প্রবাস ডেস্ক : জঙ্গিবাদে অর্থায়নে দোষী প্রমাণিত সিঙ্গাপুরে সাজাপ্রাপ্ত চার বাংলাদেশির গ্রুপ প্রধান মিজানুর রহমান। মঙ্গলবার মিজানুরকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে সিঙ্গাপুরের আদালত।
আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মিজানুর স্বীকার করেছেন, তার উদ্দেশ্য খারাপ ছিল। তিনি অনুতপ্ত। আমাকে ভুল পথে নিয়ে গেছে ওরা।
৩১ বছরের মিজানুর রহমান মাসিক ১ হাজার ৩০০ ডলারে সিঙ্গাপুরে কাজ করতেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, আমি ধর্মীয় বিষয় শিখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু যাদের কাছে শিখতে গিয়েছিলাম তারা আমাকে ভুল পথে নিয়ে গেছে।
আমার উদ্দেশ্য খারাপ ছিল না, আমি অনুতপ্ত।
আদালতের নথি থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশে অপর এক বাংলাদেশি নাগরিক জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে সাক্ষাতের পর জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হন মিজানুর রহমান।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সিঙ্গাপুরে আসার সময় মিজানুরের সঙ্গী ছিলেন জামান এবং অপর এক বাংলাদেশি নাগরিক সোহাগ ইব্রাহিম। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি ওই দুই ব্যক্তিকে আইএসে যোগ দিতে রাজি করান।
ফেব্রুয়ারি ও মার্চে বেশ কয়েকটি বৈঠকের পর অন্যদের দলে নেয়া হয়। মিজানুর রহমান ‘সশস্ত্র জিহাদ’-এর কথা উল্লেখ করে অন্যদের বলেন, তারা বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে অবিশ্বাসীদের হত্যা করবেন।
সিঙ্গাপুর সরকার জানিয়েছে, মঙ্গলবার সাজাপ্রাপ্ত চার বাংলাদেশি ইসলামিক স্টেট ইন বাংলাদেশ নামে হামলার পরিকল্পনার জন্য ৪৫ থেকে ১ হাজার ডলার অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন।
আদালতের রায়ে দলটির প্রধান মিজানুর রহমানকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ইসমাইল হাওলাদার সোহেলকে ২ বছরের, রুবেল মিয়া ও জাবেদ কায়সারকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
রায়ে বলা হয়েছে, গত ২৭ মে থেকে তাদের সাজা কার্যকর হবে।
রায় ঘোষণার পর প্রসিকিউটর বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এ বিচারের মাধ্যমে জঙ্গি অর্থায়নে নিয়োজিতদের প্রতি কঠোর বার্তা দেয়া গেছে। যারাই এ কাজে জড়াবে তাদের বিচার হবে।
চলতি বছর এপ্রিলে সিঙ্গাপুরের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আইনের আওতায় ৮ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে স্ট্রেইট টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আটক হওয়া আট বাংলাদেশি দাবি করেছেন, তারা ইসলামিক স্টেট ইন বাংলাদেশ (আইএসবি)-এর সদস্য।
গত মার্চে সিঙ্গাপুরে তারা সংগঠনটি গড়ে তোলেন। সিরিয়া ও ইরাকে তৎপর থাকা সশস্ত্র সংগঠন আইএসের হয়ে লড়াই ও যোগদানের পরিকল্পনা করেছিলেন তারা।
তবে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমানোটা কঠিন হয়ে পড়ার কারণে শেষ পর্যন্ত তারা মত পাল্টান। গড়ে তোলেন নতুন পরিকল্পনা। আট বাংলাদেশি দেশে ফিরে সহিংস কর্মকাণ্ডের মধ্যদিয়ে সরকার উৎখাত, একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং তা ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস ঘোষিত খেলাফতের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন।
এর আগে এপ্রিলে আরো ৫ বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠায় সিঙ্গাপুর। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সঙ্গে বাংলাদেশিদের সম্পর্ক তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সূত্র : রয়টার্স
১২ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম