শনিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৬, ০৬:২৬:৩৫

‌‘আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দাও’

 ‌‘আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দাও’

রাজশাহী প্রতিনিধি : আমার স্বামীকে তোমরা তুলে নিয়েছো, আমার স্বামীকে তোমরা ফিরিয়ে দাও।  আমি কিচ্ছু বলব না ওদের, আমি শুধু বলব আমার স্বামীকে দিয়ে যাও।

এভাবেই আর্তনাদ-আকুতি করছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীর স্ত্রী হোসনে আরা শিরা।

অধ্যাপক রেজাউল করিম প্রতিদিন বাসা থেকে বের হয়ে শালবাগান মোড়ে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে উঠতেন।  অন্যান্য দিনের মতো আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নাস্তা করে বিশ্ববিদালয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন তিনি।

বাসা থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে শালবাগান মোড়ের গলির মধ্যে দুর্বৃত্তরা তাকে পেছন থেকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।  যে বাসার সামনে তাকে হত্যা করা হয়, তারা পুলিশকে খবর দেয়।  

এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।  পুলিশের দাবি, ব্লগার হত্যার সঙ্গে এ হত্যাকাণ্ডের মিল রয়েছে।

নিহত রেজাউল করিম সিদ্দিকীর স্ত্রী হোসনে আরা শিরা বলেন, যদি বাসে উঠে যেত তাহলে বেঁচে যেত ও।  বাসে উঠার আগেই শেষ হয়ে গেল।  আমাকে খবর দেয়া হলে আমি চিৎকার করতে করতে যাই।

বলেছি তোমরা কে আছ, বের হও।  তাকে মেডিকেলে নিয়ে যেতে হবে।  ওরা বলেছে, মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার দরকার নেই।  তিনি মারা গেছেন  

বিশ্বাস হচ্ছিল না হোসনে আরা শিরার।  কেঁদে কেঁদে বলতে থাকেন, ওরা এত বড় দায়িত্ব আমাকে দিল।  ছেলেমেয়ে কেউ মানুষ হলো না।  একটাকেও বিয়ে দিতে পারলাম না।  তাদের লেখাপড়া শেষ হলো না।

নিহত অধ্যাপক রেজাউল করিমের দুই সন্তান।  ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষবর্ষের ছাত্র।  আর মেয়ে রেজোয়ানা হাসিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী।

পরিবারের ভাষ্য, অধ্যাপক রেজাউল করিম কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।  তার সাথে কারো কোনো শত্রুতাও ছিল না।

 রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।  অধ্যাপক রেজাউলের বাড়ি থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় বোয়ালিয়া থানার শালবাগান এলাকার বটতলা মোড়ে তাকে হত্যা করা হয়।  কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।

দুই বছর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে খুন হন আরেক অধ্যাপক একেএম শফিউল ইসলাম।  সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শফিউলকে হত্যার পর জঙ্গিদের দায় স্বীকারের খবর এলেও পরে পুলিশের তদন্তে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পায়নি।
৩ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে