বুধবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৬, ১১:২৩:০৫

মৃতকে জীবিত করা নিয়ে কবিরাজের কেরামতি!

মৃতকে জীবিত করা নিয়ে কবিরাজের কেরামতি!

রাজশাহী : মৃতকে জীবিত করা নিয়ে কবিরাজের এ কি কেরামতি! শত কেরামতিও কাজে আসেনি কবিরাজদের।  অবশেষে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পান তারা।  

সাপের কামড়ে নিহত রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বেলঘরিয়া এলাকার মকবুল শেখের ছেলে শাহীনের (৩২) দাফনের প্রস্তুতি চলছিল।  এরই মধ্যে দুই কবিরাজ এসে হাজির।

জানা গেছে, রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বেলঘরিয়া এলাকার মকবুল শেখের ছেলে শাহীন (৩২) সাপের কামড়ে মারা যান।  পরে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।  তাতেও কাজ হয়নি।  বুধবার বেলা ৩টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।  

মরদেহের গোসল করিয়ে নামাজে জানাজাও সম্পন্ন হয়।  এরপরে নিয়ে যাওয়া হয় কবরস্থানের দিকে।  লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছিল।  এরই মধ্যে সেখানে হাজির হন পাশের ধরমপুর ও রাতু গ্রামের ছবির উদ্দিনসহ দুই কবিরাজ।

সবার সামনে তারা বলেন যে, শাহীন বেঁচে আছে।  তাকে কবর দেয়ার প্রয়োজন নেই।  কবিরাজের কথায় বিশ্বাস করে বন্ধ করে দেয়া হয় মরদেহের দাফন।  এরপরই শুরু হয় কবিরাজের ঝাড়ফুঁক।  

শাহীনের বাড়িতে শুরু হয় বিরাট আয়োজন।  আঙ্গিনায় বিরাট সাদা সামিয়ানাও টাঙানো হয়।  কবিরাজ বাড়ির সবাইকে বাইরে বের করে দেয়। টানা তিন ঘণ্টা চলে কবিরাজের ঝাড়ফুঁক।  কিন্তু তাতে কোনো ফল নেই।  

শাহীন জীবিত আছে এমন খবরে আশপাশের লোকজনও ছুটে আসে।  ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ভিড়।  কবিরাজের কেরামতি কাজে আসেনি।
তিন ঘণ্টা পর মানুষ রীতিমতো ধৈর্যহারা হয়ে পড়ে।

শুরু হয় নানান কথা।  অবেশেষে কবিরাজ শাহীনের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে পার পায় কবিরাজ।  এরপর এলাকাবাসীর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে কবিরাজরা শাহীনের বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।  পরে রাত সাড়ে ৮টায় শাহীনের দাফন সম্পন্ন হয়।  

উল্লেখ্য, বুধবার সকালে বাড়ির পাশে পেঁয়াজের ক্ষেতে কাজ করতে গেলে বিষধর সাপ শাহীনকে কামড় দেয়।  পরে তাকে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়।  সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।  হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাজপাড়া থানা পুলিশ জানায়, শাহীনের মৃত্যুর পর সুরতাল শেষে মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
২৭ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে