বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মীর হারানো সাতশ দিরহাম ফিরিয়ে দিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের অঙ্গরাজ্য আজমানের আল মদিনা কম্প্রিহেনসিভ পুলিশ স্টেশনের ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ওমর মুসাবাহ আল-ক্বাবির। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন।
আজমানের বাংলাদেশি গৃহকর্মী জেসমিন ফকির (৪২) কখনো আশা করেননি যে তিনি হারানো সাতশ দিরহাম ফিরে পাবেন। জেসমিন তার প্রবাস জীবনের ইতি টেনে দেশে ফেরার পরিকল্পনা করছিলেন। এরই মধ্যে করোনাভাইরাস আসায় আ'টকে পড়েন, আর তার ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়।
কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে দেশে ফেরার ঠিক আগে জেসমিনের ওয়ালেটটি হা'রিয়ে যায়। তাতে সাতশ দিরহাম ছিল। এ ঘ'টনার পর ভগ্ন হৃদয়ে দেশে ফিরে আসেন জেসমিন। এরই মধ্যে এক প্রবাসী তার ওয়ালেটটি কুড়িয়ে পেয়ে তা পুলিশ স্টেশনে জমা দেন। এবার শুরু হয় আল-ক্বাবির সার্চ মিশন। ওমর মুসাবাহ আল-ক্বাবির বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে এই সাতশ দিরহাম তার ক'ষ্টার্জিত অর্থ। অন্যের কাছে তা সামান্য হতে পারে, কিন্তু ওই নারীর কাছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ওই নারীর ওয়ালেটে নগদ টাকা, একটি এমিরেটস আইডি ও জীর্ণশীর্ণ এক টুকরো কাগজ পাই। কাগজে এলোমেলোভাবে কিছু টেলিফোন নম্বর লেখা ছিল। আইডির সঙ্গে সংযুক্ত নম্বর তো কাজ করবে না, কারণ তিনি দেশের বাইরে। কাগজে পাওয়া নম্বরের একটিতে ডায়াল করতেই ফোনের মালিক জানালেন তিনি সৌদি আরব থাকেন। কিন্তু সমস্যা হলো তিনি না বোঝেন আরবি, না জানেন ইংরেজি। আমি আমার বাংলাদেশি ড্রাইভারের সাহায্য নিলাম। তিনি স্বীকার করলেন যে জেসমিনকে চেনেন। তবে তার হদিস বের করতে কয়েকদিন সময় লাগবে।’
একমাস পরে ওই নারীর এক আত্মীয়ের নম্বর দিলেন তিনি। সেই নম্বরে ফোন করতেই ভদ্রলোক জানান, তিনি জেসমিনদের এলাকা থেকে দূরে থাকেন। তবে তিনি প্রতিশ্রুতি দিলেন যেভাবেই হোক পুলিশ অফিসারের সঙ্গ জেসমিনের যোগাযোগ করিয়ে দেবেন। এর পরদিন তাকে ফোন করতে লাগলেন এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি আছে কিনা জানতে। ঠিক দুই সপ্তাহের মাথায় জেসমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হলো।
আজমান থেকে পুলিশ অফিসারের ফোন পেয়ে জেসমিন বাকরু'দ্ধ হয়ে পড়েন। তিনি তার হারানো টাকার ব্যাপারে পুলিশে কোনো রিপোর্টও করেননি। হারানো টাকা ফেরত পাওয়ায় তিনি খুব খুশি।