রনি মোহাম্মদ লিসবন (পর্তুগাল) থেকে: প্রায় ১০০ বছর পূর্ব ইংরেজদের কাছে হারানো মাতৃভূমি এবং ১৯৫২ এসে আবার মাতৃভাষা কেড়ে নেয়ার যে চেষ্টা পাকবাহিনী করেছিল তাদের সকল জুলুম, অত্যাচার সবকিছু আবার বাংলা মায়ের দামাল সালাম, বরকত, রফিক ও জব্বারদের মত নাম না জানা আরো অনেক বাংলা মায়ের সন্তানরা জীবন দিয়ে পাকিস্তান সরকারকে বাধ্য করে বাংলা ও উর্দুভাষাকে সম-মর্যাদা দিতে। সেই সকল ভাষা সৈনিকদের স্মরনে বৃহত্তর নোয়াখালী এসোসিয়েশন অব পর্তুগালের উদ্যোগে ২৮শে ফেব্রুয়ারি লিসবনের বাংলা জোনস্থ কাজা দা কবিলা হলে অনুষ্ঠিত হল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভা ও দোয়া। সংগঠনের সভাপতি জনাব হুমায়ন কবির জাহাঙ্গীর এর সভাপতিত্বে এবং সাধারন সম্পাদক জনাব মহিন উদ্দিন এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত ইমতিয়াজ আহমেদ।
বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ কমিউনিটি অব পর্তু,পর্তুগালের সভাপতি শাহ আলম কাজল। অনুষ্ঠানের শুরুতে ২১শের শহিদদের শ্রদ্বা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন এবং পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব আব্দুল করিম মানিক। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা রানা তাসলিম উদ্দিন, পর্তুগাল আওয়ামীলীগের সভাপতি জহিরুল আলম জসিম, পর্তুগাল বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম শিকদার, বৃহত্তর নোয়াখালী এসোসিয়েশন অব পর্তুগালে সিনিয়র সহ সভাপতি জনাব আবুল কালাম আজাদ, সহ সভাপতি জনাব মিজানুর রহমান মাসুদ, সহ সাধারন সম্পাদক জনাব নজরুল ইসলাম সুমন, প্রচার সম্পাদক রনি মোহাম্মদ, অফিস সম্পাদক ইমরান হোসেন, জহুরুল হক সহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।
বক্তারা বলেন ১৯৫২,১৯৬৯, ১৯৭১ বাংলাদেশের নোয়াখালীর ভুমিকা স্মরন করিয়ে দেয় এবং পর্তুগালে ১৯৯৩ সালে ততকালীন সময়ে আবুল কাসেম রনি নামের বাংলাদেশী জনৈক প্রবাসি ভাষা শহীদদের সম্মানে ব্ল্যাক বোর্ডে করে বাংলা বর্নমালা লেখে রাস্তায় ঘুরে একুশ পালনের কথা স্মৃতিচারন করে লিসবনে ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশির কাছে নিজ ভাষা ও সংস্কৃতি আরো ব্যাপক চর্চার উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং ভাষার মাসে লিসবনে প্রতিষ্টিত প্রথম বাংলা স্কুল প্রতিষ্টার উদ্দোগের প্রশংসা করেন এবং সকল মহলকে এভাবে কল্যান মুলক কাজে আরো ব্যাপকভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
রাষ্ট্রদূত ইমতিয়াজ আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, বাঙালি সংস্কৃতি ও ভাষার গৌরবকে ছড়িয়ে দিতে প্রতিটি বাংলাদেশিকে প্রবাসে থেকেও একেকজন এম্বেসেডরের ভুমিকা পালন করতে হবে। ৫২র ভাষা আন্দোলন আমাদের গৌরবের প্রতিক এবং ৭১ এ মহান স্বাধিনতা লাভের মুল সোপান ও বটে। তিনি আরো বলেন বাংলাদেশ দুতাবাসের পক্ষ থেকে পর্তুগীজদের সাথে বাংলাদেশের ৫শত বছরের যোগাযোগ পুর্তি উপলক্ষে কবি নজরুলের ৭৫টি কবিতার পর্তুগীজ ভাষায় অনুবাদ ও প্রচারের কথা ঘোষনা করলে উপস্থিত বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছাস প্রকাশ পায়।
সভাপতির বক্তব্যে হুমায়ন কবির জাহাঙ্গির রাষ্ট্রদূতকে অনুষ্টানে উপস্থিত হওয়ায় আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান এবং একটি সুন্দর ও ঐক্যবদ্ব বাংলাদেশি কমিউনিটি যাতে গড়ে উঠে আশাবাদ ব্যাক্ত করে সভার সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
অনুষ্ঠানে পর্তুগালের বিভিন্ন বাংলাদেশী রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের মিয়া ফরহাদ, শওকত ওসমান, এম এ খালেক, ইউসুফ তালুকদার, এসএম রেজাউল হক, এনামুল হক মিথুন, মুজিবুর মোল্লা, ইমরান, শেখ মিনহাজ, চ্যানেল আই পর্তুগালের প্রতিনিধি মোহাম্মেদ নুরুল্লাহ, বাংলাপিটির সম্পাদক মাহবুব সুয়েদ, নবকন্ঠের ব্যুরু চিফ সেলিম উদ্দীন ও বাংলাপিটির নিউজ এডিটর এনামুল হক সহ সর্বস্তরের বাংলাদেশীগন উপস্হিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে শেষে মহান ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং জাতীর শান্তি-সমৃদ্বি কামনায় লিসবন বায়তুল মোকাররম মসজিদ এর প্রধান খতিব জনাব মাওলানা আবু সাইদের মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস