মঙ্গলবার, ১৭ মার্চ, ২০২০, ০৬:৫২:২০

'গোমূ'ত্র পানে কোনো ক্ষ'তি নেই' ভারতে গোমূ'ত্র পার্টি নিয়ে যা বললেন তসলিমা নাসরিন

'গোমূ'ত্র পানে কোনো ক্ষ'তি নেই'  ভারতে গোমূ'ত্র পার্টি নিয়ে যা বললেন তসলিমা নাসরিন

প্রবাস ডেস্ক : করোনা থেকে বাঁ'চতে গত শনিবার ভারতের দিল্লিতে 'গোমূ'ত্র পার্টি'র আয়োজন করে হিন্দু মহাসভা। ওই পার্টিতে গরুর মূ'ত্র পানের পাশাপাশি আগত অতিথিরা গোবরের পায়েসের প্রসাদও খে'য়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশের লেখিকা তসলিমা নাসরিন। ওই স্ট্যাটাসটি হু'ব'হু তু'লে দেয়া হলো-

''হিন্দু মহাসভার ২০০ জন লোক গোমূ'ত্র পার্টি করেছেন। সবাই গোমূ'ত্র পান করেছেন এবং বলেছেন– করোনা ভাইরাসের প্রতিষে'ধক গোমূ'ত্র। একজন তো বললেন যে লোকই বিদেশ থেকে দেশের বিমানবন্দরে ল্যান্ড করবে, তার শরীরে গোমূ'ত্র এবং গোবর ছি'টিয়ে দিলেই ভাইরাস দূ'র হবে। ভিডিওতে দেখলাম একেকজন কী করে পান করছেন গোমূ'ত্র। নিশ্চয়ই খুব আরা'মদা'য়ক নয় ওই জিনিস পান করা। 

এক লোক তো একহাতে নাক ধ'রে অন্য হাতে গোমূ'ত্রের গ্লাস মুখে ঢা'ললেন। বিশ্বাস মানুষকে দিয়ে কিনা করাতে পারে! বিশ্বাসের কারণে মানুষ মানুষকে নি'র্যা'তন করছে, খু'ন করছে। আর এ তো কেবল গোমূ'ত্র পান! কারও গোমূ'ত্র পানে অন্যের কোনো ক্ষ'তি হচ্ছে না অবশ্য। অন্যকে গোমূ'ত্র পানের জন্য জো'র না করলেই হলো। কেউ যদি নিজেকে অ'ত্যা'চার করে আনন্দ পায়, না হয় পাক।

সৌদি আরবের মুসলমানদের মধ্যেও অনেকে উটমূ'ত্র পান করেন। তারাও বিশ্বাস করেন উটমূ'ত্র রো'গ সা'রায়। সৌদি সরকার কয়েক বছর আগে নাকি উটমূ'ত্র বিক্রির দোকান ব'ন্ধ করে দিয়েছে। মা'র্স ভাই'রাস যে মধ্যপ্রাচ্যে ছ'ড়িয়েছিল একসময়, ওই ভাইরাস কিন্তু বাদু'ড় থেকে উটে এসেছিল, উট থেকে মানুষে। কে জানে, উটমূ'ত্রই ওই ভাইরাস ছিল কিনা, উটের দুধেও অবশ্য থাকতে পারে।

বাদুড় থেকে সা'র্স, মা'র্স, নি'পা, হে'ন্ড্রা, হা'লের কোভিড-১৯ কত কিছু এলো। সো'জা মানুষের শরীরে আসে না, ঘোড়া, উট, সিভেট, শূকর ইত্যাদি হয়ে আসে। এই বাদুড়ের ভাইরাসই মনে হয় একদিন মানুষ প্রজাতিকে বিলু'প্ত করবে। বাদুড়গুলো কত হাজারো ভাইরাস শরীরে নিয়ে দিব্যি সুস্থ বেঁ'চে থাকে। এমন চমৎকার স'হাব'স্থান কী করে সম্ভব!

কিছু বিজ্ঞানী বলেন, বাদুড়ই একমাত্র স্ত'ন্যপায়ী প্রাণী যে ওড়ে। সম্ভবত স্ত'ন্যপায়ী যখন বিবর্তিত হয়ে ওড়ার ক্ষ'মতা পেয়েছে, তখনই পেয়ে গেছে ভ'য়াব'হ সব ভাইরাস শরীরে ধা'রণ করেও অসুস্থ না হওয়ার ক্ষ'মতা। মানুষের জীবন যে কী রকম ন'ড়ব'ড়ে, ভ'ঙ্গু'র, পলকা- তা চোখ কান খু'লে দেখা হলো এবার!

একটা ছোট্ট বাদুড়ের শরীর থেকে একটা ছোট্ট ভাইরাস নেমে এসে সাত বিলিয়ন মানুষকে নি'শ্চি'হ্ন করে দেয়ার হু'মকি দিতে পারে। আমরা কি ইকো সিস্টেমের কথা ভাবব, নাকি সব কটা বাদুড়কে মানুষ প্রজাতির স্বার্থে মে'রে ফে'লব? শুধু কি বাদুড়? মশারই বা কী দরকার পৃথিবীতে বেঁ'চে থাকার? মানুষকে কা'মড়, রো'গ, আর মৃ'ত্যু দেয়া ছাড়া এর তো কোনো কাজ নেই।''

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে