রাজশাহী : দুটি সিমেন্টবাহী ট্রাক নিয়ে বেইলি ব্রিজ ভেঙে পড়ল খালে। এতে একটি ট্রাকের চালক ও হেলপার গুরুতর আহত হয়েছেন। বুধবার ভোর ৫টার দিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার হরিশংকপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, গোদাগাড়ীর বিজয়নগর-মাটিকাটা বাইপাস সংযোগ সড়কের হরিশংকপুর এলাকায় অবস্থিত লোহার ব্রিজটি বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই ক্ষতিগ্রস্থ অবস্থায় ছিল। তাই সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষ থেকে সেতুর দুই পাশে ‘পাঁচ টনের অধিক যান চলাচল নিষেধ’ লেখা সম্বলিত দুটি সাইনবোর্ড লাগানো ছিল।
তারা আরো জানান, দেখভালের কোনো লোক না থাকায় হরহামেশাই ব্রিজটির ওপর দিয়ে পাঁচটনের বেশি ওজনের যানবাহন চলাচল করতো। বুধবার ভোরে হঠাৎ দুটি ট্রাক নিয়ে ব্রিজটি বিকট শব্দে ভেঙে পড়ে। পরে প্রায় আধা ঘন্টা চেষ্টার পর স্থানীয়রা একটি ট্রাকের ভেতর থেকে আহত চালক-হেলপারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।
রাজশাহী সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইউনুস আলী জানান, ভোর ৫টার দিকে ক্ষতিগ্রস্থ ওই ব্রিজের ওপর এক সঙ্গে সিমেন্ট ভর্তি তিনটি ট্রাক ওঠে। এরপর একটি ট্রাক পার হওয়া মাত্রই অপর দুটি ট্রাককে নিয়ে ব্রিজটি বিকট শব্দে ভেঙে পড়ে।
তিনি আরো জানান, এতে একটি ট্রাক পুরোপুরি উল্টে নিচে পড়ে যায়। আরেকটি ট্রাক ব্রিজের সঙ্গে ঝুলে থাকে। এরপর থেকেই ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ওই সড়কের গাড়িগুলো বিকল্প পথ হিসেবে বিজয়নগর-মাটিকাটা বাইপাস সংযোগ সড়কে চলাচল শুরু করেছে।
প্রকৌশলী ইউনুস আলী জানান, খবর পেয়ে সকালেই তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। ট্রাক দুটিকে উদ্ধারের তৎপরতাও চলছে। সিরাজগঞ্জ থেকে একটি বেইলি সেতু এনে সেখানে বসানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। খুব শিগগির যান চলাচল শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
সওজের রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হাসান জানান, ক্ষতিগ্রস্থ ওই ব্রিজটি ভেঙে সেখানে নতুন ব্রিজ বানানোর জন্য কয়েকদিন আগেই জাইকার একটি প্রতিনিধিদল সরেজমিনে জরিপ করেছেন। চলতি বছরের মধ্যেই সেখানে নতুন করে স্থায়ী ব্রিজ বানানোর কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
২০০০ সালের আগ পর্যন্ত রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল এই সড়ক। ১৯৮০ সালের দিকে এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। এর দৈর্ঘ্য ৪৫ মিটার এবং প্রস্থ ১২ ফুট। গত কয়েক বছর আগে থেকেই ব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ভারি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল।
২০১৩ সালের দিকে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ব্রিজটি পরিদর্শন করে দ্রুত সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সংস্কার না হয়ে ৬০ টনের দুটি ট্রাক নিয়ে ভেঙে পড়লো ৫ টন ধারণ ক্ষমতার এই ব্রিজ।
০১ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম