প্রবাস ডেস্ক : পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ৩৭ বছর পর প্রাণের বন্ধু হারুনুর রশিদ হারেজকে খুঁজে পেয়েছেন প্রবাসী মহিরুদ্দিন। তবে এখনই তাদের দেখা মিলছে না। মহিরুদ্দিন কানাডা থেকে দেশে আসার পরই বন্ধুর সাথে দেখা করবেন বলে জানা গেছে। ৩৭ বছর পর বন্ধুর খোঁজ পেয়ে বেশ খুশি প্রবাসী মহিরুদ্দিন।
সম্প্রতি জাতীয় একটি দৈনিকে ‘সাক্ষাৎ চাই’ শিরোনামে একটি বিজ্ঞাপন ছাপা হয়। সেই বিজ্ঞাপনে লেখা ছিল, ‘আমি মহিরুদ্দিন ১৯৮৬/৮৭ সালে জার্মানীর ডটমাউন্ড শহরে অবস্থান কালে হারুনুর রশিদ/শেখ রশিদ নামে একজন সেখানে ছিল। যথা সম্ভব তার বাড়ী ফরিদপুর জেলার মধুখালী। ঐ সময়ের পর থেকে অনেক চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করতে পারি নাই। তোমাকে দেখার খুব ইচ্ছা। তাই ফোন নম্বর- ... তে যোগাযোগ করলে বা কেহ সন্ধান দিলে খুব খুশি হবো। সাক্ষাতপ্রার্থী, মহিরুদ্দিন।’
এমন বিজ্ঞাপন প্রচার হবার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মহিরুদ্দিনের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। ফরিদপুরের মধুখালীর বিভিন্ন মানুষ এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে হারুনুর রশিদ নামের এক ব্যক্তি রয়েছেন তাদের এলাকায়। স্থানীয় সবাই তাকে হারেজ নামে চেনে। অনেকেই হারেজের সাথে কথা বলেন।
তিনি বিষয়টি নিশ্চত করে বলেন, মহিরুদ্দিন তার ভালো একজন বন্ধু ছিলেন। হারুনুর রশিদ ওরফে হারেজ বলেন, আমি জার্মানির ডর্টমাউন্ড শহরে থাকতাম। আমার পাসপোর্টে নাম ছিল শেখ রশিদ। আমরা ওখানে তিন বন্ধু থাকতাম। আমার পাসপোর্ট জটিলতার কারণে পুলিশী ঝামেলায় পড়ি। কিছুদিন জেলও খেটেছি।
দুই বন্ধু আমাকে জেলে দেখতেও আসতো। এরপর ১৯৮৭ সালের শেষের দিকে আমি দেশে চলে আসি। আমার যতটুকু মনে পড়ে মহিরুদ্দিনের বাড়ী চট্টগ্রামে। আমিও তাকে অনেক খুঁজেছি। চিঠি লিখেছি। কিন্তু দীর্ঘ ৩৭ বছরেও তার কোন খোঁজ পাইনি।
স্থানীয় কামালদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ওয়ালিদ হাসান মামুন জানান, হারুনুর রশিদ জার্মানিতে থাকতেন জানতাম। ৩৭ বছর পর পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বন্ধুকে খোঁজার বিষয়টি আজকালকার জামানায় একেবারেই বিরল।
হারুনুর রশীদ ওরফে হারেজ (৬৫) ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলা কামালদিয়া ইউনিয়নের কামালদিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মাজেদ শেখের ছেলে। বর্তমানে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। বর্তমানে তিনি বাড়িতেই থাকেন। নিজের ক্ষেত-খামারের সময় দেন।
পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে যে নাম্বারটি দেওয়া হয়েছে সেই নাম্বারটির মালিক গোপালগঞ্জ জেলার ওমর ফারুক নামের এক ব্যক্তির। ওমর ফারুক জানান, মহিরুদ্দিন আগে জার্মানি থাকতেন। বর্তমানে তিনি কানাডায় রয়েছেন। সেখানে আমার চাচা শওকত আলীর সাথে তার পরিচয় হয়।
শওকত আলী দেশে এসেছেন। তার অনুরোধে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছি। হারানো বন্ধুকে খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি ইতোমধ্যেই মহিরুদ্দিনকে জানানো হয়েছে। তিনি দ্রুত দেশে এসে বন্ধুর সাথে দেখা করার কথা জানিয়েছেন।