মতিউর রহমান মুন্না : গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে ঘটে গেলো এক হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনা। প্রবাসী জীবনের হাজারো স্বপ্ন বুকে নিয়ে ঘর থেকে বের হওয়া দুই প্রবাসী বাংলাদেশি আর ফিরলেন না ঘরে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তারা দুজনেই চিরবিদায় নিয়েছেন। নিহতরা হলেন সুদীপ ঘোষ (৪২) ও মোসলেউদ্দিন বাবু মোল্লা (৬৯)।
বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেলে এথেন্সের ব্যস্ততম পেত্রু রালি সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছে এথেন্সস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সুদীপ ঘোষ ও মোসলেউদ্দিন বাবু মোল্লা একসাথে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে মোটরসাইকেলযোগে যাচ্ছিলেন। যাত্রাপথে মোটরসাইকেলটি হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ডিভাইডার ও বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা খায়।
এ সময় মোটরসাইকেলের পেছনে বসা মোসলেউদ্দিন বাবু মোল্লা ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুরুতর আহত অবস্থায় সুদীপ বাবুকে দ্রুত ইক্যাবের অ্যাম্বুলেন্সে করে এথেন্সের নিকাইয়া জেনারেল হাসপাতাল-এ নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত তিনিও মৃত্যুর কাছে হার মানেন।
নিহত সুদীপ ঘোষ (৪২) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরশহরের রাধানগর ঘোষপাড়ার মৃত সুকুমার ঘোষের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে এথেন্সে একটি গাড়ির শোরুমে চাকরি করতেন। প্রতিদিনের মতো কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন, কিন্তু ভাগ্য তার পথ রুদ্ধ করে দেয়। প্রায় দেড় বছর আগে বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তিনি দেশে গিয়েছিলেন। রেখে গেছেন বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও এক কন্যাসন্তানসহ স্বজনদের ভেঙেপড়া পরিবার।
নিহত মোসলেউদ্দিন বাবু মোল্লা শরীয়তপুর জেলার দেশহাতরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বহু বছর ধরে গ্রিসে শ্রমজীবী প্রবাসী ছিলেন। কর্মব্যস্ত দিনের শেষে আর বাড়ি ফেরা হয়নি তার।
এই আকস্মিক মৃত্যুর খবরে গ্রিসের প্রবাসী বাংলাদেশি সমাজে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। তাদের সহকর্মী ও বন্ধু-স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
এথেন্সস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, আইনি সব প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর নিহতদের মরদেহ দ্রুত দেশে পাঠানো হবে।
একই দিনে দুটি প্রাণ নিভে যাওয়া শুধু দুটি পরিবারকেই নয়, গোটা প্রবাসী বাংলাদেশি সমাজকেই স্তব্ধ করে দিয়েছে।-জাগো নিউজ