রাজশাহী : নগরীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আজ উদ্ধার করা হয় তরুণ-তরুণীর লাশ। এ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। তারা আত্মহত্যা করেছেন নাকি তাদের হত্যা করা হয়েছে এ নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়েছে পুলিশ।
এর মধ্যে নতুন করে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে নিহত মিজানুরের ফেসবুক স্ট্যাটাসে। মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে নিজের ফেসবুকে দুনিয়া ছেড়ে চলে যাওয়ার বিষয়টি জানান তিনি। এ সময় সবার কাছে ক্ষমাও চেয়ে নন মিজান।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ইতিহাসের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান। তার ওই স্ট্যাটাসে ঘটনাটি ভিন্নদিকে মোড় নিয়েছে। এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা নিয়ে পুলিশের মধ্যেও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে হত্যাকারীরা পরিকল্পিতভাবে এসব সাজিয়েছে বলে ধারণা পুলিশের।
এর আগে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহীর সাহেব বাজারের নাইস ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের একই কক্ষ থেকে মিজানুর রহমান (২৩) এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সুমাইয়া ইয়াসমিনের (২০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
লাশ উদ্ধার হওয়ার প্রায় ১০ ঘণ্টা আগে নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন মিজানুর।
তার স্ট্যাটাসে লেখা ছিল, ‘আমার থাকার ম্যাচে কিছু খাবার টাকা পাইতে পারে, উনু খাঁ শিশিরদের দোকানে ২৫ টাকা পাবে, কালিকাপুরের আরিফ বন্ধু ১শ’ টাকা পাবে সিম না বলে নিছিলাম তার জন্য। টাকাগুলো যেন বাসা থেকে প্রদান করে। এছাড়া আমার পাওনা নেই। সবাই আমাকে মাফ করবেন, আমি পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি।’
মিজানুরের স্ট্যাটাসের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন জানান, মিজানুর মৃত্যুর আগে ফেসবুকে যে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তা নিয়ে কাজ করছে পুলিশ।
তিনি জানান, ঘটনা অনেক কিছুই হতে পারে। এমনো হতে পারে ঘটনাটি কেউ ভিন্নখাতে প্রবাহিত কর চেষ্টা করছে। তার ফেসবুক ব্যবহার করে অন্য কেউ হয়তো এ কাজ করতে পারে।
মিজানুর রহমান সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানার দবিরগঞ্জের পাঠানপাড়া এলাকার অসেদ আলীর ছেলে। নিহত সুমাইয়ার পরিবার বগুড়ার উপশহর এলাকায় থাকে।
তার বাবা আব্দুল করিম গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক। সুমাইয়া পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্রী ছিলেন।
লাশ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে উদ্ধার করা নিহতদের বয়স ২৩-২৪ বছর হবে বলে পুলিশের ধারণা।
পুলিশ বলছে, ছেলেটির লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। লাশের হাত বাঁধা ছিল। তরুণীর লাশ বিছানার ওপর শোয়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়।
লাশের শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মুখের ওপর বালিশ চাপা দেয়া ছিল।
২২ এপ্রিল,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম