদ, জুয়া, হিরোইন, গাঁজাসহ অবৈধ নারী নিয়ে ধ্বংস করতেছে নিজের জীবনকে শুধু নয়, কলঙ্কিত করছে বাংলদেশকে।
আমি তাদেরকে আহ্বান করবো আসুন আমরা সকল প্রবাসী বাংলাদেশি ভালো হয়ে যাই, আমাদের কথায়, কাজে, আচারণে আকৃষ্ট হয়ে আফ্রিকানবাসীরা যেন বলতে পারে পৃথিবীতে একমাত্র সভ্য জাতী আছে আর তারা হলো প্রবাসী বাংলাদেশি।যুগান্তর