আমিন ব্যাপারী, কাতার: হাবিবুর রহমান। কাতার প্রবাসী একজন বাংলাদেশি। আর এই বাংলাদেশির হাত ধরেই বদলে গেছে কাতারের ইতিহাস। কাতারের স্বাধীনতা নিয়ে গবেষণা করে বের করে এনেছিলেন দেশটির সঠিক ইতিহাস। আর এতেই বদলে যায় দেশটির জাতীয় দিবস।
৬৪ বছর বয়সী ড. হাবিবুর রহমান দীর্ঘ ৩১ বছর ধরে কাতারের আমিরের সচিবালয়ে ইতিহাস বিশেষজ্ঞের দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশ মানচিত্রের সর্ব-দক্ষিণের শেষ বিন্দুটি হচ্ছে শাহপরীর দ্বীপ। কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের ছোট একটি ওয়ার্ড এটি। সমুদ্র উপকূলের ছোট্ট এই জনপদের এক সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন হাবিবুর রহমান।
মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ কাতারের জনগণ আগে ৩ সেপ্টেম্বর ‘স্বাধীনতা দিবস’ উদযাপন করতেন। হাবিবুর রহমান কাতারের বহু বছরের ইতিহাস গবেষণা করে বের করলেন, ১৮ ডিসেম্বর হলো কাতারের ‘জাতীয় দিবস’।
২০০৬ সালের মে মাসে তিনি কাতার সরকারের কাছে তার গবেষণালব্ধ তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করেন। কাতার সরকার ৩ সেপ্টেম্বর স্বাধীনতা দিবস বাতিল করে ১৮ ডিসেম্বর জাতীয় দিবস নির্ধারণ করে। ২০০৭ সাল থেকে কাতারে ১৮ ডিসেম্বর জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়। স্বাধীনতা দিবস এখন আর উদযাপিত হয় না। এজন্য কাতারের সরকার ও জনগণ বাংলাদেশের হাবিবুরকে নিয়ে গর্ববোধ করেন।
শুধু তাই প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির মাঝে ডক্টর হাবিবুর রহমান এক অনুপ্রেরণা নাম। সাদা মনের মানুষটি দীর্ঘদিন কাতারে বসবাস এর পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে তিনি। প্রবাসীরাও ড. হাবিবুর রহমান নিয়ে গর্ববোধ করেন।
অনেকের দাবি, সাদা মনের মানুষটিকে যদি প্রত্যেকটি প্রবাসী অনুসরণ করে তাহলে প্রবাসে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বজায় রাখার জন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
শাহপরীর দ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র হাবিবুর রহমান ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগে মাস্টার্স পাস করেন। ১৯৭২-৭৬ সাল পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে শিক্ষকতা করেন। ১৯৭৬-৭৭ সালে কানাডার অটোয়া ইউনিভার্সিটি থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর মাস্টার্স ডিগ্রি পান।
১৯৮২ সালে ইংল্যান্ডের লন্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে ডিফেন্স স্ট্র্যাটেজির ওপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি কাতারের আমিরে দেওয়ানের উপদেষ্টা পদে নিয়োগ পান।