বাঘা (রাজশাহী) : পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া রাজশাহীর বাঘার সেই ভ্যানচালকের মেধাবী ছেলে ও কোরআনে হাফেজ নূরনবী চাঁদ মানিককে মাত্র ৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দিলেন বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা।
বৃহস্পতিবার বিকালে এই অনুদান প্রদান করেন তিনি। জানা গেছে, বাঘা উপজেলার উত্তর গাঁওপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র ভ্যানচালক আসমত আলীর ছেলে নূরনবী চাঁদ মানিক। সংসারের অসচ্ছলতার জন্য মাঝে মধ্যে বাবার সঙ্গে ভ্যান চালালেও মনোবল না হারিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন।
নূরনবী চাঁদ মানিক ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সি-ইউনিটে, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ে ডি-ইউনিটে, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ডি-ইউনিটে, পাবনার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ-ইউনিটে এবং ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পান।
কিন্তু ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েও কার লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এ নিয়ে খবর প্রকাশ হয়। তারপর বিষয়টি রাজশাহী জেলা প্রশাসকের নজরে আসে। পরে তার নির্দেশে ১২ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ৫ হাজার টাকার অনুদান প্রদান করেন।
জানা গেছে, ইতিমধ্যে ধার করে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন মানিক। ভর্তি হতে তার ৬ হাজার ৪৪৩ টাকা লেগেছে। তবে ভর্তির পর ছেলের লেখাপড়ার খরচ কীভাবে চালাবেন তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন বাবা আসমত আলী।
তিনি বলেন, এতদিন ভ্যান চালিয়ে খেয়ে না খেয়ে কিস্তিতে ঋণ নিয়ে ছেলেকে স্কুল-কলেজে পড়িয়েছি। ১১ ডিসেম্বর ধারদেনা করে ছেলেকে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছি। কিন্তু এখন কী করে শহরে পড়াব। ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই। আসমত আলী বলেন, আমার ১ ছেলে ও ৩ মেয়ে। এর মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ৫ সদস্যের পরিবার। তাদের নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি। এ অবস্থায় ছেলেকে লেখাপড়া করানো আমার পক্ষে সম্ভব হবে কি না জানি না।
এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, দরিদ্র মেধাবী ছাত্র নূরনবী চাঁদ মানিককে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে।