শেখ আরিফুজ্জামান, মালয়েশিয়া থেকে: বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের মাত্র একদিনের মাথায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক নেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিতের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে খোদ মালয়েশিয়ায়। মালয়েশিয়ার সাবেক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী তান শ্রী রাফিদাহ আজিজ সরকারের এই সিদ্ধান্তকে দ্বিমুখী আচরণ বলে উল্লেখ করেন। খবর দ্য স্টারের।
গতকাল শুক্রবার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি জানান, ‘১৮ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হয় তিন বছরে সর্বমোট ১৫ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক আনতে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। অথচ চুক্তির কালি শুকানোর আগেই ১৯ ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হলো বাংলাদেশি শ্রমিকসহ সব বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ স্থগিত করেছে সরকার।’ সরকারের প্রতি প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘সরকারি নীতি নিয়ে কেন এমন দ্বিমুখী আচরণ করা হলো।’
গতকাল শুক্রবার সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে এক বৈঠকের পর দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি ‘সোর্স কান্ট্রি’ থেকে (জনশক্তি নেওয়ার জন্য মালয়েশিয়া সরকারের তালিকাভুক্ত দেশ) কর্মী নেওয়া স্থগিত রাখার এ ঘোষণা দেন বলে জানান মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বারনামা।
রাফিদাহ প্রশ্ন করে আরো বলেন, ‘কী এমন ঘটনা ঘটেছে? ঘোষণার পূর্বে কি এ প্রস্তাব বা নীতির কোনো সমীক্ষা করা হয়নি? সবার মতামত বিবেচনায় আনতে সংশ্লিষ্ট সব দলের সঙ্গে কি কোনো আলোচনা করা হয়নি? অর্থাৎ অর্থনৈতিক, সামাজিক ও নিরাপত্তা উদ্বেগ নিয়ে কি কোনো সমীক্ষা করা হয়নি?’
সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা হারানোর ফলেই এমনটা ঘটেছে দাবি করে রাফিদাহ বলেন, ‘যেসব পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তা যদি প্রথমে মধ্যস্ততার টেবিলে বিস্তারিত আলোচনা হতো তাহলে সবকিছুই এড়ানো যেত।’
ফলে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশ থেকে আপাতত কোনো শ্রমিক মালয়েশিয়ায় যেতে পারবে না। দেশটির সেনাপ্রধান কিম মুয়ারা তুয়াংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এমন ঘোষণা দেন হামিদি। একই সঙ্গে দেশটিতে শিল্প কারখানার জন্য ঠিক কী পরিমাণ জনশক্তি দরকার তা নিরূপণের আগে নতুন শ্রমিক না নেওয়ার ঘোষণা দেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি।
এর একদিন আগে বৃহস্পতিবার ঢাকায় প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি ও মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী রিচার্ড রিয়ট পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস