দীপক দেবনাথ, কলকাতা থেকে : ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক বর্তমানে সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিরাজ করছে বলে মনে করেন ভারতের রাজধানী নয়দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি। উভয়ের বন্ধুত্ব, পারস্পরিক বিশ্বাস, আস্থা ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন এক দিগন্তে এসে দাঁড়িয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্কই স্বর্ণযুগে অবস্থান করছে। এ প্রসঙ্গে ভারতীয় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও টেনে এনে তিনি বলেন, ভারতীয় রাষ্ট্রপতিও দুই দেশের সম্পর্ক অন্য মাত্রায় বিরাজ করছে বলে মনে করেন।
শুক্রবার ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা প্রেসক্লাবে গণমাধ্যমের কর্মীদের সাথে এক মতবিনিময়কালে সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স নিয়েছেন এবং তিনি তাঁর প্রতিজ্ঞা রেখেছেন। বাংলাদেশের মাটি থেকে কোন ধরনের সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডকেও তিনি প্রশয় দিচ্ছেন না। এমনকি দেশের মাটিতে আশ্রয় নেওয়ার অপরাধে একাধিক সন্ত্রাসীকেও তিনি ভারতের হাতে তুলে দিয়েছেন। প্রত্যুত্তরে ভারতের তরফেও আমরা সদর্থক সাড়া পেয়েছি। দুই দেশের সীমান্ত প্রবেশযোগ্য না হলেও ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সীমান্তে দুই দেশের তরফেই কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে’।
তিন দিনের সফরে বৃহস্পতিবার ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্য ত্রিপুরা সফরে আসেন বাংলাদেশ হাইকমিশনার। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি একাধিক অনুষ্ঠানেও যোগ দেন তিনি।
জয়েন্ট বেসিন ম্যানেজমেন্ট বাস্তাবায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে বহমান নদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ সরকার জয়েন্ট বেসিন ম্যানেজমেন্ট প্রতিস্থাপন করতে চায়। কারণ পানিই আমাদের জীবন, আমাদের অগ্রগতি, খাদ্য সবকিছু। বর্ষার পানিসহ পুরো পানিটা আমরা সংরক্ষণ করে রাখতে পারি না। তাছাড়া নদীর নাব্যতাও ক্রমশ কমে যাচ্ছে’।
ভারত এবং বাংলাদেশ যদি সঠিকভাবে পানির ব্যবহার করে, অন্যান্য পণ্য ভাগাভাগি করে এবং একে অপরকে সাহায্য করে তবে উভয় দেশই উইন-উইন পজিশনের কৃতিত্ব অর্জন করতে পারবে বলেও মনে করেন এই কূটনীতিক।
ভারতসহ প্রতিবেশি রাষ্ট্রগুলোর সাথে কানেকটিভিটি বাড়ানোর লক্ষ্যে শেখ হাসিনার সরকার সড়ক, রেল, সমুদ্র এবং আকাশপথেও জোর দিয়েছে বলে জানান মোয়াজ্জেম আলি। একইসঙ্গে প্রতিবেশি রাষ্ট্রগুলোর কাছে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দরসহ অন্যান্য বন্দরকে ব্যবহারের সুবিধার্থে কনসোর্টিয়াম গঠন করা হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ হাইকমিশনার বলেন, মানুষে মানুষে সম্পর্ক বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ভ্রমণে ইচ্ছুক ভারতীয়দের ভিসা সরলীকরণেও জোর দিয়েছে আমাদের সরকার। ব্যবসায়িক কাজে প্রতিনিয়ত যাতায়াতের সুবিধার জন্য ব্যবসায়ীদের জন্য ৫ বছরের ভিসা মঞ্জুর করছে বাংলাদেশ সরকার। -বিডি প্রতিদিন
৩০ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ/এসএস/এসবি