প্রবাস ডেস্ক : ছেলের অটিজম ধরা পড়েছে এ জন্য প্রায় ১০ বছর অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করা এক বাংলাদেশী পরিবারের স্বপ্নভঙ্গ হতে পারে। স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে সরকার। এর ফলে তাদেরকে অস্ট্রেলিয়া থেকে বের করে দেয়া হতে পারে। এ অবস্থায় ওই পরিবারটি অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী পিটার ডাটনের কাছে নতুন করে আবেদন করেছেন।
এ পরিবারের কর্তা মোনাস ইউনিভার্সিটির মেডিকেল লেকচারার ড. বিশ্বজিৎ বণিক। স্ত্রী শারমিন সাঈদ ও ১২ বছর বয়সী ছেলে অর্কজিৎকে নিয়ে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন প্রায় ১০ বছর। সম্প্রতি মেডিকেল পরীক্ষায় তার ছেলের অটিজম ধরা পড়ে। শুধু এ কারণে ২০১৫ সালের জুলাইয়ে এ পরিবারটির অস্ট্রেলিয়ায় থাকার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়। এতে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন ড. বিশ্বজিৎ। তিনি ছেলের উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলেন।
বিশ্বজিৎ বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত আমার স্বপ্নকে চুরমার করে দিচ্ছে। এ খবর দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সিবিএস নিউজ। ড. বিশ্বজিৎ বলেছেন, অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রণালয় তাদেরকে বলেছে যে, তাদের ছেলের শারীরিক সমস্যার কারণে তাদেরকে আর ভিসা দেয়া যাচ্ছে না। তার ছেলের শরীরে যে সমস্যা তা অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য খাতের জন্য একটি বোঝা।
ড. বিশ্বজিৎ বণিক বলেন, তিনি ও তার স্ত্রী অস্ট্রেলিয়ায় জেনারেল প্রাকটিশনার হিসেবে কর্মরত। সেখানে তার স্ত্রী পিএইচডি করছেন। তারা নিজেরাই অর্কজিতের স্কুল ও মেডিকেল সব খবর বহন করেন। এসব ডকুমেন্ট তারা অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছেন। তারা এডমিনিস্ট্রেটিভ আপিলস ট্রাইব্যুনালে আপিল করেছেন। এখান থেকে তাদের আবেদন ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বিশেষ বিবেচনার জন্য পাঠিয়ে দেয়া হয় ডাটনের অফিসে।
বিশ্বজিত বলেন, এর পর আমাদের বিষয়ে তারা বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, চরিত্রগত সনদ চায়। এর সঙ্গে চায় আরও কিছু ডকুমেন্ট। আমরা সব ডকুমেন্ট জমা দিয়েছি দু’মাস আগে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আমাদেরকে কিছু জানানো হয় নি। উল্লেখ্য, শিশুর অটিজমের কারণে অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে অনুমতি না দেয়ার ক্ষেত্রে শুধু ড. বিশ্বজিৎ একই নন। আরও মানুষ এ নিয়ে লড়াই করেছেন বা করছেন।
২০১৩ সালে ড. বিশ্বজিতের এক বন্ধু কবিরের পরিবারকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়। এখানেও কারণ, কবিরের ছেলে শ্রীজনের (৮)ও ধরা পড়েছে অটিজম। তবে লড়াই করতে করতে অভিবাসন মন্ত্রী স্কট মরিসন এ পরিবারটিকে অস্ট্রেলিয়া থাকার অনুমতি দিয়েছেন। চ্যানেল নাইন নিউজ দিয়েছে আরেকটি তথ্য। তা হলো ফায়েদ হক নামে ৪ বছর বয়সী একটি শিশু তার বাংলাদেশী পিতামাতার ঘরে জন্ম নেয় অস্ট্রেলিয়ায়। তার শরীরেও ধরা পড়ে অটিজম। তবে তার পরিবার মি. ডাটনের কাছে আপিল করেছিল। তার হস্তক্ষেপে তারাও অস্ট্রেলিয়ায় থাকার অনুমতি পেয়েছে। এসব কারণে এখনও ধৈর্য্য ধরে আছেন ড. বিশ্বজিৎ বণিক। তিনি এখনই অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে চান না। তিনি আশা করেন মি. ডাটন তার পরিবারকেও অস্ট্রেলিয়া থাকার অনুমতি দেবেন। -এমজমিন
০৪ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম