আসলাম-উদ-দৌলা : জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান হেনার পুত্র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন রাজনীতিতে আসেন ’৮৬ সালে। এরপর ’৮৮ সাল থেকে টানা ২৬ বছর রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে লিটন বলেন, শুধু আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নন, সভানেত্রী শেখ হাসিনাও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। নেতাকর্মীদের মাঝে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলে তা কাটিয়ে ওঠা হচ্ছে। কোনো কারণে নেতাকর্মীরা, এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে থাকলে তা নিরসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। একেবারে তৃণমূলে গিয়ে কোথাও ভুল থাকলে তা শুধরে নেয়া হচ্ছে। সে অনুসারে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কাজ করছেন।
প্রার্থী বাছাই সম্পর্কে লিটন বলেন, একটি প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে এটা সম্পন্ন হবে। সে প্রক্রিয়ায় প্রতিটি জেলা তার এলাকা থেকে প্রার্থীদের তালিকা কেন্দ্রে পাঠাবে। কেন্দ্রই সিদ্ধান্ত নেবে। এটি ভ্রূণ অবস্থায় রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে আওয়ামী লীগের মতো একটি বৃহত্তর দলের একাধিক প্রার্থী থাকবেই। তারা মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবেন, নিজ বলয় তৈরির চেষ্টা করবেন। এটা নিয়ে মাঝেমধ্যে উত্তেজনাও সৃষ্টি হবে। তাদের সবাইকে নিয়ে বসে আলোচনার মধ্যদিয়ে দলকে শক্তিশালী করা হবে।
রাজশাহী বিভাগে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা তুলে ধরে সাবেক এই মেয়র বলেন, নির্বাচনের সময় এলে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে পড়ে। খুব কমই বলয়ের বাইরে থাকে। আমাদের প্রতিটি ওয়ার্ড পর্যায়ে সাংগঠনিক শক্তিশালী কমিটি আছে। এখন নির্বাচন বা ভোটকে ঘিরে সেন্টার কমিটি গঠনের কাজে হাত দেয়া হয়নি। এটা নির্বাচনের প্রাক্কালে বা আগেও করা যায়। এছাড়া ৫ই জানুয়ারির নাশকতা, জঙ্গিবাদী হামলা প্রতিহত করতে সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য সম্মানিত ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ কমিটি আছে। যারা নির্বাচনের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবেন।
আগামী নির্বাচনে বিএনপি এলে আওয়ামী লীগ কিভাবে মোকাবিলা করবে এই প্রশ্নের জবাবে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীতে বিএনপির হয়তো প্রচুর ভোটার আছে। কিন্তু সাংগঠনিক কাঠামো এতো দুর্বল যে তারা ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট নিয়ে আসতে ব্যর্থ হবেন। এদিক বিবেচনা করলে আওয়ামী লীগ জেলা ও মহানগর পর্যায়ে সাংগঠনিকভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী ও সক্রিয়।
সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে প্রশাসন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের মুখোমুখি অবস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের একটি মহল এই পরিবেশ সৃষ্টির পেছনে কাজ করছে। দেশের কোথাও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩য়/৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের সময়সীমা নেই। সেখানে বয়সসীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে ৩০ বছর। এটার কোনো প্রয়োজন ছিল না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের খেটে খাওয়া অভাবী মানুষগুলো এখান থেকে চাকরির সুযোগ খোঁজে।
তিনি বলতে থাকেন, এরমধ্যে আওয়ামী লীগের কিছু লোকও ছিল। এটা থেকে এমন পরিস্থিতির উদ্ভব। প্রকৃত অর্থে রাজশাহীতে বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই। কোনো শিল্প, কলকারখানা বা বৃহৎ কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। মানুষজন চাকরির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, রুয়েট এসব প্রতিষ্ঠানের দিকেই তাকিয়ে থাকে। নিয়োগের সময় এসব অঞ্চলের সাধারণ মানুষ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তাদের সন্তানদের চাকরির ব্যবস্থা করতে পারলে নির্বাচনে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। আর তা না পারলে স্বাভাবিকভাবে নেতিবাচক পড়ে। এমজমিন
১৪ জানুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসবি