প্রক্সি পরীক্ষা দিতে গিয়ে ঢাবির ৪ ছাত্রসহ আটক ৮
রাজশাহী : রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) সুপারভাইজার পদের নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে ভুয়া পরীক্ষার্থীসহ আটজনকে আটক করেছে র্যাব। এর মধ্যে ৪ জন জালিয়াত চক্রের সদস্য ও ৪ জন ভুয়া পরীক্ষার্থী। আটক ৪ ভুয়া পরীক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।
এ ঘটনায় আটক আরো ৪ মাইক্রোবাসচালককে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
রাজশাহী র্যাবের উপ-অধিনায়ক মেজর আব্দুস সালাম জানান, শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে অভিযান চালিয়ে র্যাব সদস্যরা জালিয়াত চক্রের ৪ জন এবং অন্যদের জন্য পরীক্ষায় অংশ নেয়া ৪ ভুয়া পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে।
তারা হলেন কুড়িগ্রামের উলিপুর থানার দুর্গাপুর গ্রামের গাজী রহমানের ছেলে মাইদুল ইসলাম (২৪), টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানার খামারপাড়া এলাকার গফুর মিয়ার ছেলে সাইম আহমেদ (২৫), চাঁদপুরের দালাদী গ্রামের জাফর তালুকদারের ছেলে ওসমান গনি (২৫) এবং ময়মনসিংহের ভালুকা থানার আংগারগাড়া গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে নুর আলম (২৪)।
এর মধ্যে মাইদুল ও সাইম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষা বিভাগ, ওসমান সমাজকল্যাণ বিভাগ এবং নুর আলম সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র।
আটক জালিয়াত চক্রের ৪ সদস্যের একজন হলেন ঢাকা কলেজের ছাত্র জাকির হোসেন (২৫), তিনি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানার পানিয়ালপুকুর এলাকার হাছিম উদ্দিনের ছেলে।
বাকি ৩ জন হলেন লালমনিরহাটের আদিতমারী থানার তালুক দুলালী গ্রামের এলাহী রাব্বানীর ছেলে জাকির হোসাইন (২৫), ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল এলাকার মঞ্জুর রহমানের ছেলে আল মামুন (২৭), দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানার রিয়াজনগর এলাকার মোফাখারুল ইসলামের ছেলে মোস্তফা কামাল (২৯)।
জাকির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আল মামুন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কামালের শিক্ষাগত যোগ্যতার পরিচয় জানা যায়নি।
রাজশাহী র্যাবের মিডিয়া অফিসার এএসপি তোফায়েল গণমাধ্যমকে জানান, জনতা ব্যাংকের ফার্মগেট করপোরেট শাখায় কর্মরত সোহেল রানা নামে এক ব্যক্তি জালিয়াত চক্রের মূলহোতা। তার বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ে। এ মামলায় তাকেও আসামি করা হবে বলে জানান তিনি।
শুক্রবার বিকেলে র্যাবের উপ-অধিনায়ক মেজর আব্দুস সালাম জানান, জালিয়াত চক্রের সদস্যরা চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ভুয়া পরীক্ষার্থীদের দিয়ে প্রক্সি পরীক্ষা দিয়ে আসছিল। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার জন্য চক্রটি প্রতি প্রার্থীর কাছ থেকে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা করে নিয়েছে।
চাকরি না হলে ৫০ হাজার টাকা অফেরতযোগ্য চুক্তিতে ছিল। প্রক্সি পরীক্ষা দেওয়ার বিনিময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুই লাখ টাকা করে দেয়া হতো। রাকাবের সুপারভাইজার পদের এ পরীক্ষার জন্য চক্রটি ৮০ জনের সঙ্গে চুক্তি করেছিল।
তিনি জানান, সোহেল-জাকির সিন্ডিকেট প্রার্থীর প্রবেশপত্র পাওয়ার পর ফটোশপের মাধ্যমে ক্রসম্যাচ করে একটি নতুন ছবি তৈরি করে প্রবেশপত্রের সাথে যুক্ত করে ভুয়া পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রবেশপত্র তৈরি করে।
র্যাবের অভিযানে চক্রের ব্যবহৃত তিনটি মাইক্রোবাস, ১১টি মোবাইল সেট, ১২ টি ভুয়া প্রবেশপত্র এবং নগদ ১ লাখ ১১ হাজার ৬৬০ টাকা উদ্ধার করা হয়। জাকিরের ব্যবহৃত স্মার্ট ফোনে ৮০ জন ভুয়া পরীক্ষার্থীর বিবরণ পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
২৩ অক্টোবর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম
�