আবু তাহির, ফ্রান্স থেকে: প্রভাবশালী ফরাসী পত্রিকা ‘ইস্ট রিপাবলিকান ’ তাকে বলছে ‘ feux de Bengale’ (ফু দ্যা বেঙ্গল), বাংলায় যার অর্থ ‘বাংলার আগুন’। রান্নায় হাতের অসাধারণ যশে তিনি নিজ দেশের খাবারকে তুলে এনেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। তাঁর খাবারের স্বাদ নিয়েছেন ফরাসী মন্ত্রী, রাজনীতিক, শিল্পপতি থেকে শুরু করে নানা শ্রেণী পেশার বিশিষ্টজনেরা। সবার মুখে তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের প্রশংসা।
ফয়জুল হক। ফ্রান্সে প্রবাসী বাংলাদেশী। থাকেন ফ্রান্সের অদূরে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের শহর দিজনে। ফয়জুলের জন্ম মৌলভীবাজার জেলার শমসেরনগরে, ১৯৬৩ সালে। দিজনে প্রতিষ্ঠিত রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী তিনি। সেখানে তিনটি রেস্তোরার মালিক তিনি।এক মেয়ে ও চার ছেলে নিয়ে বর্তমানে ফ্রান্সের অদূরে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের শহর দিজনে বসবাস করছেন। সেইসঙ্গে, নিজেও একজন বিখ্যাত রন্ধনশিল্পী। জানালেন, খাবার নিয়েই তাঁর যতো কথা
তিনি বলেন আমরা স্বাধীন দেশের মানুষ হয়ে কেন ইন্ডিয়ার নাম দিয়ে আমাদের ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তুলব। তাই আমার প্র্তিগ্জ্ঞা আমি বাংলাদেশী খাবার কে ইউরোপে ব্র্যান্ড হিসাবে তুলে ধরবো। আমার বিশ্বাস আমাদের আন্তরিকতা ও উপস্থাপনা ভাল হলে এটা সম্ভব। ইদানিং লক্ষনীয় যে অনেক ফরাসীরা বাংলাদেশী খাবার নিয়ে তারা আগ্রহী।
আমি ইউরোপে একজন বাংলাদেশী হয়ে অনেক নামীদামী রান্না বিষয়ক ফেস্টিভ্যালে তুলে ধরেছি , বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী খাবারকে। আন্তর্জাতিক মানের রান্না করে অনেক প্রশংসাপত্র পেয়েছি । আমাদের তরুণ প্রজন্ম যদি রেস্তুরাকে শিল্প হিসাবে মেনে নিতে পারে তাহলে একদিকে আমাদের দেশীয় কর্মসংস্তান সৃষ্ঠি হবে এবং এখাতে ব্রিটেনকে ছাড়িয়ে ফ্রান্সে বিরাট সম্ভাবনা সৃষ্ঠি হবে ।
ফয়জুল হক ব্যক্তি জীবনে একজন সজ্জন ও পরোপকারী মানুষ। এছাড়াও তিনি অনেক সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আছেন যুক্ত । এতবড় মাপের একজন আন্তর্জাতিক শেফ হয়েও তার মধ্যে নেই কোনো অহংকার। তিনি সর্বদাই সদালাপী মানুষ।
তার এই কিংবদন্তী হয়ে ওঠার পেছনে রয়েছে তার প্রতিভা ও পরিশ্রম। সময়ের পরিক্রমায় বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে কাজ করতে করতে এক সময় রন্ধন শিল্পে পেয়েছেন সফলতা । তার সততা, দক্ষতা, মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে রন্ধন শিল্পের জগতে নতুন নতুন ইতিহাস রচনা করেন। দুরদর্শী ফয়জুল শুধু নিজে নয় আন্তরিকতার মধ্য দিয়ে প্রায় ৫০০ জন বাঙ্গালিকে বানিয়েছেন শেফ, যারা বর্তমানে ফ্রান্সে দাম্ভিকতার সাথে কাজ করে দেশে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন।
৩ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস