রাজশাহী : কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধ ‘টি’ বাঁধের ভাঙন। ফারাক্কার তেড়ে আসা পানিতে ভেসে যাচ্ছে জিও ব্যাগ।
বাঁধ রক্ষায় দিনরাত পাথর ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। যদি ঠেকানো না যায় তাহলে মাত্র ১০ মিনিটেই তলিয়ে যাবে রাজশাহী শহর।
ফারাক্কা থেকে তেড়ে আসা পানি গত চারদিন আগেই এ বাঁধে ধাক্কা মেরেছে। রাতদিন বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
কিন্তু প্রবল স্রোতের তোড়ে বালুর বস্তা ভেসে যাচ্ছে। এ অবস্থায় অনেকটা দিশেহারা পাউবো। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বড় বড় পাথর ফেলা হচ্ছে।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুখলেসুর রহমান বলেন, পদ্মায় আজও পানি কমেছে। কিন্তু তীব্র স্রোতের কারণে ‘টি’ বাঁধে প্রতিরক্ষার কাজ মারাত্মক বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রায় এক হাজার বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। কিন্তু বস্তাগুলো ঠিকঠাক মতো থাকছে না। প্রবল স্রোতে টিকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে এখন পাথর ফেলা শুরু হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ কর্মকর্তা।
বাঁধ রক্ষায় একেকটি পাথরের ওজন ৮০ কেজি থেকে ১০০ কেজি পর্যন্ত। প্রতিটি বস্তায় রয়েছে প্রায় ৩০ কেজি বালু। রাতে কাজ করার জন্য বিদ্যুতের অস্থায়ী সংযোগ দিয়ে টানানো হয়েছে বাল্ব।
শ্রমিকরা জানান, চারদিন ধরে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। কিন্তু প্রবল স্রোতে সব বস্তা ভেসে যাচ্ছে। অনেক সময় বস্তার সেলাই খসে বালু পড়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, বুধবার পদ্মায় রাজশাহী পয়েন্টে পানির প্রবাহ ছিল ১৮ দশমিক ৩৫ মিটার। পানি কমেছে। কিন্তু বাতাসের কারণে স্রোত তীব্র হচ্ছে। এতে ভাঙন ঠেকাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, ‘টি’ বাঁধ রক্ষায় শত শত জিও ব্যাগ ফেলা হলেও পানির নিচে এগুলোর কী অবস্থা তা জানার উপায় নেই।
‘টি’ বাঁধের ভঙ্গুরদশা দেখে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন সাবেক সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, বাঁধটি নির্মাণের পর থেকে সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা বলছেন কিছুই হবে না, তাদের জানা উচিত, যদি ভাঙন ঠেকানো না যায় তাহলে রাজশাহী শহর তলিয়ে যেতে ১০ মিনিটও সময় লাগবে না।
৩১ আগস্ট,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম