শনিবার, ০৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:০২:৪২

ডুঙ্গা নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা

 ডুঙ্গা নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা

আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী): রাজশাহীর বাঘায় বন্যায় পদ্মার মাঝে ডুবে যাওয়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন পল্লী চিকিৎসক মতলেব হোসেন। তিনি উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর চৌমাদিয়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

বৃহস্পতিবার টিনের তৈরি করা ডুঙ্গা নিয়ে তিনি অসুস্থ ব্যক্তিদের চিকিৎসা দিচ্ছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। জানা যায়, বাঘা উপজেলার পদ্মার মধ্যে পরিবার রয়েছে ৩ হাজার ৭৬২টি। গরু-ছাগল রয়েছে সাড়ে ৭ হাজার। জনসংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। এরমধ্যে অধিকাংশ বাড়িতে পানি উঠেছে। এর মধ্যে কেউ কেউ উঁচু মাচা করে নিজ বাড়িতে বসবাস করছে। আবার অনেকে অন্যত্রে আশ্রয় নিয়েছেন।

স্থানীয় চৌমাদিয়া বাজারে মতলেব হোসেনের একটি চেম্বার রয়েছে। এ বাজারটিও বন্যায় তলিয়ে গেছে। তবে তার চেম্বারটা কিছুটা উঁচু হওয়ায় ভেতরে পানি গেলেও চৌকির ওপর বসে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এর মধ্যে তার চেম্বারে না আসতে পারলে তাকে মোবাইল ফোনে জানালে সঙ্গে সঙ্গে তার ডুঙ্গা নিয়ে ওই অসুস্থ ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন।

পল্লী চিকিৎসক মতলেব বলেন, ‘ওষুধের দাম ছাড়া অতিরিক্ত ভিজিট নেই না’। তার সঙ্গে একটি ব্যাগ থাকে এ ব্যাগের মধ্যে প্রাথমিক প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়ার যাবতীয় সরাঞ্জম রয়েছে। এ বন্যায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১১টি আশ্রয় কেন্দ্রও স্থান করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১১ স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এবারের বন্যা সেই ১৯৮৬ সালের বন্যার চেয়েও ভ'য়াভহ অবস্থা বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর চৌমাদিয়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পল্লী চিকিৎসক মোহাম্মদ মতলেব আলী জানান, পল্লী চিকিৎসক দীর্ঘদিন থেকে চৌমাদিয়া বাজারে মানুষের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। তিনি রোগী দেখে ভিজিট নেন না। তিনি শুধু ওষুধের দাম নেন।

চৌমাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহেল রানা যুগান্তরকে বলেন, আমার স্কুলের পাশে চৌমাদিয়া বাজার। এ বাজারে একটি চেম্বার দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন মতলেব।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবদুর রহমান বলেন, এ বন্যার মধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন পল্লী চিকিৎসক মতলেব হোসেন।
আতারপাড়া চরের ৭৫ বছর বয়সের আকছেদ ব্যাপারি যুগান্তরকে বলেন, ‘মতলেব ডাক্তারের রাত দিন নেই। মানুষ তখন ডাকে সঙ্গে সঙ্গে তার বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করে। তার প্রতি কারো কোনো অভিযোগ নেই। আমরা তার পরামর্শে ওষুধ খাই।’

এ বিষয়ে পল্লী চিকিৎসক মতলেব হোসেন বলেন, আমি শুধু টাকার জন্য চিকিৎসা দিই না। আমার দ্বারা মানুষ উপকার পায়। আমাকে যখন অসুস্থ মানুষ ডাকে সঙ্গে সঙ্গে তার বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করি। তবে আমার ৬ সদস্যের পরিবার। আমি এ কাজ করে সংসার পরিচালনা করি। তবে কারো কাছে কোন দিন অতিরিক্ত টাকা নিই না।

চকরাজাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আজিজুল আযম যুগান্তরকে বলেন, মতলেবকে আমি চিনি সে দীর্ঘদিন থেকে এলাকার মানুষকে চিকিৎসা দিচ্ছে। বন্যা হয়েছে। চরের মানুষ অসুস্থ হলে প্রাথমিক পর্যায়ে তার কাছে চিকিৎসা নেয়। জটিল হলে অন্যত্রে যায়। তবে প্রাথমিক চিকিৎসা সে ভালো করে।-যুগান্তর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে