বুধবার, ০৮ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:১৮:৫২

আ. লীগ নেতার ছেলের কাণ্ড! ঘটনার পর ক্ষুব্ধ জনতার ভাঙচুর, সেনাবাহিনীর সহায়তায় আটক

আ. লীগ নেতার ছেলের কাণ্ড! ঘটনার পর ক্ষুব্ধ জনতার ভাঙচুর, সেনাবাহিনীর সহায়তায় আটক

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : রাজশাহী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী সরকারের ছেলে আহসান উদ্দিন সরকার জিকোর (৪৫) মালিকানাধীন হিমাগারে এক তরুণ, নারী ও কিশোরীকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকালে রাজশাহীর পবা উপজেলার বায়া এলাকার সরকার কোল্ড স্টোরেজের অফিসকক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

 ঘটনার পর ক্ষুব্ধ জনতা হিমাগারের অফিসকক্ষে ভাঙচুর চালিয়ে আহসান উদ্দিন সরকার জিকো, তার বোন আখি (৩৫) ও হাবিবাকে (৪০) অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় এয়ারপোর্ট থানা-পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এর আগে পুলিশ আহত তিনজনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠায়।
 
ভুক্তভোগীদের বাড়ি পবা উপজেলার কুঠিপাড়া গ্রামে। নির্যাতনের শিকার তরুণ (২৭) রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার সঙ্গে থাকা নারী (৩০) ও কিশোরী (১৩) তার খালাতো বোন।
 
পুলিশ জানায়, নির্যাতনের ঘটনায় ওই তরুণের ভাই বাদী হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আহসান উদ্দিন সরকার জিকো ও তার প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন কর্মচারী তিনজনকে অফিসকক্ষে ডেকে নিয়ে লাঠি, বাঁশ ও হাতুড়ি দিয়ে পেটায়। একপর্যায়ে তাদের শরীরে সেফটি পিন ফুটিয়ে নির্যাতন করা হয়।
 
দুপুরে ঘটনাস্থলে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নির্যাতনের শিকার ওই নারীর কোলে একটি শিশুসন্তান ছিল। তিনি খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন এবং তার কান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। আহত মেডিকেল শিক্ষার্থীর দুই হাতে জখম ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। কিশোরীর ঠোঁটে রক্তের দাগও ছিল।
 
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারের সঙ্গে তাদের পরিবারের সুসম্পর্ক ছিল। এই বিষয়টি তার ছেলে-মেয়েরা ভালোভাবে নেননি। তাদের সন্দেহ, মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। 

মঙ্গলবার সকালে তাকে ফোন করে হিমাগারে ডাকা হয়। তিনি তখন তার খালাতো ভাই ও ছোট বোনকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। অফিসে ঢোকার পর মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও মেয়েরা ধাক্কা দিতে দিতে তাদের ভেতরে নিয়ে যান এবং কর্মচারীদের সহায়তায় নির্যাতন চালান। নির্যাতনের সময় দরজা বন্ধ করে রাখা হয় এবং তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়।
 
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে বেলা ১১টা থেকে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা হিমাগারের ভেতর আহসান উদ্দিন সরকার জিকো, আখি ও হাবিবাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। তারা তিনজনকে গ্রেফতারের দাবি জানান। তবে হামলার আশঙ্কায় পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বের করতে পারেনি। পরে দুপুর ২টার দিকে বিক্ষুব্ধ জনতা অফিসকক্ষের সিসি ক্যামেরা ও কাঁচের জানালাগুলো ভাঙচুর করে। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।
 
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, ‘তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে