প্রবাস ডেস্ক : ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে এখন রুশ গোলা এসে পড়ছে এবং ইউক্রেনের সরকারই স্বীকার করছে রুশ সৈন্যরা রাজধানীতে ঢুকে পড়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কিয়েভ শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে মাত্র নয় কিলোমিটার দূরের ওবোলোন এলাকায় রাশিয়ার ট্যাঙ্ক চলছে। ভিডিওটি স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের ঘর থেকে ধারণ করেছেন। এলাকটি ওবোলোন বলে বিবিসি নিশ্চিত হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, রাশিয়ার সৈন্যরা শহরের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। গত দুদিনে প্রচুর মানুষ - কোনো কোনো হিসাবে কয়েক লাখ মানুষ - আতংকে কিয়েভ ছেড়ে চলে গেছেন।
তবে কিয়েভের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী মাহবুব আলম বিবিসি বাংলাকে বলেন যাই ঘটুক না কেন এখন তিনি শহর ছেড়ে কোথাও না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। "প্রথম কথা নিরাপদ জায়গা এখন কোথায় আর আছে সেটা এখন বড় একটি প্রশ্ন। তাছাড়া পরিস্থিতি এখন যা দাঁড়িয়েছে তাতে কোথাও যাওয়াও বড়রকম সমস্যা," টেলিফোনে মি আলম বলেন বিবিসির পুলক গুপ্তকে।
তিনি বলেন, মহাসড়কে প্রচণ্ড জট এবং সেই সাথে জ্বালানি তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। "একবারে ২০ লিটারের বেশি তেল দিচ্ছেনা। এই শীতের মধ্যে রাস্তায় নেমে তেলের জন্য গাড়ি থেমে গেলে বড় বিপদ হবে।" "সে কারণে আমি এবং আমার কয়েকজন বাংলাদেশি বন্ধু কোথাও না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি," বলেন মাহবুব আলম যিনি ১৯৮১ সালে সোভিয়েত সরকারের বৃত্তি নিয়ে পড়তে এসে আর দেশে ফেরেননি।
তিনি জানান, এই ঝামেলার মধ্যে তার পরিচিত অনেকে - যাদের মধ্যে অনেক বাংলাদেশি রয়েছেন - কিয়েভ ছেড়ে চলে গেছেন। এমনকি শহরের কেন্দ্র থেকে কিছুটা দূরে পাজনিয়াকি নামক একটি এলাকার যে বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে তিনি থাকেন সেখানকার অনেক বাসিন্দাও চলে গেছেন।
"আমি যে ভবনে থাকি তার নীচে বড় একটি আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং লট রয়েছে। সেখানে এখন গাড়ি নেই বললেই চলে। বোঝাই যায় ভবনের বাসিন্দাদের অনেকে চলে গেছেন।" রুশ হামলার ভয়ে কিয়েভের বহু পরিবার গত রাতে বোমা শেল্টার এবং পাতাল রেলের স্টেশনে রাত কাটিয়েছেন। দিনের বেলাতেই অনেকে সেখানে থাকছেন।
মাহবুব আলম জানান, তার অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গাটিও এখন অস্থায়ী বোমা শেল্টারের রূপ নিয়েছে। অনেক মানুষ অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে বিছানা বালিশ নিয়ে সেখানে রাতে ছিলেন।
ভয় পাচ্ছেন না? এই প্রশ্নে তিনি বলেন, "বিষয়টি নিয়ে আমি নিজে খুব বেশি ভাবতে চাইছি না। আমার বন্ধুবান্ধব আছে, আমিও আছি। সাইরেন বাজলে নীচে যাবো।" কিয়েভে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস নেই। তবে পাশের দেশ পোল্যান্ডের ওয়ারসতে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের সাথে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তাদের কেউ দেশে ফিরতে চাইলে যাতে তারা ট্রানজিট ভিসা নিয়ে পোল্যান্ডে ঢুকে সেখান থেকে ঢাকার বিমানে উঠতে পারেন তেমন ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে ওয়ারসতে বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে। সূত্র: বিবিসি