রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৯:৪০:০০

মালয়েশিয়ায় সাঁড়াশি অভিযান, এক রাতেই বাংলাদেশিসহ আটক ৯৭১

মালয়েশিয়ায় সাঁড়াশি অভিযান, এক রাতেই বাংলাদেশিসহ আটক ৯৭১

প্রবাস ডেস্ক : মালয়েশিয়ার বিভিন্ন শহরে অভিযান চালিয়ে এক রাতেই বাংলাদেশিসহ ৯৭১ জন বিদেশি নাগরিককে আটক করা হয়েছে। দেশটির উপ প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদির ঘোষণার পর এই সাঁড়াশি অভিযান চালালো অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। তবে আটক বিদেশিদের মধ্যে কতোজন বাংলাদেশি রয়েছেন সে বিষয়ে সাকিব কুসমির কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

শুক্রবার রাত ১০টার পর থেকে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ১৮২ জনের কাগজপত্র পরীক্ষার পর ওই ৯৭১ জনকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা বারনামা।   

দেশটির অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক সাকিব কুসমি বলেন, বৈধ কাগজপত্র না থাকা এবং মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পরও অবস্থান করায় তাদের আটক করা হয়।  কারো কারো কাছে আবার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনের ‘ভুয়া’ কার্ড  পাওয়া গেছে।

তিনি আরো বলেন, তাদের ইমিগ্রেশন বিভাগের ডিটেনশন ডিপোতে রেখে তদন্ত করা হবে। এরপর তাদের বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মেলাকা আঞ্চলিক অভিবাসন দপ্তরের পরিচালক ফউজি আবদুল্লাহর বরাত দিয়ে মালয়মেইল অনলাইন জানিয়েছে, ওই এলাকায় আটক ২১২ জন অবৈধ অভিবাসীর মধ্যে ছয়জন বাংলাদেশি রয়েছেন।  

মালয়েশিয়ার উপ প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি শুক্রবার বিদেশি কর্মী নেওয়া স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে বলেন, যেসব বিদেশি শ্রমিক তাদের কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও অবৈধভাবে এ দেশে অবস্থান করছেন, তাদের গ্রেপ্তার করে যার যার দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ‘শিগগিরই’ বড় আকারে অভিযান শুরু করা হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন জাহিদ হামিদি, যিনি মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করছেন। তার ওই ঘোষণার পর রাতেই মাঠে নামে দেশটির অভিবাসন বিভাগ।   

শনিবার রাতে মালয়েশিয়ার জোহর বারু থেকে টেলিফোনে মো. মেহেদী নামের এক বাংলাদেশি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গতরাত থেকে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়েছে। যাদের বৈধ কাগজপত্র নেই তারা খুব বিপদে আছে। চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়াও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের মেহেদী জানান, তিন বছর আগে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর তিনি একটি মার্কেটে কাজ নেন। আরও অনেক বাংলাদেশি সেখানে কাজে আছেন।  

তিনি বলেন, সবার তো বৈধ কাগজপত্র নাই। অনেক কষ্ট করে আমরা দেশে মা-বাবাকে টাকা পাঠাই। সরকার কী আমাদের বৈধ করার সুযোগের জন্য কিছু করবে?

মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির অন্যতম বড় বাজার। বর্তমানে বিভিন্ন পেশায় প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশি সেখানে রয়েছেন।

দীর্ঘদিন বন্ধ রাখার পর ২০১৩ সালে বাংলাদেশ থেকে কেবল ‘প্ল্যান্টেশন’ খাতে শ্রমিক নেওয়া শুরু করে মালয়েশিয়া।

এরপর গতবছর বাংলাদেশকে মালয়েশিয়ার জনশক্তির জন্য ‘সোর্স কান্ট্রির’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলে সেবা, উৎপাদন, নির্মাণসহ পাঁচটি খাতে  ১৫ লাখ কর্মী নেওয়ার আলোচনা শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় দুই দেশের মধ্য্যে সমঝোতা স্মারকেও সই হয়।

কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই শুক্রবার সকালে মালয়েশিয়ার উপ প্রধানমন্ত্রী বিদেশি শ্রমিক নেওয়া স্থগিতের ঘোষণা দিলে দুই দেশেই বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়।

যাদের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তাদের নিয়োগের চুক্তি নবায়সের সুযোগ দিতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে আবেদন নেওয়া শুরু করে মালয়েশিয়া সরকার। এর আওতায় গত চার দিনে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার আবেদন জমা পড়েছে বলে বারনামার খবর।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে