বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করলেন তুরজল মোল্লা নামে এক ইতালি প্রবাসী। বৃহস্পতিবার (৩ জুন) দুপুরে হেলিকপ্টারে চরে কনের বাড়িতে যান তুরজল। এ সময় অসুস্থ বাবাকেও সঙ্গে নিয়ে যান তিনি।
তবে বাকি বরযাত্রীরা যান গাড়িতে চড়ে। তুরজল মোল্লা মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আউটশাহী ইউনিয়নের কাইচাইল গ্রামের সোরহাব মোল্লার একমাত্র ছেলে। তার আরও চার বোন রয়েছে। তুরজল মোল্লা একমাত্র ছেলে সন্তান হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই বাবা-মা তাকে খুব আদর করতো। তুরজল যখন ছোট ছিল তখনই বাবা-মা বড় হলে তাকে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
বর্তমানে তার বাবা অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। ঠিকমতো কথাও বলতে পারেন না। বাবা-মায়ের সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই হেলিকপ্টারে চড়ে বাবাকে নিয়ে যান পাশের লৌহজং উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়নের হুগলি গ্রামে। কনে ওই গ্রামের আওলাদ সেখের মেয়ে সানদিয়া ইসলাম।
দুপুরে বর তুরজল যখন হেলিকপ্টারে চড়েন তখন আশপাশের এলাকার মানুষ ভিড় করে। বিয়ের পর বিকেলে বউ নিয়ে ফেরেন তুরজল। হেলিকপ্টারটি বিকেল ৫টায় তুরজল মোল্লার বাড়ির সামনের পরিত্যক্ত কৃষি জমিতে নামলে পাশের রাস্তাসহ চারপাশে হাজারো জনতা ভিড় জমায়।
এছাড়া আশপাশের ভবনগুলোর ছাদে উঠে নারী-পুরুষরা হেলিকপ্টারটি দেখতে থাকে। বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে তুরজল মোল্লা ও সানদিয়া ইসলাম দম্পতি হেলিকপ্টার থেকে নেমে এলে লোকজন তাদের ঘিরে ধরে। এ সময় মোবাইল হাতে অনেকে হেলিকপ্টার ও বর-কনের ছবি নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
এই বিয়ে দেখতে আসা কাইচাইল গ্রামের জয়নাল হালদার (৭৫) বলেন, আমি কখনো বাস্তবে এতো সামনে থেকে হেলিকপ্টার দেখিনি। তাই দেখতে এসেছি। তাছাড়া হেলিকপ্টারের পাখা যখন ঘোরে তখন চারপাশে এতো বাতাস বয়ে যায় তা আজ না দেখলে বিশ্বাস হতো না।
বর তুরজল মোল্লা বলেন, আমরা পাঁচ ভাইবোন। আমি বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। বাবা-মা আমাকে অনেক আদর করে। তারা চাইতো আমি হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করি। বর্তমানে আমার বাবা অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। বাবা-মায়ের ইচ্ছায় আমি হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করেছি।তিনি আরও বলেন জানায়, চার ঘণ্টার জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় হেলিকপ্টারটি ভাড়া করে এনেছিলাম। কিন্তু বউ নিয়ে আসতে চার ঘণ্টা সময় লাগেনি।
এ ব্যাপারে আউটশাহী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সেখ বলেন, তুরজল খুব ভালো ছেলে। তাকে ছোটবেলা থেকেই আমি চিনি এবং জানি। সে দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে ইতালি প্রবাসী এবং সিটিজেন কার্ডপ্রাপ্ত। ছুটিতে এবার দেশে এসে বিয়ে সে করল। তার বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতেই হেলিকপ্টারে চড়ে বউ নিয়ে আসল।