রনি মোহাম্মদ, (লিসবন পর্তুগাল) থেকে: স্বাধীনতার মাস মার্চ, সারাবিশ্বের মতো নতুন করে জেগে উঠেছিল পর্তুগাল প্রবাসী বাঙালিরাও। রক্তঝরা এই মার্চ মাস বাঙালী জাতীর অগ্নিঝরা ইতিহাসের মাস, বিষাদ ও বেদনার মাস। এই মাসের ২৫ তারিখ থেকে লেখা শুরু হয়েছিল এক অমর মহাকাব্য, যার নাম ''বাংলাদেশ''। আমাদের স্বাধীনতার জন্য চূড়ান্ত লড়াই শুরু হয় এই মার্চেই। একাত্তরের গোটা মার্চ মাসই ছিল অত্যন্ত ঘটনাবহুল। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের পর এ দেশ যে স্বাধীনতা আন্দোলনের পথে এগোচ্ছিল তা স্পষ্ট হয়ে যায় এই মার্চেই। ১৯৭১-এর ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। এই ভাষণেই বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদায় ২৪শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন করা হয়। পর্তুগাল প্রবাসী বাংলাদেশীরা ছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, লুক্সেমবার্গ, মিশর, ভারত, পাকিস্তান, লিবিয়া, তুরস্কো, তিউনিসিয়া, সেনেগাল, কাপে ভের্দে, গিনিবিসাও, মরক্কো সহ ৩৫টি দেশের রাষ্ট্রদূত এবং পর্তুগাল সরকারের প্রসাশনিক, সামরিক সহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
পর্তুগাল ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনায় বেলজিয়ামের ব্রাসেলস সন্ত্রাসী বোমা হামলায় নিহত এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি সকলে দাঁড়িয়ে সম্মান ও শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
রাষ্ট্রদূত ইমতিয়াজ আহম্মেদ- বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রগতি উপস্থাপন করে বক্তব্য দেন এবং বলেন, নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশ হবে সুখ ও সমৃদ্ধির। নতুন স্বদেশ গড়ার পথে নতুন প্রজন্মের মূল শক্তি থাকবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। পর্তুগালের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কথা উল্লেখ করে বলেন ৫শ’ বছরের পুরনো এবং ব্রিটিশদের আগমনের প্রায় ২৪০ বছর আগে পর্তুগীজরা বাংলাদেশে এসেছিল। সংস্কৃতি এবং ভাষার দিক থেকেও প্রায় ১৫০০ পর্তুগীজ শব্দ বাংলা ভাষার সাথে মিল রয়েছে। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনি ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৭৮টি কবিতার পর্তুগীজ ভাষায় অনুবাদ করা বইয়ের মোড়ক উম্মোচন করেন।
এ সময় পর্তুগালের বাংলাদেশ কমিউনিটি ব্যাক্তিবর্গ, বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব মোহাম্মদ খালেদ, কনস্যুলার মৌসুমী রহমান দুতাবাসের সহকারী কনসুলার মোহাম্মদ নুরুদ্দীন, দূতাবাসের হিসাবরক্ষক সামিউলসহ সকল কর্মকর্তা উপস্তিত ছিলেন।
২৫ মার্চ, ২০১৬,এমটিনিউজ২৪.কম/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস