দীপক দেবনাথ কলকাতা: ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের দিন দেশটির জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পাশাপাশি বাজলো বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। উড়লো লাল সবুজ পতাকাও। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার রামপুরহাট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে।
বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একদিকে যেমন প্রশংসিত হয়েছে তেমনি ভারতের একটি স্কুলে অন্য দেশের জাতীয় সংগীত গাওয়া বা পতাকা ওঠানো নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি।
গত ১৫ আগস্ট যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে ভারতজুড়ে পালিত হয় ৭৩তম স্বাধীনতা দিবস। ব্যতিক্রম ছিল না রামপুরহাটের এই স্কুলটিও। এদিন সকালে দেশটির জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন পশ্চিমবঙ্গের কৃষিমন্ত্রী এবং রামপুরহাট এর তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক আশীষ ব্যানার্জি। এরপর শুরু হয় কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান। স্কুলের নারী শিক্ষার্থীরাই কেউ নৃত্য পরিবেশন করেন, কেউ আবৃত্তি, কেউ আবার দেশাত্মবোধক সংগীত পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠানের একটা পর্যায়ে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত 'আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি' গানের তালে তালে তালে নৃত্য পরিবেশন করে ওই স্কুলের নারী শিক্ষার্থীরা। জাতীয় সঙ্গীতটি একদিকে যেমন সকলের হৃদয় ছুঁয়ে যায়, তেমনি স্কুলের ছাত্রীদের সমবেত নৃত্যানুষ্ঠান সকলের নজর কাড়ে।
কিন্তু রামপুরহাট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এর ফেসবুক পেজে ৪৩ সেকেন্ডের বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের ওই ভিডিও শেয়ার হতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ভারতের স্বাধীনতার দিনে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাওয়া বা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা দেখানো হলো কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। কেউ কেউ আবার এই ঘটনাকে আর একটি দেশ বিভাজনের ইঙ্গিত বলেও আশঙ্কা করছেন। আর এতেই ক্ষুব্ধ হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের কর্মকর্তা সাগর রায়হান জানান, যেভাবে বিষয়টিকে অন্য মাত্রা দেওয়া হচ্ছে তা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়।
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা কিংবা জাতীয় সংগীত গাওয়ার প্রেক্ষাপট নিয়েও তিনি মুখ খুলেছেন। তিনি জানান, ভারতের স্বাধীনতা দিবস এবং রাখি বন্ধন-একই দিনে এই দুটি উৎসব পড়ায় স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে "বঙ্গভঙ্গ" শীর্ষক একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেই পেক্ষাপটেই ভারতের জাতীয় সংগীতের পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় ও সেদেশের জাতীয় পতাকার ব্যাবহার হয়।
বিষয়টি নিয়ে অহেতুক পানি ঘোলা হচ্ছে বলে জানিয়ে রায়হান আরো জানান, দিন কয়েক আগেই রামপুরহাট মহকুমা শাসকের কার্যালয়েও স্কুলের ছাত্রীরা "বঙ্গভঙ্গ" থিমের উপরই একটি অনুষ্ঠান করে এবং সেখানে যথেষ্ট প্রশংসিত হয়। তার প্রশ্ন এতে যদি কোন বিতর্কিত বিষয় থাকতো, তাহলে মহকুমা শাসক নিজেই তাতে আপত্তি জানতেন।-বিডি প্রতিদিন